• স্বরসন্ধির নিয়ম:
বাংলা ভাষায় দুটি পদ একত্রিত হলে কিছু নির্দিষ্ট স্বরধ্বনি পরিবর্তন ঘটে। বিশেষত, প্রথম পদের শেষের অ-ধ্বনি বা আ-ধ্বনি এবং দ্বিতীয় পদের প্রথম উ বা ঊ ধ্বনির সংযোগে ও-ধ্বনি সৃষ্টি হয়। বানানে এটি ও-কারের রূপ হিসেবে প্রকাশ পায়।

উদাহরণসমূহ:

1. অ + উ = ও:

• সর্ব + উচ্চ → সর্বোচ্চ

• সূর্য + উদয় → সূর্যোদয়

• দীর্ঘ + উচ্চারণ → দীর্ঘোচ্চারণ

• প্রশ্ন + উত্তর → প্রশ্নোত্তর

2. অ + ঊ = ও:

• নব + ঊঢ়া → নবোঢ়া

• সর্ব + ঊর্ধ্ব → সর্বোর্ধ্ব

3. আ + উ = ও:

• যথা + উচিত → যথোচিত

• কথা + উপকথন → কথোপকথন

• যথা + উপযুক্ত → যথোপযুক্ত

4. আ + ঊ = ও:

• গঙ্গা + ঊর্মি → গঙ্গোর্মি

• মহা + ঊর্মি → মহোর্মি

• মহা + ঊর্ধ্ব → মহোর্ধ্ব

সংক্ষেপে:

অ/আ + উ/ঊ → ও-কার (যথাযথভাবে মিলিত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়)।

সংযোগ ক্রিয়া হলো সেই ক্রিয়া যা বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি যৌগিক রূপ ধারণ করে।

উদাহরণ:

• বৃদ্ধি পাওয়া

• কমে আসা

• এগিয়ে চলা

• পেয়ে বসা

এ ধরনের ক্রিয়াগুলোতে করা, কাটা, হওয়া, দেওয়া, ধরা, পাওয়া, খাওয়া, মারা ইত্যাদি ক্রিয়া বিশেষ্য বা বিশেষণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যৌগিক ক্রিয়া গঠন করে।

উল্লেখ্য, যৌগিক ক্রিয়া হলো সেই ক্রিয়া যেখানে অসমাপিকা ক্রিয়া এবং সমাপিকা ক্রিয়া একত্রিত হয়ে একটি পূর্ণ ক্রিয়ার ভাব প্রকাশ করে।

বাংলা সাহিত্যে হুমায়ুন কবির রচিত ‘নদী ও নারী’ একটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। এটি ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত হয় এবং একই বছরে ইংরেজি অনুবাদ ‘Men and Rivers’ প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটির মূল পটভূমি হলো চরের মানুষের জীবনসংগ্রাম।

• উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে নজু মিয়া ও আসগর মিয়া—এই দুই বন্ধুর জীবনকে কেন্দ্র করে।

• এতে পদ্মা নদীর পাড়ে বসবাসকারী বাঙালি মুসলমান সমাজের বাস্তবচিত্র জীবন্তভাবে ফুটে উঠেছে।

• গ্রামীণ জীবনের কষ্ট, সংগ্রাম এবং নদী নির্ভর সমাজব্যবস্থা এখানে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

• উপন্যাসটি ১৯৬৫ সালে ঢাকায় চলচ্চিত্রায়িত হয়।

হুমায়ুন কবির সম্পর্কে তথ্য:

• জন্ম: ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৬; ফরিদপুর জেলার কোমরপুর গ্রামে।

• পূর্ণ নাম: হুমায়ুন জহিরউদ্দিন আমির-ই-কবির।

• তিনি সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি ‘চতুরঙ্গ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন, যা তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে স্মরণীয়।

• মৃত্যু: ১৮ আগস্ট, ১৯৬৯; হৃদরোগে।

তাঁর রচিত উপন্যাস:

• নদী ও নারী