মহাস্থানগড়ে কোন ধরনের লিপি পাওয়া যায়?
A
নাগরী লিপি
B
ওড়িয়া লিপি
C
দেবনাগরী লিপি
D
ব্রাহ্মী লিপি
উত্তরের বিবরণ
পুণ্ড্র জনপদ ছিল বাংলার প্রাচীন ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ জনপদ, যা সভ্যতা ও নিদর্শনের সমৃদ্ধতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
-
‘পুণ্ড্র’ শব্দের অর্থ আখ বা ইক্ষু
-
ধারণা করা হয়, পুণ্ড্র নামে একটি জনগোষ্ঠী এই জনপদ গড়ে তুলেছিল
-
বর্তমান বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে পুণ্ড্র জনপদ গঠিত হয়েছিল
-
পুণ্ড্র জনপদের রাজধানীর নাম ছিল পুণ্ড্রনগর
-
পরবর্তীকালে পুণ্ড্রনগরের নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় মহাস্থানগড়
-
পণ্ডিতদের মতে, মহাস্থানগড়ই প্রাচীন পুণ্ড্র নগরীর ধ্বংসাবশেষ
-
প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক থেকে পুণ্ড্র ছিল বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ নগরসভ্যতা
-
মহাস্থানগড়ে পাথরের চাকতিতে খোদাই করা একটি শিলালিপি পাওয়া গেছে, যার নাম মহাস্থান ব্রাহ্মীলিপি
-
ধারণা করা হয়, এটি বাংলাদেশে আবিষ্কৃত প্রাচীনতম শিলালিপি
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থান কোনটি?
Created: 2 weeks ago
A
ময়নামতি
B
পাহাড়পুর
C
সোনারগাঁও
D
মহাস্থানগড়
বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থান হলো মহাস্থানগড়, যা উত্তরবঙ্গের বগুড়া জেলায় অবস্থিত। এটি কেবল বাংলাদেশের নয়, বরং সমগ্র বঙ্গ অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন নগরসভ্যতার নিদর্শন। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, মহাস্থানগড়ের ইতিহাস প্রায় দুই হাজার পাঁচশ বছর পুরোনো, যা একে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য প্রাচীন নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মহাস্থানগড়ের অবস্থান ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
মহাস্থানগড় বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তর দিকে, করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এটি প্রাচীন পুন্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল, যা ছিল পুন্ড্রবর্ধন জনপদের রাজধানী। এই জনপদটি প্রাচীনকালে বঙ্গের উত্তরাঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
-
মহাস্থানগড়ের প্রাচীনতার প্রমাণ মেলে মৌর্য, গুপ্ত ও পাল যুগের বিভিন্ন নিদর্শনে।
-
প্রত্নতাত্ত্বিক খননে এখানে পাওয়া গেছে প্রাচীন ইটের স্থাপনা, দুর্গ প্রাচীর, রাজবাড়ি, মন্দির, শিলালিপি ও মুদ্রা।
-
এখানে আবিষ্কৃত মহাস্থান ব্রাহ্মী শিলালিপি (খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী) বাংলাদেশের সর্বপ্রথম লিখিত দলিল হিসেবে পরিচিত, যা একে ঐতিহাসিকভাবে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে।
-
মহাস্থানগড় দীর্ঘদিন ধরে বৌদ্ধ ধর্মের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল, বিশেষ করে পাল যুগে এখানে বহু বৌদ্ধ বিহার ও শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে ওঠে।
স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন:
মহাস্থানগড় একটি প্রাচীরবেষ্টিত নগর ছিল, যার আয়তন প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৪৫০–৬০০ মিটার প্রস্থ। শহরের চারদিকে ছিল ইট ও কাদামাটির তৈরি শক্ত প্রাচীর, যা প্রতিরক্ষা কাঠামো হিসেবে ব্যবহৃত হতো। নগরীর ভিতরে রয়েছে রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, মহাস্থান মন্দির, মির্জাপুর বৌদ্ধবিহার, গোবিন্দভিটা ও প্যারাশুরাম প্যালেসের অবশেষ।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব:
মহাস্থানগড়ের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বহু ধর্মীয় কাহিনি ও লোকবিশ্বাস। স্থানীয় জনগণের কাছে এটি হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম—তিন ধর্মেরই পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত। এখানকার “মনষা মন্দির” ও “শাহ সুলতান বলখী মাহিসাওয়ারের মাজার” ধর্মীয় সহাবস্থানের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
অন্য বিকল্পগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে:
-
ময়নামতি: কুমিল্লায় অবস্থিত বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা, যা পাল যুগের (৮ম–১২শ শতাব্দী) বৌদ্ধবিহার ও শিক্ষাকেন্দ্রের জন্য বিখ্যাত।
-
পাহাড়পুর: নওগাঁ জেলার সোমপুর মহাবিহার, পাল যুগের (৮ম শতাব্দী) একটি বিশ্বখ্যাত বৌদ্ধবিহার এবং UNESCO World Heritage Site।
-
সোনারগাঁও: নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত একটি মধ্যযুগীয় ঐতিহাসিক শহর, যা ইলিয়াস শাহ ও বাঙ্গালা সুলতানদের রাজধানী ছিল।
অতএব, ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব ও সাংস্কৃতিক প্রমাণের আলোকে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থান হলো মহাস্থানগড়, যা প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধন রাজ্যের রাজধানী হিসেবে বাংলাদেশের সভ্যতা ও ইতিহাসের সূচনা নির্দেশ করে।
0
Updated: 2 weeks ago
‘মহাস্থানগড়’ কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
Created: 3 weeks ago
A
কপোতাক্ষ
B
যমুনা
C
পদ্মা
D
করতোয়া
মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি প্রাচীন শহর, যা বগুড়া জেলায় অবস্থিত। এটি করতোয়া নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। মহাস্থানগড় বাংলার প্রাচীন সভ্যতা ও ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
0
Updated: 3 weeks ago
বাংলার প্রাচীনতম শিলালিপি 'ব্রাহ্মী লিপি' কোথায় পাওয়া গেছে?
Created: 1 week ago
A
ময়নামতি
B
উয়ারী বটেশ্বর
C
পাহাড়পুর
D
মহাস্থানগড়
মহাস্থানগড়ের প্রথাগত প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে কে. এন. দীক্ষিত ১৯২৮-২৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম শুরু করেন। পরবর্তীতে, ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে খননের মাধ্যমে ব্রাহ্মী লিপি আবিষ্কৃত হয়। এই লিপিতে পুণ্ড্রনগরের প্রাদেশিক শাসক হিসেবে সম্রাট অশোক দুর্ভিক্ষপীড়িত জনগণের জন্য রাজভান্ডার থেকে খাদ্যশস্য ও অর্থ সহায়তার নির্দেশ দেন।
0
Updated: 1 week ago