মঙ্গলকাব্যের বিদ্রোহী নারী চরিত্র কোনটি?
A
সনকা
B
ফুল্লরা
C
বেহুলা
D
মনসা
উত্তরের বিবরণ
'মনসামঙ্গল' কাব্য সাপের দেবী মনসাকে কেন্দ্র করে রচিত। মনসার অপর নাম কেতকা বা পদ্মা, তাই এই কাব্যকে কেতকামঙ্গল বা পদ্মাপুরাণ নামেও ডাকা হয়। মনসামঙ্গল কাব্য মঙ্গলকাব্যের প্রাচীনতম ধারা হিসেবে পরিচিত এবং এতে মানুষের সংগ্রামের কাহিনি ফুটে উঠেছে।
-
কাব্যের আদি কবি ছিলেন কানা হরিদত্ত। এছাড়াও বিজয় গুপ্ত, নারায়ণ দেব, বিপ্রদাস পিপিলাই, দ্বিজ বংশীদাস, কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ প্রমুখ মনসামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা ছিলেন।
মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান চরিত্রগুলো:
-
সাপের দেবী মনসা
-
চাঁদ সওদাগর
-
সনকা
-
বেহুলা
-
লখিন্দর
চরিত্র বিশ্লেষণ:
-
চাঁদ সওদাগরের চরিত্রটি নিগৃহীত মানবতার জীবনের বাণীকে প্রকাশ করে। ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহী মনোভাব কাব্যের মূল বৈশিষ্ট্য। সে যুগের মানবিক পীড়ন, বঞ্চনা ও বিক্ষোভ চাঁদ সওদাগরের বিদ্রোহী স্বভাবের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।
-
বেহুলার চরিত্রে বাঙালি নারীত্বের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। তার ত্যাগ, তিতিক্ষা, আত্মবিশ্বাস ও অমিত বীর্য তাকে শক্তিশালী প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বেহুলার নারীশক্তি চাঁদ সওদাগরের পৌরুষের সমগোত্রীয় বিদ্রোহী হিসেবে কার্যকর এবং তার উপস্থিতি মানবী শক্তির সার্থক রূপ হিসেবে চিত্রিত।

0
Updated: 11 hours ago
কোন মঙ্গলকাব্যে চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যিক অভিযান ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনধারা বর্ণিত হয়েছে?
Created: 4 days ago
A
ধর্মমঙ্গল
B
চণ্ডীমঙ্গল
C
কালিকামঙ্গল
D
মনসামঙ্গল
• সঠিক উত্তর: ঘ) মনসামঙ্গল
মঙ্গলকাব্য ও মনসামঙ্গল সম্পর্কিত আলোচনা:
-
মঙ্গলকাব্য বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা, যা মধ্যযুগে (প্রায় ১৩শ থেকে ১৮শ শতাব্দী) রচিত হয়।
-
এই কাব্যগুলো সাধারণত দেব-দেবীর গুণকীর্তন ও পূজার প্রচারের উদ্দেশ্যে রচিত হলেও এতে সমকালীন সমাজ, সংস্কৃতি, ও জীবনযাত্রার প্রতিফলন দেখা যায়।
মনসামঙ্গল কাব্য:
-
দেবী মনসার পূজা ও গুণকীর্তন নিয়ে রচিত।
-
কাব্যের প্রধান চরিত্র: চাঁদ সওদাগর, একজন ধনী বণিক, যিনি বাণিজ্যিক অভিযানের জন্য বিখ্যাত।
-
কাহিনী: চাঁদ সওদাগরের সমুদ্রযাত্রা, বাণিজ্য, মনসা দেবীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব, এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন ও ধর্মীয় বিরোধ।
-
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র: সাপের দেবী মনসা, বেহুলা, লখিন্দর, সনকা।
মনসামঙ্গল কাব্যের বিশেষত্ব:
-
চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যিক অভিযান: সমুদ্রযাত্রার বিপদ, সম্পদ, ও প্রভাবের বর্ণনা।
-
সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ: উচ্চবর্গ (বণিক), নিম্নস্তর (মাঝি, কৃষক), পারিবারিক জীবন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব।
অন্য অপশন সংক্ষেপে:
-
ধর্মমঙ্গল: ধর্মঠাকুরের ভক্তি ও আধ্যাত্মিক বিষয়বস্তু; চাঁদ সওদাগর নেই।
-
চণ্ডীমঙ্গল: দেবী চণ্ডীর পূজা ও গুণকীর্তন; কালকেতু ও ফুল্লরার গল্প প্রধান।
-
কালিকামঙ্গল: দেবী কালির মাহাত্ম্য বর্ণনা; চাঁদ সওদাগর চরিত্র নয়।

0
Updated: 4 days ago
কোন মঙ্গলকাব্যে ঐতিহাসিক চরিত্র আছে?
Created: 5 days ago
A
মনসামঙ্গল
B
চণ্ডীমঙ্গল
C
অন্নদামঙ্গল
D
ধর্মমঙ্গল
সঠিক উত্তর হলো গ) অন্নদামঙ্গল। এই কাব্যে ঐতিহাসিক চরিত্র যেমন মানসিংহ এবং ভবানন্দকে প্রধান চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা উভয়েই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যুক্ত, যদিও কাব্যে কিছুটা কল্পনার সংযোজন রয়েছে।
-
মানসিংহ: তিনি ছিলেন মুঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি এবং বাংলায় বহু অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। কাব্যের মানসিংহ-ভবানন্দ খণ্ডে তাঁর কাহিনি ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে মিশে বর্ণিত হয়েছে।
-
ভবানন্দ: ভবানন্দ মজুমদার বর্ধমানের ঐতিহাসিক জমিদার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত একটি চরিত্র। যদিও কাব্যে তাঁর চরিত্র আংশিকভাবে কল্পিত, তবুও ঐতিহাসিক ভিত্তি বিদ্যমান।
-
কাব্যের দ্বিতীয় খণ্ডে মানসিংহের বাংলায় আগমন, প্রতাপাদিত্য দমন এবং বীরসিংহ সম্পর্কিত ঘটনাবলি বর্ণিত হয়েছে, যা বাস্তব ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই কারণে, কাব্যে ঐতিহাসিক চরিত্রের উপস্থিতি স্পষ্ট।
অন্নদামঙ্গল কাব্য সম্পর্কিত তথ্য
-
নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর এই কাব্য রচনা করেন।
-
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো অন্নদামঙ্গল (১৭৫২-৫৩ সালে রচিত)।
-
এই কাব্যের বৈশিষ্ট্য হলো ছন্দ ও অলঙ্কারের দক্ষ প্রয়োগ।
-
অধ্যাপক অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন: “অন্নদামঙ্গলকাব্য অষ্টদশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য, সমগ্র বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের অন্যতম।”
-
কাব্যটি ৩টি খণ্ডে বিভক্ত: শিবনারায়ণ, কালিকামঙ্গল এবং মানসিংহ-ভবানন্দ খণ্ড।
প্রধান চরিত্রসমূহ
-
মানসিংহ
-
ভবানন্দ
-
বিদ্যাসুন্দর
-
মালিনী
-
ঈশ্বরী পাটনী প্রমুখ
বিখ্যাত পঙ্ক্তি
-
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।
-
মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।
-
হাভাতে যদ্যপি চায় সাগর শুকায়ে যায়।
-
নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়?
-
না রবে প্রাসাদগুণ না হবে রসাল, অতএব কহি ভাষা যাবনী মিশাল।
-
বড়র পিরীতি বালির বাঁধ! ক্ষণে হাতে দড়ি, ক্ষনেকে চাঁদ।
অন্যান্য অপশনের বিশ্লেষণ
-
মনসামঙ্গল: দেবী মনসার পূজা ও চাঁদ সদাগরের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এটি পৌরাণিক ও কাল্পনিক; ঐতিহাসিক চরিত্র নেই।
-
চণ্ডীমঙ্গল: দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য এবং কালকেতু-ফুল্লরার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এটি পৌরাণিক ও লোককথা নির্ভর; ঐতিহাসিক চরিত্র নেই।
-
ধর্মমঙ্গল: ধর্মঠাকুরের নামে রচিত। এটি দুটি পালায় বিভক্ত—রাজা হরিশ্চন্দ্রের গল্প এবং লাউসেনের গল্প।

0
Updated: 5 days ago
মঙ্গলকাব্যের কবি হচ্ছেন -
Created: 1 week ago
A
ঘনরাম চক্রবর্তী
B
দ্বিজমাধম
C
কানাহারি দত্ত
D
সবগুলোই
মঙ্গলকাব্য হলো দেবমাহাত্ম্যমূলক ও সমাজচিত্রভিত্তিক কাব্য, যা বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হয়, পনেরো থেকে আঠারো শতকের শেষ অবধি এই ধারার কাব্য বাংলায় রচিত হয়। এই কাব্য রচনার মূল কারণ, প্রায় সব কবিই স্বপ্নে দেবতাদের নির্দেশ পেয়ে রচনা করেছেন।
মঙ্গলকাব্যের প্রধান শাখা তিনটি: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল ও ধর্মমঙ্গল। এর প্রধান দেবতারা হলেন মনসা, চণ্ডী ও ধর্মঠাকুর, যেখানে মনসা ও চণ্ডী দেবীর প্রাধান্য বেশি। একটি সার্থক মঙ্গলকাব্য সাধারণত পাঁচটি অংশে বিন্যস্ত থাকে: বন্দনা, আত্মপরিচয়, দেবখণ্ড, মর্ত্যখণ্ড ও শ্রুতিফল।
মঙ্গলকাব্যে ৬২ জন কবি পরিচিত, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: কানাহারি দত্ত, মানিক দত্ত, ভারতচন্দ্র, দ্বিজমাধম ও ঘনরাম চক্রবর্তী। দেবী মনসা ও চণ্ডী সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং এঁরা মূলত অনার্যদের দেব-দেবী।

0
Updated: 1 week ago