নিচের কোনটি দেশি শব্দ নয়?
A
পান্তা
B
ডাব
C
ডিঙা
D
মরিচ
উত্তরের বিবরণ
দেশি শব্দ হলো সেইসব শব্দ যা বাংলা অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় স্থান পেয়েছে। এই শব্দগুলো মূলত স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
যেমন কিছু দেশি শব্দ:
-
ডিঙা
-
পেট
-
পান্তা
-
ডাব
-
টোপর
-
ঘাঁটি
অন্যদিকে, মরিচ শব্দটি সংস্কৃত উৎসের।
0
Updated: 1 month ago
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কোন কাব্য রচনা করেন?
Created: 2 weeks ago
A
অভয়া মঙ্গল
B
শিব মঙ্গল
C
অন্নদা মঙ্গল
D
শীতলা মঙ্গল
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর বাংলা মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, যিনি রচনা করেছিলেন ‘অন্নদা মঙ্গল’ কাব্য। এটি বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত মঙ্গলকাব্য ধারার একটি শ্রেষ্ঠ নিদর্শন, যেখানে ধর্মীয় উপাখ্যানের সঙ্গে মানবজীবনের আনন্দ-বেদনা ও সমাজজীবনের বাস্তব চিত্র একসঙ্গে ফুটে উঠেছে।
মূল তথ্যসমূহ:
কবি পরিচয়: ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর ১৮শ শতকের কবি ছিলেন। তাঁর জন্ম হুগলির ট্রিবেনী অঞ্চলে। তিনি বাংলা কাব্যজগতে রস, ভাষা ও ছন্দের এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেন। তাঁর রচনায় ধর্মীয় ভাব, কাব্যিক সৌন্দর্য এবং মানবিক আবেগ একত্রে মিশে আছে।
কাব্যের প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য: ‘অন্নদা মঙ্গল’ কাব্যটি মূলত দেবী অন্নদার মহিমা বর্ণনা করে রচিত হলেও এর মধ্যে নিহিত আছে মানবজীবনের নৈতিক শিক্ষা ও সমাজবাস্তবতার প্রতিফলন। এটি শুধু ধর্মীয় কাহিনি নয়, বরং সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিচ্ছবি।
গঠন ও বিষয়বস্তু: কাব্যটি দুটি ভাগে বিভক্ত—বিষ্ণুপুরের রাজা শিবচন্দ্র ও রানি অন্নদা, এবং উষ্ণানন্দ ও সুন্দরীর কাহিনি। উভয় অংশেই প্রেম, ভক্তি ও দেবী অন্নদার কৃপা মিলিত হয়ে কাহিনিকে গভীরতা দিয়েছে।
ভাষা ও শৈলী: ভারতচন্দ্রের ভাষা ছিল সহজ, মধুর ও ছন্দবদ্ধ। তিনি সংস্কৃত ও তৎসম শব্দের সঙ্গে দেশজ শব্দ ব্যবহার করে ভাষাকে প্রাণবন্ত করেছেন। তাঁর কবিতায় রস, অলঙ্কার ও ছন্দের মেলবন্ধন অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।
সাহিত্যিক মূল্য: ‘অন্নদা মঙ্গল’ কাব্যে ভারতচন্দ্র ধর্মীয় ভাবকে সাহিত্যিক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্য হিসেবে স্বীকৃত। এখানে দেবতা ও মানুষের সম্পর্ক, পুণ্য ও পাপ, ভক্তি ও প্রেম—সব কিছু কাব্যিকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
সাংস্কৃতিক গুরুত্ব: এই কাব্য বাংলা সমাজে দেবী অন্নদার পূজার প্রচলন ও নারীশক্তির মাহাত্ম্য তুলে ধরেছে। পাশাপাশি এটি মধ্যযুগীয় বাংলার ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দলিল হিসেবেও গণ্য হয়।
অতএব, বলা যায়, ‘অন্নদা মঙ্গল’ কাব্যই ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, যা তাঁকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
0
Updated: 1 week ago
"আ + উ = ও"- সন্ধি বিচ্ছেদের এই নিয়মে গঠিত শব্দ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
দীর্ঘোচ্চারণ
B
কথোপকথন
C
গঙ্গোর্মি
D
নবোঢ়া
• স্বরসন্ধির নিয়ম:
বাংলা ভাষায় দুটি পদ একত্রিত হলে কিছু নির্দিষ্ট স্বরধ্বনি পরিবর্তন ঘটে। বিশেষত, প্রথম পদের শেষের অ-ধ্বনি বা আ-ধ্বনি এবং দ্বিতীয় পদের প্রথম উ বা ঊ ধ্বনির সংযোগে ও-ধ্বনি সৃষ্টি হয়। বানানে এটি ও-কারের রূপ হিসেবে প্রকাশ পায়।
উদাহরণসমূহ:
-
অ + উ = ও:
-
সর্ব + উচ্চ → সর্বোচ্চ
-
সূর্য + উদয় → সূর্যোদয়
-
দীর্ঘ + উচ্চারণ → দীর্ঘোচ্চারণ
-
প্রশ্ন + উত্তর → প্রশ্নোত্তর
-
অ + ঊ = ও:
-
নব + ঊঢ়া → নবোঢ়া
-
সর্ব + ঊর্ধ্ব → সর্বোর্ধ্ব
-
আ + উ = ও:
-
যথা + উচিত → যথোচিত
-
কথা + উপকথন → কথোপকথন
-
যথা + উপযুক্ত → যথোপযুক্ত
-
আ + ঊ = ও:
-
গঙ্গা + ঊর্মি → গঙ্গোর্মি
-
মহা + ঊর্মি → মহোর্মি
-
মহা + ঊর্ধ্ব → মহোর্ধ্ব
সংক্ষেপে:
অ/আ + উ/ঊ → ও-কার (যথাযথভাবে মিলিত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়)।
0
Updated: 1 month ago
‘পদ্মাবতী’ কাব্যের রচয়িতা কে?
Created: 2 weeks ago
A
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
B
সৈয়দ আলাওল
C
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
D
সমর সেন
‘পদ্মাবতী’ বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য কাব্য, যার রচয়িতা হলেন সৈয়দ আলাওল। তিনি মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুসলিম কবি, যিনি বাংলা সাহিত্যকে পারস্য ও আরবি সংস্কৃতির সঙ্গে এক অনন্য সংমিশ্রণে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর রচনায় কাব্যিক রোমান্স, নৈতিকতা এবং দর্শনের এক গভীর সংযোগ দেখা যায়, যা তাকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বিশেষ স্থান দিয়েছে।
মূল তথ্যসমূহ:
রচয়িতা পরিচয়: সৈয়দ আলাওল ১৭শ শতাব্দীর আরাকান দরবারের একজন কবি ছিলেন। তিনি ছিলেন উচ্চশিক্ষিত, পারস্য ও আরবি ভাষায় দক্ষ, এবং বাংলা সাহিত্যে মুসলিম কবিদের মধ্যে অগ্রগণ্য। তাঁর রচনায় রাজদরবারের পরিবেশ, ধর্মীয় সহনশীলতা ও মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে।
কাব্যের উৎস: ‘পদ্মাবতী’ মূলত মালিক মুহাম্মদ জায়সির রচিত পারসিক কাব্য ‘পদ্মাবৎ’ থেকে অনুবাদ বা রূপান্তরিত। আলাওল এটি বাংলায় রূপ দিয়েছিলেন, কিন্তু কেবল অনুবাদ করেননি—নিজস্ব কাব্যিক ভাষা ও ভাব যোগ করে এটিকে এক স্বতন্ত্র সাহিত্যকর্মে পরিণত করেন।
কাহিনি সংক্ষেপ: এই কাব্যে রাজপুত রাণী পদ্মাবতী ও রাজা রতনসেন-এর প্রেম কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। কাহিনিতে আরও দেখা যায় দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির পদ্মাবতীর প্রতি আকর্ষণ ও তার ফলাফল। প্রেম, ত্যাগ, বীরত্ব ও ধর্মীয় সহাবস্থানের অনন্য চিত্র এ কাব্যে ফুটে উঠেছে।
সাহিত্যিক মূল্য: ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের ভাষা মাধুর্য, ছন্দের লালিত্য ও রূপকের ব্যবহার অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। সৈয়দ আলাওল পারসিক রোমান্টিক কাব্যধারাকে বাংলায় রূপান্তরিত করে এক নতুন কাব্যধারার সূচনা করেন, যেখানে ইসলামী ঐতিহ্যের পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাবও লক্ষ্য করা যায়।
ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি: যদিও কাহিনি হিন্দু রাজা ও রানিকে কেন্দ্র করে, তবুও আলাওল ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে মানবিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এটি তাঁর মুক্তচিন্তা ও সহিষ্ণু মনোভাবের প্রতিফলন।
সবশেষে বলা যায়, সৈয়দ আলাওল কেবল ‘পদ্মাবতী’-র রচয়িতা নন, তিনি বাংলা মধ্যযুগের এক গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠ, যিনি ধর্ম, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের সংমিশ্রণে এক অনন্য কাব্যিক ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছেন।
0
Updated: 1 week ago