কবে চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়?
A
১৯২০ সালে
B
১৯১৬ সালে
C
১৯০৭ সালে
D
১৯০৯ সালে
উত্তরের বিবরণ
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নির্ভরযোগ্য নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত, যার আবিষ্কারের ইতিহাস বেশ বৈচিত্র্যময়।
১৮৮২ সালে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র তাঁর Sanskrit Buddhist Literature in Nepal গ্রন্থে নেপালের বৌদ্ধতান্ত্রিক সাহিত্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বিভিন্ন গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে একটি কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিলেন। এই কৌতূহল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর তৃতীয় নেপাল সফরকালে ১৯০৭ সালে নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে এই সাহিত্যের কতকগুলো পদ আবিষ্কার করেন। তাঁর সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে এই পদগুলো ১৯১৬ সালে (বাংলা ১৩২৩ সনে) 'হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা' নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, সরহপাদ ও কৃষ্ণপাদের দোহা এবং ডাকার্ণব-এর চারটি পুঁথি একত্রিত করা হয়।
0
Updated: 1 month ago
সহজযান প্রসঙ্গে চর্যাপদের অন্তর্নিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেন কে?
Created: 1 month ago
A
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
ড. বিজয়চন্দ্র মজুমদার
C
রাহুল সাংকৃত্যায়ন
D
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত
চর্যাপদ ও গবেষণা
-
চর্যাপদ: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন, যা বৈষ্ণব-বৌদ্ধ ধারার সঙ্গীতমালা।
-
ভাষা: চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয় ‘সন্ধ্যা’ বা ‘সান্ধ্য ভাষা’। কখনো স্পষ্ট, কখনো অস্পষ্ট। এজন্য একে ‘আলো-আঁধারি’ ভাষা বলা হয়।
-
ছন্দ: চর্যাপদের পদগুলি প্রাচীন ছন্দে রচিত, যা আধুনিক ছন্দের বিচারে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অধীনে বিবেচিত।
চর্যাপদ বিষয়ক গবেষণা:
-
ড. বিজয়চন্দ্র মজুমদার (১৯২০): চর্যাপদের ভাষা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা।
-
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৯২৬): তার গ্রন্থ ‘দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব দি বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ’-এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চর্যাপদের ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
অন্যান্য ভাষাবিজ্ঞানীরা সমর্থন করেছেন, যেমন: ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত, যারা চর্যাপদের ভাষা, বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব নিয়ে বিশদ গবেষণা করেছেন।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৯২৭): চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব বিশ্লেষণ।
-
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত (১৯৪৬): সহজযান প্রসঙ্গে চর্যাপদের অন্তর্নিহিত তত্ত্ব ব্যাখ্যা।
-
রাহুল সাংকৃত্যায়ন (বিহার): বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য, সহজযান ও চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা।
0
Updated: 1 month ago
কোন সাহিত্যকর্মে সান্ধ্যভাষার প্রয়োগ আছে?
Created: 1 month ago
A
পদাবলী
B
গীতগােবিন্দ
C
চর্যাপদ
D
চৈতন্যজীবনী
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম বৌদ্ধ গান সমূহের একটি। এর ভাষাকে বলা হয় 'সন্ধ্যা' বা 'সান্ধ্য ভাষা', যা কখনও স্পষ্ট এবং কখনও অস্পষ্ট। এজন্য একে 'আলো-আঁধারি ভাষা' ও বলা হয়।
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এ ভাষা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, “আলো আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না। যাঁহারা সাধন-ভজন করেন, তাঁহারাই সে কথা বুঝিবেন, আমাদের বুঝিয়া কাজ নাই।” চর্যাপদের পদগুলো প্রাচীন কোনো নির্দিষ্ট ছন্দে রচিত কিনা তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়, তবে আধুনিক ছন্দের বিচার অনুযায়ী এগুলো মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অধীনে বিবেচিত হয়।
চর্যাপদ বিষয়ক গবেষণার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো:
-
১৯২০ সালে বিজয়চন্দ্র মজুমদার প্রথম চর্যাপদের ভাষা নিয়ে আলোচনা করেন।
-
১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষা নিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে স্বীকৃতি দেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত। তার গ্রন্থ 'অরিজিন অ্যান্ড ডেভলোপমেন্ট অব বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ'-এ ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে চর্যাপদের বাংলা ভাষার সম্পদ হিসেবে প্রমাণিত হয়। অধিকাংশ ভাষাবিজ্ঞানী এ অভিমত সমর্থন করেন।
-
১৯২৭ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রথমবার চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব বিশ্লেষণ করেন।
-
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, এবং ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের ভাষা, বিষয়বস্তু প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করে প্রমাণ করেন যে চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
১৯৪৬ সালে ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের অন্তর্নিহিত সহজযান তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
-
বিহারের পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য, বৌদ্ধ সহজযান এবং চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন।
0
Updated: 1 month ago
চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন কে?
Created: 1 month ago
A
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
যতীন্দ্র মোহন বাগচী
C
প্রফুল্ল মোহন বাগচী
D
প্রণয়ভূষণ বাগচী
চর্যাপদকে ঘিরে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইতিহাসে পাওয়া যায়। ১৯৩৮ সালে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতী ভাষার অনুবাদ আবিষ্কার করেন এবং তা প্রকাশ করে দীর্ঘদিনের রহস্য বা চর্যার জট উন্মোচন করেন। উল্লেখযোগ্য যে, চর্যাপদকে তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন কীর্তিচন্দ্র।
-
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রথম কাব্যগ্রন্থ/কবিতা সংকলন/গানের সংকলন হিসেবে স্বীকৃত।
-
এটি বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।
-
ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
-
চর্যাগুলো রচনা করেছিলেন বৌদ্ধ সহজিয়াগণ, যেখানে বৌদ্ধধর্মের আধ্যাত্মিক দিক উঠে এসেছে।
-
সুকুমার সেন তাঁর বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রথম খন্ড) গ্রন্থে চর্যাপদের ২৪ জন পদকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন।
-
অপরদিকে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত Buddhist Mystic Songs গ্রন্থে চর্যাপদের ২৩ জন কবির নাম পাওয়া যায়।
-
পদসংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। সুকুমার সেন মনে করেন চর্যাপদের পদ সংখ্যা ৫১টি; তবে তাঁর চর্যাগীতি পদাবলী গ্রন্থে তিনি ৫০টি পদের উল্লেখ করেছেন। মুনিদত্তও ৫০টি পদ ব্যাখ্যা করেছিলেন।
-
ড. শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের পদ সংখ্যা ৫০টি।
0
Updated: 1 month ago