মুনীর চৌধুরীর মৌলিক নাটক কোনটি?
A
রক্তাক্ত প্রান্তর
B
কেউ কিছু বলতে পারে না
C
রূপার কৌটা
D
মুখরা রমণী বশীকরণ
উত্তরের বিবরণ
মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও দক্ষ বাগ্মী। তিনি ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে তিনি বামপন্থী রাজনীতি এবং প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
তাঁর মৌলিক নাটকসমূহ হলো:
-
রক্তাক্ত প্রান্তর
-
চিঠি
-
কবর
-
দণ্ডকারণ্য
তাঁর অনুবাদ নাটকসমূহ হলো:
-
কেউ কিছু বলতে পারে না
-
রূপার কৌটা
-
মুখরা রমণী বশীকরণ
0
Updated: 1 month ago
ভাষা-আন্দোলন ভিত্তিক ‘কবর’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
Created: 1 week ago
A
জসীম উদ্দীন
B
আহমদ ছফা
C
শওকত ওসমান
D
মুনীর চৌধুরী
ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত ‘কবর’ বাংলাদেশের নাট্যসাহিত্যের এক অমর সৃষ্টি। এটি লিখেছিলেন মুনীর চৌধুরী, যিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবী। ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে এই নাটকটি বাঙালির আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। নিচে এর সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো।
• ‘কবর’ নাটকটি রচিত হয় ১৯৫৩ সালে, অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনের ঠিক এক বছর পর। এতে মুনীর চৌধুরী সেই আন্দোলনের বেদনাকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করেছেন। নাটকটি বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি না হলেও এর প্রতিটি চরিত্র ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতিচ্ছবি বহন করে।
• এই নাটকটি একটি প্রতীকধর্মী একাঙ্ক নাটক, যেখানে জীবিত ও মৃতের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে ভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের চেতনা ফুটে উঠেছে। নাটকের মূল প্রতীক ‘কবর’—যা শুধু মৃতদের আশ্রয় নয়, বরং জাতির পুনর্জাগরণের চিহ্ন।
• মুনীর চৌধুরী (জন্ম: ১৯২৫, মৃত্যু: ১৯৭১) ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাট্যকার। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে বন্দি হয়ে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ হন। তাই তিনি শুধু লেখক নন, এক মহান শহীদও।
• ‘কবর’ ছাড়াও তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটক হলো ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘দণ্ডকারণ্য’, ‘চিঠি’ ও ‘মির্জা গালিব’। এই নাটকগুলোতেও তিনি সমাজের বাস্তবতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রশ্নকে গভীরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
• নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে মা, ছেলে ও কবরবাসী, যারা মৃত্যুর মধ্য দিয়েও জীবনের বার্তা দেন। এটি প্রতীকীভাবে বোঝায়, ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছে, তারা মৃত নয়—তাদের চেতনা বাঙালির অন্তরে চিরজাগরূক।
• নাটকটির ভাষা সহজ, সংলাপগুলো গভীর ও আবেগময়। এতে মুনীর চৌধুরী সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর হিসেবে বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটিয়েছেন।
• ভাষা আন্দোলনভিত্তিক নাটক হিসেবে ‘কবর’ বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রথম সফল প্রতীকী নাটক। এটি পরবর্তী নাট্যচর্চায় গভীর প্রভাব ফেলে এবং স্বাধীনতাবাদী চেতনার সাহিত্যধারাকে অনুপ্রাণিত করে।
• এই নাটকটি আজও বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্য এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে নিয়মিতভাবে মঞ্চস্থ হয়।
সুতরাং, ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক আবহে রচিত ‘কবর’ নাটকের রচয়িতা মুনীর চৌধুরী—যিনি নিজের জীবন দিয়েও প্রমাণ করেছিলেন বাঙালির ভাষা ও স্বাধীনতার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।
0
Updated: 1 week ago
'কবর' নাটকটির লেখক-
Created: 5 months ago
A
জসীমউদ্দীন
B
নজরুল ইসলাম
C
মুনীর চৌধুরী
D
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
• ‘কবর’ নাটক:
- ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে মুনীর চৌধুরী রচিত নাটক 'কবর'।
- নাটকটি লেখক জেলে থাকা অবস্থায় রচনা করেন এবং ১৯৫৩ সালে জেলের রাজবন্দিদের দ্বারা নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়।
- নাটকটি ১৯৬৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
• ‘কবর’ নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ:
- মার্কিন নাট্যকার Irwin Shaw রচিত 'Bury The Dead' (১৯৩৬) নাটকের অনুসরণে এদেশীয় ঘটনা কেন্দ্র করে 'কবর' নাটক লেখা হয়েছে।
- 'কবর' নাটকে মিছিলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে শহরে কারফিউ দিয়ে লাশ গুম করতে গভীর রাতে কবরস্থানে নিয়ে যায়। পুলিশ ইন্সপেক্টর হাফিজ এবং নেতা (নাটকে তার নাম নেই) যৌথভাবে এ দায়িত্ব নেয়। কিন্তু লাশগুলো ছিন্নভিন্ন দেখে তারা ধর্মীয় প্রথা অনুসারে কবরস্থ না করে একত্রে মাটিচাপা দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বাধা দেয় গোর-খোদক। কবরস্থানে আশ্রয় নেয়া আরেক স্বজনহারা পাগল মুর্দা ফকিরও প্রতিবাদ জানায়।
বলে: এ লাশগুলো আন্দোলনকারীর। এরা এভাবে কবরে যাবে না। লাশগুলোও তখন উঠে দাঁড়ায় এবং বলে: আমরা কবরে যাবো না। এসব দেখে মদ্যপ ইন্সপেক্টর ও নেতা ভয় পেয়ে যায়।
- 'কবর' একুশের পটভূমিতে রচিত প্রথম বাংলা নাটক।
---------------------
• মুনীর চৌধুরী:
- মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী।
- ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে তাঁর জন্ম।
- মুনীর চৌধুরী শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মুনীর চৌধুরীর মৌলিক নাটক:
- রক্তাক্ত প্রান্তর,
- চিঠি,
- কবর,
- দণ্ডকারণ্য।
অনুবাদ নাটক:
- কেউ কিছু বলতে পারে না,
- রূপার কৌটা ও
- মুখরা রমণী বশীকরণ।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 5 months ago
মুনীর চৌধুরী শহীদ হন কোন সালে?
Created: 2 weeks ago
A
১৯৬৮
B
১৯৬৯
C
১৯৭০
D
১৯৭১
বাংলা সাহিত্য, নাটক ও শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের একজন। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত অধ্যাপক, নাট্যকার, ভাষা সৈনিক ও সংস্কৃতিসেবী। তাঁর জীবন ও কর্ম বাংলাদেশ জাতীয় ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি ১৯৭১ সালে শহীদ হন, যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে দেশকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।
-
মুনীর চৌধুরীর জন্ম ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর, মানিকগঞ্জে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন, পরে বাংলা বিভাগেও অধ্যয়ন করেন।
-
তিনি ছিলেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী, ভাষার অধিকারের দাবিতে কারাবন্দীও হন। কারাগারে বসেই তিনি রচনা করেন বিখ্যাত নাটক “কবর”, যা পরবর্তীতে বাংলা নাট্যসাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়।
-
মুনীর চৌধুরী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, যিনি শিক্ষার্থীদের প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা, মুক্তচিন্তা ও মানবতার পাঠ দিতেন।
-
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি দেশের স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন এবং বুদ্ধিজীবী মহলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
-
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, মুক্তিযুদ্ধের ঠিক দুই দিন আগে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী রাজাকার বাহিনী তাঁকে তাঁর ঢাকার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়।
-
তাঁকে আর জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়নি; যুদ্ধশেষে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে অন্যান্য শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে তাঁর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
-
তাঁর হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মেধাবী ও মুক্তচিন্তার মানুষদের ধ্বংস করা, যাতে স্বাধীন দেশের সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়ে।
-
মুনীর চৌধুরী ছিলেন একাধারে নাট্যকার, সমালোচক, অনুবাদক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর অন্যান্য বিখ্যাত নাটকগুলোর মধ্যে আছে “রক্তাক্ত প্রান্তর”, “চেতনা”, “দণ্ডকারণ্য” প্রভৃতি।
-
তাঁর লেখায় সমাজ, রাজনীতি ও মানবতার গভীর বিশ্লেষণ রয়েছে; বিশেষ করে তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অদম্য প্রতিবাদী চেতনা প্রকাশ করেছেন।
-
তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পুরস্কার (২০২১) প্রদান করে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, মুনীর চৌধুরী ১৯৭১ সালে শহীদ হন, যেদিন পাকিস্তানি সেনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর জীবন ও মৃত্যু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে চিরস্মরণীয়।
0
Updated: 2 weeks ago