বিরল ভূতল খনিজ (Rare-Earth Minerals) সম্পর্কিত কোন তথ্যটি সঠিক?
A
এর মধ্যে ১৫টি ধাতু রয়েছে
B
লিথিয়াম এই খনিজের মধ্যে অন্যতম সদস্য
C
এর অসাধারণ চৌম্বক ধর্ম রয়েছে
D
ইউক্রেন এ খনিজ উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে আছে
উত্তরের বিবরণ
বিরল ভূতল খনিজ বা Rare-Earth Minerals হলো আধুনিক প্রযুক্তি ও শিল্পক্ষেত্রে অপরিহার্য একদল মৌল, যাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো পৃথিবীর ভূত্বকে তুলনামূলকভাবে কম পাওয়া গেলেও প্রযুক্তিগতভাবে এর ব্যবহার ব্যাপক।
-
বিরল ভূতল খনিজ পদার্থের অসাধারণ চৌম্বক ধর্ম রয়েছে, যা আধুনিক ইলেকট্রনিক্স ও প্রতিরক্ষা শিল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-
মোট ১৭টি মৌল বিরল খনিজের অন্তর্ভুক্ত।
-
এদের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে লিথিয়াম পাওয়া গেলেও এটি Rare-Earth Minerals-এর সদস্য নয়।
-
চীন উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ।
বিস্তারিতভাবে Rare-Earth Minerals সম্পর্কে তথ্য হলো:
-
বিরল খনিজ হলো ১৭টি মৌলের একটি গ্রুপ।
-
IUPAC (International Union of Pure and Applied Chemistry) এর নামকরণ অনুসারে পর্যায় সারণির ল্যান্থানাইড সিরিজের ১৫টি মৌল (ল্যান্থানাম, সিরিয়াম, প্রাসিয়োডিমিয়াম, নিওডিমিয়াম, প্রমিথিয়াম, স্যামারিয়াম, ইউরোপিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টারবিয়াম, ডিসপ্রোসিয়াম, হোলমিয়াম, আরবিয়াম, থুলিয়াম, ইটারবিয়াম, লুটেশিয়াম) এর সঙ্গে স্ক্যান্ডিয়াম ও ইট্রিয়াম মিলিয়ে মোট ১৭টি বিরল খনিজ।
-
যুক্তরাষ্ট্রের জিওসায়েন্স ইনস্টিটিউট অনুযায়ী এগুলো Rare-Earth group হিসেবে গণ্য।
-
Virginia Energy সংস্থার মতে বিরল খনিজ দুটি ভাগে বিভক্ত:
-
Light Rare-Earth Elements (LREE): ল্যান্থানাম, সিরিয়াম, প্রাসিয়োডিমিয়াম, নিওডিমিয়াম, প্রমিথিয়াম ও স্যামারিয়াম।
-
Heavy Rare-Earth Elements (HREE): ইউরোপিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টারবিয়াম, ডিসপ্রোসিয়াম, হোলমিয়াম, আরবিয়াম, থুলিয়াম, ইটারবিয়াম, লুটেশিয়াম, পাশাপাশি স্ক্যান্ডিয়াম ও ইট্রিয়াম।
-
Rare-Earth Minerals এর ব্যবহার:
-
ইলেকট্রনিক্স: মোবাইল ফোন, কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভ, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ি, LED ডিসপ্লে।
-
প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ প্রযুক্তি: লেজার, রাডার, সোলার সিস্টেম, জেট ইঞ্জিন, মিসাইল সিস্টেম, স্যাটেলাইট।
-
নবায়নযোগ্য শক্তি: বায়ু টারবাইন, সৌর প্যানেল।
-
শিল্পক্ষেত্র: চিকিৎসা, অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি, কাচ ও সিরামিক শিল্প।
-
এগুলোর উত্তোলন ও পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল।
বৈশ্বিক উৎপাদন ও মজুত:
-
চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় Rare-Earth Minerals মজুতের অধিকারী (৪৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন)।
-
বর্তমানে চীন খননের ৭০%, প্রক্রিয়াজাতকরণের ৯০%, এবং চুম্বক তৈরির ৯৩% নিয়ন্ত্রণ করছে।
-
২০২৪ সালে চীনের উৎপাদন ছিল ২,৭০,০০০ টন।
-
অন্যান্য দেশ:
-
ব্রাজিল (২১ মিলিয়ন টন মজুত, ২,৯০০ টন উৎপাদন),
-
ভারত (৬.৯ মিলিয়ন টন মজুত, ২,৯০০ টন উৎপাদন),
-
অস্ট্রেলিয়া (৫.৭ মিলিয়ন টন মজুত, ১৩,০০০ টন উৎপাদন),
-
রাশিয়া (৩.৮ মিলিয়ন টন মজুত, ২,৫০০ টন উৎপাদন),
-
ভিয়েতনাম (৩.৫ মিলিয়ন টন),
-
যুক্তরাষ্ট্র (১.৯ মিলিয়ন টন মজুত, ৪৫,০০০ টন উৎপাদন)।
-
বাংলাদেশে সম্ভাবনা:
-
বাংলাদেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহের পাহাড়ি স্রোতধারা, গাইবান্ধার যমুনা নদী, ধরলা নদীর বালু এবং দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে তেজস্ক্রিয় মৌল ও Rare-Earth Elements পাওয়া গেছে।
-
বিশেষ করে মোনাজাইট ও জিরকনের সঙ্গে যুক্ত লিথিয়াম, ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, স্যামারিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টারবিয়াম ও ডিসপ্রোসিয়াম পাওয়া গেছে।
-
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি কেজি বালুতে ৬০–১৭৬ মিলিগ্রাম Rare-Earth Elements থাকতে পারে।
-
এটি বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য খনিজ সম্পদে পরিণত হতে পারে।

0
Updated: 14 hours ago
কোথায় সাঁতার কাটা সহজ?
Created: 2 weeks ago
A
পুকুরে
B
খালে
C
নদীতে
D
সাগরে
যে কোনো বস্তুকে তরল বা গ্যাসে আংশিক বা পুরোপুরি ডুবালে লম্বভাবে যে উপরের দিকে বল প্রয়োগ হয়, তাকে প্লবতা বলা হয়।
সমুদ্রের পানিতে অনেক ধরনের লবণ দ্রবীভূত থাকে। ফলে সমুদ্রের ঘনত্ব সাধারণ পানির চেয়ে বেশি হয়। ঘনত্ব বেশি হওয়ায় সমুদ্রের পানির প্লবতাও বেশি হয়।
প্লবতা বেশি থাকলে সাঁতারুর শরীর পানিতে তুলনামূলকভাবে হালকা মনে হয়। এজন্য সমুদ্র বা সাগরে সাঁতার কাটা নদীর চেয়ে সহজ হয়।
উৎস: পদার্থবিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি।

0
Updated: 2 weeks ago
হাইড্রোজেন বোমায় ক্রিয়া করে-
Created: 14 hours ago
A
ফিশন বিক্রিয়া
B
ফিউশন বিক্রিয়া
C
ফিশন ও ফিউশন উভয়টিই
D
সাধারণ রাসায়নিক বিক্রিয়া
হাইড্রোজেন বোমা (Hydrogen bomb / Thermonuclear bomb): হাইড্রোজেন বোমায় মূলত পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটে; এতে ফিশন (fission) ও ফিউশন (fusion)—উভয় প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়।
প্রাথমিক রিঅ্যাকশন: প্রথমে একটি ফিশন বিক্রিয়া ঘটিয়ে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন করা হয়, যা ফিউশন শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় চরম উষ্ণতা ও চাপে (extremely high temperature and pressure) পৌঁছে দেয়।
ফিউশন স্টেজ: এই শক্তির মাধ্যমে হাইড্রোজেন আইসোটোপ—ডিউটেরিয়াম এবং ট্রিটিয়াম—এর ফিউশন বিক্রিয়া শুরু হয়, এবং অতি সংক্ষিপ্ত সময়ে বিপুল পরিমাণ শক্তি মুক্তি পায়।
শক্তি মাত্রা ও নাম: যেহেতু মূল শক্তি fusion থেকে আসে, হাইড্রোজেন বোমাকে থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা বলা হয় এবং এটি সাধারণ পারমাণবিক (fission-only) বোমার তুলনায় অনেকগুণ বেশি শক্তিশালী।
নির্বাচন সম্পর্কিত নোট: প্রশ্নের সঠিক উত্তর—গ) ফিশন ও ফিউশন উভয়টিই; যদি অপশনে “ফিশন ও ফিউশন উভয়টিই” না থাকে, তখন “ফিউশন বিক্রিয়া” গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরা হবে।
নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া (Nuclear reaction): যে বিক্রিয়ায় কোনো মৌলের নিউক্লিয়াস পরিবর্তিত হয় তাকে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া বলা হয়; এতে ইলেকট্রনদের ভূমিকা নেই—ইলেকট্রনিক স্তরের পরিবর্তন নয়, বরং নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন ঘটে।
রসায়ন বনাম নিউক্লিয়ার: রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমাণুর বাইরের শক্তিস্তর থেকে ইলেকট্রনের আদান‑প্রদান ঘটে, নিউক্লিয়াস অপরিবর্তিত থাকে; অথচ নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় নিউক্লিয়াসে পরিবর্তন ঘটে এবং নতুন পরমাণু/পরমাণু কোর (nuclei) সৃষ্টি হতে পারে।
ফলাফল ও শক্তি: নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে শক্তি মুক্তি পায়; এই শক্তি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বা অস্ত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।
প্রকারভেদ: নিউক্লিয়ার ফিউশন এবং নিউক্লিয়ার ফিশন—এরা হলো প্রধান দুই ধরনের নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া।
নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া (Nuclear fusion): ছোট ছোট নিউক্লিয়াসসমূহ (light nuclei) একত্রিত হয়ে বৃহৎ নিউক্লিয়াস গঠন করলে সেই প্রক্রিয়াকে ফিউশন (fusion) বলা হয়।
উদাহরণ ও শর্ত: সূর্য ও নক্ষত্রগুলোতে hydrogen fusion ঘটে; fusion সাধারণত অতৈব উষ্ণতা ও উচ্চ চাপ চাই—সেই কারণে কৃত্রিমভাবে নিয়ন্ত্রিত fusion চালানো খুবই চ্যালেঞ্জিং।
নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া (Nuclear fission): কোনো বড় ও ভারী নিউক্লিয়াস ভেঙে ছোট ছোট নিউক্লিয়াসে বিভক্ত হওয়াকে ফিশন (fission) বলা হয়।
নিউট্রন ও শক্তি: স্বল্পগতির নিউট্রন দিয়ে আঘাত করলে একটি ভারী নিউক্লিয়াস প্রায় দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তিনটি নিউট্রন এবং প্রচুর শক্তি উৎপন্ন করতে পারে; এই মুক্ত নিউট্রনগুলো অন্য কোরকে আঘাত করলে চেইন রিঅ্যাকশন (chain reaction) শুরু হয়।
প্রয়োগ: ফিশন থেকে উৎপন্ন শক্তি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং পারমাণবিক অস্ত্র (উদাহরণ: আণবিক বোমা) তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

0
Updated: 14 hours ago
পারমাণবিক চুল্লীতে তাপ পরিবাহক হিসেবে কোন ধাতু ব্যবহৃত হয়?
Created: 1 month ago
A
সোডিয়াম
B
পটাসিয়াম
C
ম্যাগনেসিয়াম
D
জিংক
পারমাণবিক চুল্লি:
- নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর (Nuclear Reactor) বা পারমাণবিক চুল্লি মূলত এক প্রকার তাপীয় যন্ত্র।
- পারমাণবিক চুল্লিতে শক্তি উৎপাদনের জন্য নিউক্লিয়ার ফিশন বা নিউক্লিয়ার চেইন বিক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।
- পারমাণবিক চুল্লিতে পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম-২৩৫)-এর শৃঙ্খল বিক্রিয়া (chain reaction) ঘটিয়ে অত্যধিক তাপ শক্তি উৎপাদন করা হয়।
- মূলত ইউরেনিয়াম-২৩৫ (U-235) কে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে নিউক্লিয়ার বিভাজনের (Nuclear Fission) মাধ্যমে পারমাণবিক চুল্লির মধ্যে প্রচুর পরিমাণ তাপ শক্তি উৎপন্ন হয়।
- পারমাণবিক চুল্লি বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরীসহ অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য,
- পারমাণবিক চুল্লিতে তাপ পরিবাহকরূপে হিসাবে সোডিয়াম ধাতু ব্যবহৃত হয়।
অন্যদিকে,
- জ্বালানি হিসাবে ইউরেনিয়াম ও মডারেটর হিসাবে হাইড্রোজেন ব্যবহৃত হয়।
- হাইড্রোজেন পরমাণু খুবই হালকা হওয়ায় মডারেটর হিসেবে রিয়্যাক্টরে হাইড্রোজেন পরমাণুকেই বেশি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মডারেটর হিসেবে পরিষ্কার গ্রাফাইট, সাধারণ হালকা পানি, ভারী পানি ইত্যাদিও ব্যবহার করা হয়।
উৎস: রসায়ন, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং IAEA ওয়েবসাইট।

0
Updated: 1 month ago