ভূতাত্ত্বিক গঠন অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে সবচেয়ে পুরাতন শিলা গঠন পাওয়া যায়?
A
সিলেট
B
দিনাজপুর
C
পার্বত্য চট্টগ্রাম
D
মধ্যভাগের উচ্চভূমি
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের ভূ-গঠনের দিক থেকে দিনাজপুর অঞ্চলটি সর্বাধিক প্রাচীন শিলার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ভূ-গাঠনিক অবকাঠামো মূলত তিনটি ইউনিটে বিভক্ত, যার মধ্যে দিনাজপুর অঞ্চলের শিলা প্রাক-ক্যামব্রীয় যুগের।
-
বাংলাদেশ দুটি প্রধান ভূ-গাঠনিক ইউনিট দ্বারা গঠিত:
• উত্তর-পশ্চিমের সুস্থিত প্রাক-ক্যামব্রীয় প্ল্যাটফর্ম
• দক্ষিণ-পূর্বের মহীখাতীয় অববাহিকা -
দেশের প্রায় মধ্যভাগে একটি সংকীর্ণ হিঞ্জ অঞ্চল (Hinge zone) দুই ইউনিটকে পৃথক করেছে, যা উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত।
-
প্রাক-ক্যামব্রীয় প্ল্যাটফর্মের অঞ্চলসমূহ: রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুর।
-
এই ইউনিটের শিলাগুলি মূলত প্রাক-ক্যামব্রীয় আগ্নেয় ও রূপান্তরজ ভিত্তিশিলার উপর সীমিত থেকে মাঝারি পুরুত্ববিশিষ্ট পাললিক শিলার আস্তর দ্বারা গঠিত।
-
আপেক্ষিকভাবে এই অঞ্চল ভূতাত্ত্বিকভাবে স্থিতিশীল, এবং ভঙ্গিল বিচলনের (fold movement) কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
-
কিছু চ্যুতিবেষ্টিত অববাহিকা প্রাক-ক্যামব্রীয় ভিত্তিশিলার আওতাভুক্ত, যার মধ্যে পার্মিয় যুগের কয়লাবাহী শিলার ইউনিটও রয়েছে (২৮৬-২৪৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে)।
-
বাংলাদেশে এটি সর্বাধিক প্রাচীন পাললিক শিলা।
-
প্রাক-ক্যামব্রীয় প্ল্যাটফর্মকে দুটি অংশে ভাগ করা যায়:
• উত্তরাঞ্চলীয় রংপুর অবতল (Rangpur saddle) – অগভীর ভিত্তিশিলা (১৩০–১০০০ মিটার)
• দক্ষিণাঞ্চলীয় বগুড়া সোপান – মাঝারি গভীরতা (১–৬ কিমি), যেখানে পাললিক স্তরসমূহ হিঞ্জ অঞ্চল পর্যন্ত ধীরে ধীরে দক্ষিণ-পূর্বে নতিশীল এবং এরপর ১৫–২০ ডিগ্রিতে ঢাল বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে পাললিক ইউনিটগুলো গভীর মহীখাতীয় অববাহিকায় নেমে গেছে। -
দক্ষিণ-পূর্বের মহীখাতীয় অববাহিকা বৈশিষ্ট্য:
• ব্যাপক পুরুত্বের ক্লাসটিক পাললিক শিলা (সর্বাধিক প্রায় ২০ কিমি)
• অধিকাংশ শিলা বেলেপাথর এবং টারশিয়ারী যুগের কর্দম শিলা দ্বারা গঠিত
• বিস্তৃত অঞ্চল: ঢাকা, ফরিদপুর, নোয়াখালী, সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং বঙ্গোপসাগরের অংশ।

0
Updated: 8 hours ago
কনরাড বিযুক্তি ভূ-অভ্যন্তরের কোন স্তরসমূহের মাঝে অবস্থান করে?
Created: 8 hours ago
A
সিয়াল ও সিমা
B
অশ্বমণ্ডল ও গুরুমণ্ডল
C
গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল
D
সিমা ও অশ্বমণ্ডল
কনরাড বিযুক্তি হলো ভূ-অভ্যন্তরের Sial ও Sima স্তরের মাঝে অবস্থানকারী একটি বিভাজনীয় স্তর, যা ভূ-ত্বকের উপরের ও মধ্যবর্তী স্তরের শিলান্তরকে আলাদা করে। এটি মূলত সেই সীমারেখা যেখানে ভূ-ত্বকের লঘু শিলা (সিয়াল) এবং গুরু শিলা (সিমা) মিলিত হয়।
-
কনরাড বিযুক্তি রেখা হলো Sial ও Sima স্তরকে আলাদা করা স্তর।
-
অর্থাৎ, ভূ-ত্বকের উপরের লঘুশিলা ও নিচের গুরু শিলা সীমারেখায় মিলিত হওয়াকেই কনরাড বিযুক্তি (Conrad Discontinuity) বলা হয়।
-
সমুদ্র তলদেশের ভূত্বক প্রধানত ব্যাসল্টজাতীয়, যা মূলত ম্যাগনেসিয়াম (Mg) এবং সিলিকন (Si) সমৃদ্ধ। এই স্তরকে সিমা (Sima) বলা হয়। ধারণা করা হয় যে, এই ব্যাসল্ট স্তর মহাদেশের মেফিক স্তরের নিচে এবং গভীর সমুদ্রের তলদেশে বিস্তৃত। ভূ-ত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
-
সিয়াল (Sial) হলো ভূ-ত্বকের উপরের লঘুশিলা, যা গ্রানাইট প্রভৃতি শিলায় সমৃদ্ধ। এতে সিলিকা (SiO₂) এবং অ্যালুমিনিয়াম (Al) প্রধান। এই স্তরে গাছপালা ও তৃণাদি জন্মাতে পারে। মহাদেশগুলো প্রধানত এই ধরনের শিলায় গঠিত।
-
ভূ-ত্বকের গঠন মোটামুটি নিম্নরূপ:
• সিয়াল (গ্রানাইট) → ভূ-ত্বকের উপরের স্তর, কনরাড বিযুক্তি পর্যন্ত বিস্তৃত।
• সিমা (ব্যাসল্ট) → মধ্যবর্তী স্তর।
• অলিভিন → ভূ-ত্বকের নিম্ন স্তর। -
পৃথিবীর অভ্যন্তর তিনটি প্রধান স্তরে বিভক্ত:
• অশ্বমন্ডল (Lithosphere) → সবচেয়ে উপরের স্তর, গুরুমন্ডলের উপরে অবস্থিত, কঠিন বহিরাবরণ। গভীরতা প্রায় ৩০–৬৪ কি.মি., শিলায় সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, লৌহ, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন রয়েছে।
• গুরুমন্ডল (Mantle) → অশ্বমন্ডল থেকে কেন্দ্রমন্ডলের নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত, পৃথিবীর আয়তনের ৮২% এবং ওজনের ৬৮% দখল করে।
• কেন্দ্রমন্ডল (Core) → পৃথিবীর কেন্দ্রের চারপাশে প্রায় ৩,৪৮৬ কি.মি. ব্যাসার্ধের একটি স্তর। ঘনত্ব প্রায় ১০.৭৮ গ্রাম/সে.মি³, যা গুরুমন্ডলের প্রায় দ্বিগুণ। মূলত লৌহ, নিকেল, পারদ, সীসা দ্বারা গঠিত। লৌহ ও নিকেল সমৃদ্ধ হওয়ায় একে নাইফ (Nife) বলা হয়। -
পৃথিবীর মোট ব্যাসার্ধ প্রায় ৬,৪৩৪ কি.মি।।

0
Updated: 8 hours ago
বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান খনিজ সম্পদ কোনটি?
Created: 8 hours ago
A
চুনাপাথর
B
কাঁচবালি
C
কয়লা
D
খনিজ লবণ
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদের মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান খনিজ সম্পদ হল কয়লা, যা দেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কয়লা ছাড়াও চুনাপাথর, কাচাঁবালি এবং খনিজ লবণ রয়েছে, তবে এগুলোর প্রাধান্য ও মজুত অঞ্চল আলাদা।
• কয়লা:
-
১৯৫৯ সালে ভূ-পৃষ্ঠের গভীরতায় প্রথমবার কয়লা আবিষ্কৃত হয়।
-
বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জি.এস.বি)-এর ক্রমাগত প্রচেষ্টায় মোট ৪টি কয়লাক্ষেত্র শনাক্ত করা হয়।
-
পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে মার্কিন ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ কোম্পানি BHP-Minerals আরও একটি কয়লাখনি আবিষ্কার করে, যার ফলে দেশের কয়লাখনির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫টি।
-
আবিষ্কৃত সকল কয়লাখনি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত।
-
উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিঃ জামালগঞ্জ, বড়পুকুরিয়া, খালাশপীর, দীঘিপাড়া, ফুলবাড়ী।
• চুনাপাথর:
-
১৯৬০-এর দশকের শুরুতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের টাকেরঘাট এলাকায় ইয়োসিন যুগীয় চুনাপাথরের ছোট মজুত থেকে চুনাপাথর আহরণ করা হয় এবং তা সিমেন্ট ফ্যাক্টরীতে সরবরাহ করা হয়।
-
নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলায় চুনাপাথর খনি রয়েছে।
• কাচাঁবালি:
-
বাংলাদেশের উপকূলীয় বলয় এবং উপকূলীয় দ্বীপসমূহে সৈকত বালির উল্লেখযোগ্য মজুত রয়েছে।
• খনিজ লবণ:
-
সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে, বিশেষত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা ও সাতক্ষীরা, সমুদ্রের লোনা পানি বাষ্পীভবন বা সৌর পদ্ধতিতে আটকে রেখে লবণ উৎপাদন করা হয়।
-
এটি প্রধান খনিজ সম্পদ নয়।
সুতরাং বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান খনিজ সম্পদ কয়লা।

0
Updated: 8 hours ago
প্রতি ৩০° দ্রাঘিমার স্থানান্তরে সময়ের ব্যবধান কত মিনিট হয়?
Created: 8 hours ago
A
১৫ মিনিট
B
৩০ মিনিট
C
৬০ মিনিট
D
১২০ মিনিট
প্রতি ৩০° দ্রাঘিমার স্থানান্তরে সময়ের ব্যবধান এবং গ্রিনিচ মান সময় ও স্থানভেদে সময়ের পার্থক্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিচের মতো ব্যাখ্যা করা যায়।
-
প্রতি ১° দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য হচ্ছে ৪ মিনিট।
-
প্রতি ৩০° দ্রাঘিমার জন্য সময়ের পার্থক্য হয় ৩০ × ৪ = ১২০ মিনিট বা ২ ঘন্টা।
-
গ্রিনিচ মান সময় (Greenwich Mean Time বা GMT) থেকে বাংলাদেশ সময় ৬ ঘণ্টা এগিয়ে আছে।
-
পৃথিবী প্রতি ডিগ্রি দ্রাঘিমার জন্য ৪ মিনিট সময়ের পার্থক্য তৈরি করে।
-
বাংলাদেশ মূল মধ্যরেখা বা গ্রিনিচ মানমন্দির থেকে ৯০° পূর্বে অবস্থিত। তাই বাংলাদেশের এবং গ্রিনিচের সময়ের পার্থক্য = ৯০ × ৪ = ৩৬০ মিনিট = ৬ ঘন্টা।
-
গ্রিনিচের পূর্বে অবস্থিত স্থানগুলোর সময় গ্রিনিচ থেকে এগিয়ে থাকে, আর পশ্চিমে অবস্থিত স্থানের সময় গ্রিনিচ থেকে পিছিয়ে থাকে।
স্থানভেদে সময়ের পার্থক্য:
-
পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘূর্ণায়মান, এজন্য পূর্ব দিকের দেশগুলোতে দিনের শুরু আগে, আর পশ্চিম দিকের দেশগুলোতে দিন পরে আসে।
-
প্রতি ১° দ্রাঘিমার দূরত্বে ৪ মিনিট সময়ের পার্থক্য হয়।
-
দূরত্বের মিনিটকে সময়ের মিনিটের সাথে ভুলভাবে মিশানো যায়, কিন্তু বাস্তবে ১° কে ৬০ মিনিটে ভাগ করা হয়।
-
এই ৬০ মিনিটের প্রতিটিতে সময়ের পার্থক্য ৪ সেকেন্ড, অর্থাৎ ৬০ × ৪ = ২৪০ সেকেন্ড = ৪ মিনিট।

0
Updated: 8 hours ago