A
কবিতা
B
পত্রিকা
C
উপন্যাস
D
ছোটগল্প
উত্তরের বিবরণ
[অপশনে একের অধিক সঠিক উত্তর থাকায় প্রশ্নটি বাতিল করা হলো।]
কাজী নজরুল ইসলাম ও 'ধূমকেতু'— কবিতা ও পত্রিকায় বিদ্রোহের প্রতিচ্ছবি
কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্মে 'ধূমকেতু' শব্দটি একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে— এটি একদিকে তার একটি কবিতা, অন্যদিকে একটি অর্ধসাপ্তাহিক পত্রিকার নাম। উভয় প্রকাশনাই তার বিপ্লবী মনন ও প্রতিবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটায়।
'অগ্নিবীণা' কাব্যগ্রন্থ ও 'ধূমকেতু' কবিতা
নজরুলের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অগ্নিবীণা' প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২২ সালে। এই গ্রন্থটি বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে উৎসর্গ করা হয়। এতে মোট ১২টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ‘ধূমকেতু’ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
'অগ্নিবীণা' কাব্যের কবিতাগুলোর নাম:
প্রলয়োল্লাস, বিদ্রোহী, রক্তাম্বর-ধারিণী মা, আগমণী, ধূমকেতু, কামাল পাশা, আনোয়ার, রণভেরী, শাত-ইল-আরব, খেয়াপারের তরণী, কোরবানী, মহররম।
এই গ্রন্থের প্রথম কবিতা ‘প্রলয়োল্লাস’ এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতা ‘বিদ্রোহী’, যার মাধ্যমে নজরুল ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে পরিচিতি পান।
‘ধূমকেতু’ কবিতা একটি প্রতীকী কাব্যরূপ, যেখানে কবি নিজেকে বিপ্লব ও ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। কবিতায় ধ্বংস, শুদ্ধি ও নতুন সূর্যের আগমনের ইঙ্গিত স্পষ্ট:
"আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুন মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!"
এই পঙ্ক্তির মাধ্যমে নজরুল নিজেকে শিবের তৃতীয় চক্ষুর ন্যায় ধ্বংসকারী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।
'ধূমকেতু' পত্রিকা: স্বাধীনতার জ্বলন্ত মশাল
১৯২২ সালে কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘ধূমকেতু’ নামে একটি অর্ধসাপ্তাহিক পত্রিকা, যা দ্রুতই হয়ে ওঠে ব্রিটিশবিরোধী চেতনার প্রবল বাহক। এই পত্রিকা সপ্তাহে দু’বার প্রকাশিত হতো এবং সাহিত্যের পাশাপাশি রাজনৈতিক বক্তব্য প্রকাশেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করত।
বিশেষত্ব:
-
'ধূমকেতু' পত্রিকা মূলত সশস্ত্র বিপ্লববাদকে প্রেরণা জোগাত।
-
এর একটি সংখ্যায় (২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২) নজরুলের বিতর্কিত কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ সরকার তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
-
পত্রিকার পরিচিতি-সংলাপ ছিল: "কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু।"
এই পত্রিকার মাধ্যমে নজরুল কেবল সাহিত্যিক নন, এক বিদ্রোহী জাতীয় চেতনার ধারক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন।
‘ধূমকেতু’ শব্দটি নজরুলের সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক জীবনের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের প্রতীক।
কবিতার মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেছেন তাঁর বিপ্লবী চেতনার দৃষ্টিভঙ্গি, আর পত্রিকার মাধ্যমে সমাজে সেই চেতনার বাস্তব প্রয়োগ।এভাবেই কাজী নজরুল ইসলাম বাংলার সাহিত্য ও ইতিহাসে একটি অমর নাম হয়ে উঠেছেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া,‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থ.

0
Updated: 2 weeks ago
কোন কবিতা রচনার কারণে নজরুল ইসলামের কারাদণ্ড হয়েছিল?
Created: 2 weeks ago
A
বিদ্রোহী
B
আনন্দময়ীর আগমনে
C
কাণ্ডারী হুশিয়ার
D
অগ্রপথিক
কাজী নজরুল ইসলামের রচিত 'আনন্দময়ীর আগমনে' একটি প্রতিবাদী কবিতা, যা তাকে কারাবরণে বাধ্য করেছিল।
৭৯ লাইনের এই জ্বালাময়ী কবিতাটি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদে ভরপুর। ১৯২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার পূজাবার্ষিকীতে কবিতাটি প্রকাশিত হলে, ব্রিটিশ সরকার এতে বিদ্রোহের গন্ধ পেয়ে নজরুলকে কুমিল্লা থেকে ৮ নভেম্বর গ্রেফতার করে।
কাজী নজরুল ইসলাম: বিদ্রোহ ও সাহিত্যের কবি
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজচিন্তায় ছিলেন এক বিপ্লবী চিন্তার ধারক। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে।
শৈশবে ‘দুখু মিয়া’ নামে পরিচিত এই কবি বাংলা সাহিত্যে ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে খ্যাত হন।
গানে ও কবিতায় সমান পারদর্শী নজরুল আধুনিক বাংলা সংগীত জগতে ‘বুলবুল’ নামে সুপরিচিত।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো:
-
অগ্নিবীণা
-
বিষের বাঁশী
-
ছায়ানট
-
সাম্যবাদী
-
সর্বহারা
-
সিন্ধু-হিন্দোল
-
চক্রবাক
-
ফণি-মনসা
-
প্রলয়-শিখা
তথ্যসূত্র:
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা - ড. সৌমিত্র শেখর
বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 2 weeks ago
'আজ চারদিক হতে ধনিক বণিক শোষণকারীর জাত, ও ভাই জোঁকের মতন শুষছে রক্ত, কাড়ছে থালার ভাত।' - কার লেখা?
Created: 4 days ago
A
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
কাজী নজরুল ইসলাম
C
গোলাম মোস্তফা
D
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
উক্ত উদ্ধৃতাংশটি
"আজ চারদিক হতে ধনিক বণিক শোষণকারীর জাত,
ও ভাই জোঁকের মতন শুষছে রক্ত, কাড়ছে থালার ভাত।"
— "কৃষাণের গান" কবিতার অংশ, যার রচয়িতা হলেন: কাজী নজরুল ইসলাম।
• প্রশ্নে উল্লিখিত পঙক্তিগুলো কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতা ‘কৃষাণের গান’ থেকে নেওয়া। এই কবিতাটি নজরুলের বিদ্রোহী সুর ও শোষিত-বঞ্চিত কৃষক সমাজের প্রতি সহানুভূতির প্রকাশ। কবিতাটি কৃষকদের দুর্দশা, শোষণ, এবং তাদের প্রতিরোধের আহ্বানকে তুলে ধরে, যা নজরুলের বিপ্লবী ও সমাজচেতনামূলক কাব্যশৈলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
-------------------
কাজী নজরুল ইসলাম:
- কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।
- ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।
- বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’।
- আধুনিক বাংলা গানের জগতে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাত।
কাজী নজরুল ইসলাম রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
- অগ্নি-বীণা,
- সঞ্চিতা,
- চিত্তনামা,
- মরুভাস্কর,
- সর্বহারা,
- ফণি-মনসা,
- চক্রবাক,
- সাম্যবাদী,
- ছায়ানট,
- নতুন চাঁদ,
- পুবের হাওয়া।
-----------------------
কৃষাণের গান- কবিতা
ওঠ রে চাষি জগদ্বাসী ধর কষে লাঙল।
আমরা মরতে আছি – ভালো করেই মরব এবার চল॥
মোদের উঠান-ভরা শস্য ছিল হাস্য-ভরা দেশ
ওই বৈশ্য দেশের দস্যু এসে লাঞ্ছনার নাই শেষ,
ও ভাই লক্ষ হাতে টানছে তারা লক্ষ্মী মায়ের কেশ,
আজ মা-র কাঁদনে লোনা হল সাত সাগরের জল॥
ও ভাই আমরা ছিলাম পরম সুখী, ছিলাম দেশের প্রাণ
তখন গলায় গলায় গান ছিল ভাই, গোলায় গোলায় ধান,
আজ কোথায় বা সে গান গেল ভাই কোথায় সে কৃষাণ?
ও ভাই মোদের রক্ত জল হয়ে আজ ভরতেছে বোতল।
আজ চারদিক হতে ধনিক বণিক শোষণকারীর জাত
ও ভাই জোঁকের মতন শুষছে রক্ত, কাড়ছে থালার ভাত,
মোর বুকের কাছে মরছে খোকা, নাইকো আমার হাত।
আর সতী মেয়ের বসন কেড়ে খেলছে খেলা খল॥
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা ড. সৌমিত্র শেখর। বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 4 days ago
কাজী নজরুল ইসলাম রচিত 'বাঁধন-হারা' পত্রোপন্যাসে মোট কয়টি পত্র রয়েছে?
Created: 1 month ago
A
১২ টি
B
১৪টি
C
১৭টি
D
১৮টি
বাঁধন-হারা:
- ‘বাঁধন-হারা’ কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম উপন্যাস, যা প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে।
- এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রোপন্যাস, যেখানে মোট ১৮টি পত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
- নজরুল ইসলাম করাচিতে অবস্থানকালে এই উপন্যাস রচনা শুরু করেন।
- এটি মুসলিম ভারত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
- উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র নুরুল হুদা, এবং অন্যান্য চরিত্রের মধ্যে রয়েছে মাহবুবা, রবিউল, রাবেয়া ও সোফিয়া।
কাজী নজরুল ইসলাম:
- তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।
- তাঁর জন্ম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) খ্রিস্টাব্দে, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে।
- বাংলা সাহিত্যে তিনি পরিচিত ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে এবং আধুনিক বাংলা গানে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাত।
- ১৯৭২ সালের ২৪ মে, ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবিকে সপরিবারে স্বাধীন বাংলাদেশে আনা হয়।
- ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে, বাংলাদেশ সরকার তাঁকে নাগরিকত্ব প্রদান করে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করে।
- কবি মৃত্যুবরণ করেন ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ (১২ ভাদ্র ১৩৮৩), ঢাকার পিজি হাসপাতালে।
কাজী নজরুল ইসলাম রচিত উপন্যাস:
- বাঁধন-হারা
- মৃত্যুক্ষুধা
- কুহেলিকা
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 1 month ago