'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় কত বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়?
A
১৩০৯ বঙ্গাব্দে
B
১৩২৩ বঙ্গাব্দে
C
১৩১৬ বঙ্গাব্দে
D
১৩২২ বঙ্গাব্দে
উত্তরের বিবরণ
'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য বাংলা মধ্যযুগের একটি প্রধান কাব্যগ্রন্থ, যা বড়ু চণ্ডীদাস রচিত এবং রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের মাধ্যমে ঈশ্বরতত্ত্ব প্রকাশ করে।
-
বড়ু চণ্ডীদাস আনুমানিক ১৩০৯ খ্রিষ্টাব্দে ছাতনা, বাঁকুড়া মতান্তরে বীরভূমের নানুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' রাধা-কৃষ্ণের প্রণয় বর্ণনার মাধ্যমে ঈশ্বরতত্ত্বকে কাব্যিকভাবে উপস্থাপন করে। এটি বাংলা ভাষার প্রথম মধ্যযুগীয় কাব্যগ্রন্থ হিসেবে পরিচিত।
-
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) বসন্তরঞ্জন রায়, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় কাকিল্যা গ্রামে মল্লরাজগুরু বৈষ্ণবমহন্ত শ্রীনিবাসের দৌহিত্র শ্রী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘর থেকে এই পুথি আবিষ্কার করেন।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকে শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামেও অভিহিত করা হয়।
-
গ্রন্থের প্রধান তিনটি চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি/বড়াই।
-
কাব্যটি মোট ১৩টি খণ্ডে বিভক্ত এবং ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে (১৩২৩ বঙ্গাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
-
অন্যদিকে, বৈষ্ণব পদাবলির সমর্থা নায়িকা হিসেবে পরিচিত চরিত্রগুলো হলো: শ্রীরাধা, ললিতা, বিশাখা, চন্দ্রাবলি, যার মধ্যে শ্রীরাধা সর্বশ্রেষ্ঠ।
-
অন্নদামঙ্গল কাব্যের একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো ঈশ্বরী পাটনী।
0
Updated: 1 month ago
গঠনরীতিতে 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য মূলত-
Created: 2 months ago
A
পদাবলি
B
ধামালি
C
গ্রেমগীতি
D
নাট্যগীতি
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন: গঠন ও বৈশিষ্ট্য
গঠন ও রূপ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মূলত মধ্যযুগীয় বাংলার একটি যাত্রাপালা রূপের কাব্য। এটি নাট্যগীতিকাব্যের স্বরূপে রচিত, অর্থাৎ গীত ও সংলাপের সমন্বয়ে নাট্যরসসমৃদ্ধ। কাব্যে গল্প বলার পাশাপাশি সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোর অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। কবি কখনও নিজেই কাহিনির মধ্যে প্রবেশ করে বর্ণনা যোগ করেছেন, আবার কখনও সংস্কৃত শ্লোক ব্যবহার করে গল্পের সংযোগ স্থাপন করেছেন। এতে নাটকীয়তা বজায় রেখেই কাব্যিক সৌন্দর্য পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও আবিষ্কার
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম কাব্য হিসেবে পরিচিত।
-
১৯০৯ সালে বসন্তরঞ্জন রায় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে এর পুথি আবিষ্কার করেন।
-
প্রথম পৃষ্ঠায় কোনো নাম না থাকায় বসন্তরঞ্জন রায় পুথিটিকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামে ডাকেন। কখনও এটিকে শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামেও উল্লেখ করা হয়।
-
১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুথিটিকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশ করে।
-
পুথির প্রথম দুটি এবং শেষ পৃষ্ঠা না পাওয়ায় কাব্যের সম্পূর্ণ নাম ও কবির পরিচয় নিশ্চিত নয়। তবে কবির ভণিতায় ‘চণ্ডীদাস’ এবং প্রায় সকল স্থানে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ পাওয়া যায়, তাই কবি হিসেবে বড়ু চণ্ডীদাসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিষয়বস্তু ও কাঠামো
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন গীতি-আলেখ্য রূপের কাব্য।
-
প্রধান বিষয়: রাধা-শ্রীকৃষ্ণের প্রণয়লীলা।
-
বিন্যস্ত: মোট ১৩ খণ্ডে ৪১৮টি পদ।
-
মূল চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের আবিষ্কারক কে?
Created: 1 month ago
A
বড়ু চণ্ডীদাস
B
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
C
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
D
বসন্তরঞ্জন রায়বিদ্বদ্বল্লভ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন একটি বৈষ্ণব কাব্য যা রচনা করেছেন বড়ু চণ্ডীদাস। যদিও রচনাকাল সঠিকভাবে নির্ণীত হয়নি, এটি সাধারণত প্রাকচৈতন্য যুগের (খ্রিস্টীয় ১৪শ শতক) মনে করা হয়। ১৩১৬ বঙ্গাব্দে (খ্রি. ১৯০৯) বসন্তরঞ্জন রায় পুথিটি আবিষ্কার করেন, যা বাঁকুড়া জেলার বনবিষ্ণুপুরের কাঁকিল্যা গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এর নিকট থেকে পাওয়া যায়। এটি মধ্যযুগের বাংলা ভাষায় রচিত কোনো লেখকের প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ।
-
কাব্যের কাঠামো:
-
মোট ১৩ খন্ডে বিভক্ত
-
মোট ৪১৮টি পদে বিন্যস্ত
-
-
প্রধান চরিত্র:
-
রাধা
-
কৃষ্ণ
-
বড়ায়ি
-
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
'চর্যাগীতিকোষবৃত্তি' নামে মুনিদত্তের টীকার তিব্বতি অনুবাদ করেন কে?
Created: 2 months ago
A
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
রাজেন্দ্রলাল মিত্র
C
কীর্তিচন্দ্র
D
বিজয়চন্দ্র মজুমদার
চর্যাপদ ও প্রাচীন বাংলার পদসংগ্রহ
-
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে তৃতীয় নেপাল সফরে নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে প্রাচীন কিছু সাহিত্য পদ আবিষ্কার করেন।
-
তাঁর সম্পাদনায় এগুলো বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়:
-
চর্যাচর্যবিনিশ্চয়
-
সরহপাদ ও কৃষ্ণপাদের দোহা
-
ডাকার্ণব-এর চারটি পুঁথি
-
গ্রন্থের নাম: ‘হাজার বছরের পুরাণ: বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’
-
-
এগুলোর মধ্যে একমাত্র চর্যাচর্যবিনিশ্চয়ই প্রাচীন বাংলায় লেখা, বাকিগুলো অপভ্রংশ ভাষায় রচিত।
ভাষাতাত্ত্বিক ও ধর্মমত বিশ্লেষণ
-
১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় Origin and Development of the Bengali Language (ODBL) গ্রন্থে এসব পদসংগ্রহের ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য প্রথম আলোচনা করেন।
-
১৯২৭ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদের ধর্মমত সম্পর্কে প্রথম আলোচনা করেন।
-
১৯৩৮ সালে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যার তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন।
পদসংগ্রহের নাম সম্পর্কিত তথ্য
-
মুনিদত্তের সংস্কৃত টীকানুসারে পদসংগ্রহের নাম ছিল ‘আশ্চর্যচর্যাচয়’।
-
নেপালে প্রাপ্ত পুঁথিতে নাম দেওয়া হয়েছিল ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
-
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী দুটি নাম মিলিয়ে ‘চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়’ নামকরণ করেন।
-
কীর্তিচন্দ্র মুনিদত্তের টীকার তিব্বতি অনুবাদ ছিল ‘চর্যাগীতিকোষবৃত্তি’।
-
আধুনিক পণ্ডিতদের অনুমান: মূল সংকলনের নাম ছিল ‘চর্যাগীতিকোষ’, সংস্কৃত টীকার নাম ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago