ভূ-পৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তনকারী প্রক্রিয়ার উদাহরণ কোনটি?
A
ভূমিকম্প
B
সুনামি
C
অগ্ন্যুৎপাত
D
উপরের সবগুলো
উত্তরের বিবরণ
ভূ-পৃষ্ঠ সবসময় স্থির থাকে না, এটি নানান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তন কখনো আকস্মিকভাবে ঘটে আবার কখনো দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে ঘটে। বিজ্ঞানীরা ভূ-পৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করেছেন— আকস্মিক পরিবর্তন প্রক্রিয়া এবং ধীর পরিবর্তন প্রক্রিয়া।
-
ভূ-গর্ভস্থ গলিত ম্যাগমা তাপ ও চাপের তারতম্য এবং অন্যান্য ভূমিরূপ গঠনকারী শক্তির প্রভাবে প্রচণ্ড আলোড়িত হয়।
-
এই আলোড়নের ফলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূ-কম্পন, ভূ-অভ্যন্তরে সংকোচন ও প্রসারণ ইত্যাদি নানা পরিবর্তন ঘটে।
-
এ ধরনের পরিবর্তন অত্যন্ত দ্রুত, স্বল্প সময়ে এবং অপেক্ষাকৃত সীমিত স্থানে সংঘটিত হয়।
-
তাই একে আকস্মিক পরিবর্তন প্রক্রিয়া বলা হয়।
-
উদাহরণ: অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প, সুনামি ইত্যাদি।
-
সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ ইত্যাদি প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে ভূ-পৃষ্ঠে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাপক এলাকা জুড়ে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে।
-
এই পরিবর্তনকে বলা হয় ধীর পরিবর্তন প্রক্রিয়া।
-
উদাহরণ: পর্বত, সমভূমি, ব-দ্বীপ ইত্যাদির সৃষ্টি।
-
ধীর পরিবর্তন প্রক্রিয়া মূলত দুইভাবে কাজ করে:
-
নগ্নীভবন (Denudation) – ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নিচু হয়।
-
অবক্ষেপণ (Deposition) – ক্ষয়প্রাপ্ত উপাদান অন্যত্র জমা হয়ে নতুন ভূমিরূপ সৃষ্টি করে।
-
অতিরিক্ত তথ্য হিসেবে বলা যায়, আকস্মিক পরিবর্তন প্রক্রিয়া মানুষের জন্য প্রায়ই ভয়াবহ দুর্যোগ ডেকে আনে, কারণ এগুলো কোনো সতর্কতা ছাড়াই ঘটে এবং জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি করে। অপরদিকে ধীর পরিবর্তন প্রক্রিয়া সাধারণত ধাপে ধাপে ঘটে বলে মানুষ এ পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। পৃথিবীর ভূতত্ত্বে এই দুই প্রক্রিয়ার সম্মিলিত প্রভাবেই আজকের পর্বত, সমভূমি, নদী, হ্রদ, উপকূল ও ব-দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে।

0
Updated: 20 hours ago