রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন গ্রন্থটি উপন্যাস?
A
শেষের কবিতা
B
বলাকা
C
ডাকঘর
D
কালান্তর
উত্তরের বিবরণ
শেষের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনবদ্য রোমান্টিক উপন্যাস ‘শেষের কবিতা’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৮ সালে প্রবাসী পত্রিকায় এবং গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায় ১৯২৯ সালে।
কাব্যিক ভাষার জৌলুস, চিন্তার দীপ্তি ও সাহিত্যের গুণগত উৎকর্ষে পরিপূর্ণ এই উপন্যাসটি রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিশীলতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন।
উপন্যাসটির মূল চরিত্রগুলো হলো—অমিত রায়, লাবণ্য, কেতকী ও শোভনলাল। তাদের মধ্যে সম্পর্ক, মনস্তত্ত্ব ও দার্শনিক দ্বন্দ্ব এই উপন্যাসের মূল আকর্ষণ। এর বহু সংলাপ ও উক্তি আজ প্রবাদের মর্যাদা পেয়েছে, যেমন—“ফ্যাশনটা হলো মুখোশ, স্টাইলটা হলো মুখশ্রী”।
সাহিত্য বিশারদ ড. সুকুমার সেন মন্তব্য করেছিলেন, “বৈষ্ণব সাধনার পরকীয়াতত্ত্ব রবীন্দ্রনাথের কবি-চেতনায় যে রূপান্তর ঘটায়, তার রূপ লক্ষ করা যায় শেষের কবিতা উপন্যাসে।”
এই উপন্যাসটি শেষ হয় কবিতার মাধ্যমে—“কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও”—যা এক গভীর দার্শনিক আবেদন বহন করে।
• রবীন্দ্রনাথের অন্যান্য সাহিত্যকর্ম:
-
বলাকা (১৯১৬): গতি ও চেতনার কাব্য হিসেবে পরিচিত; আধুনিকতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
-
ডাকঘর (১৯১২): একটি রূপকধর্মী নাটক, যা মানুষের মুক্তি ও পরিণতির গভীর ভাব প্রকাশ করে।
-
কালান্তর: তাঁর রচিত রাজনৈতিক ও দার্শনিক প্রবন্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকলন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৮৬১ সালের ৭ই মে (২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিশিষ্ট ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর পিতা ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সুরকার, দার্শনিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ ও সমাজচিন্তক।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্য ‘বনফুল’ প্রকাশিত হয়। ১৯১৩ সালে তিনি গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন—যা তাঁকে প্রথম এশীয় নোবেল বিজয়ী হিসেবে পরিচিত করে তোলে।
তিনি ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) জোড়াসাঁকোর নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসসমূহ
-
গোরা
-
শেষের কবিতা
-
ঘরে বাইরে
-
চোখের বালি
-
নৌকাডুবি
-
যোগাযোগ
-
রাজর্ষি
-
বউঠাকুরানীর হাট
-
দুই বোন
-
মালঞ্চ
-
চতুরঙ্গ
-
চার অধ্যায়
তথ্যসূত্র:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলাপিডিয়া
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – মাহবুবুল আলম

0
Updated: 2 months ago
স্বর্ণকুমারী দেবী রচিত প্রথম উপন্যাস কোনটি?
Created: 3 weeks ago
A
দীপনির্বাণ
B
নির্বাণদীপ
C
বিচিত্রা
D
বিদ্রোহ
স্বর্ণকুমারী দেবী:
-
তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভগ্নী।
-
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বাঙালি মহিলা ঔপন্যাসিক।
-
দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে মাসিক ভারতী পত্রিকার লেখক ও সম্পাদক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
-
তিনি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় বোন।
-
তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দীপনির্বাণ’।
-
তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হলো ‘কাহাকে’ (১৮৯৮), যা ইংরেজিতে The Unfinished Song নামে অনূদিত হয়েছে।
তাঁর রচিত উপন্যাসসমূহ:
-
দীপনির্বাণ
-
মেবার রাজ
-
মালতী
-
বিদ্রোহ
-
বিচিত্রা
-
স্বপ্নবাণী
-
মিলনরাত্রি
তাঁর কাব্যগ্রন্থ:
-
গাঁথা
-
কবিতা ও গান
তাঁর নাটক:
-
বসন্ত উৎসব
-
দেব কৌতুক
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা।

0
Updated: 3 weeks ago
নাটকে ‘গৈরিশ ছন্দের’ প্রবর্তন করেন কে?
Created: 3 weeks ago
A
রামায়ণ তর্করত্ন
B
গোবিন্দচন্দ্র দাস
C
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
D
গিরিশচন্দ্র সেন
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
-
গিরিশচন্দ্র ঘোষ (১৮৪৪–১৯১২) বাংলা নাটকের সমৃদ্ধি সাধনে অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
-
যশস্বী অভিনেতা এবং প্রতিভাশালী নাট্যকার—এই যুগ্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে তিনি পচাঁত্তরখানি সমাপ্ত নাটক এবং চারখানি অসমাপ্ত প্রহসন রচনা করেছেন।
-
তাঁর প্রধান ও সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠা হলো ‘নটগুরু’ হিসেবে।
-
গিরিশচন্দ্র ঘোষের নাটকগুলিতে তিনি নিজে উদ্ভাবিত ‘গৈরিশ ছন্দ’ ব্যবহার করেছেন, যা যথেষ্ট সার্থকতা অর্জন করেছে। এর উদ্দেশ্য ছিল অভিনয়ে উপযোগী ভাষা সৃষ্টি।
-
এই ছন্দের প্রভাব পরবর্তীকালের নাট্যকারদের ওপরও লক্ষণীয়। ভক্তিমূলক পৌরাণিক নাটকের ক্ষেত্রেও তাঁর প্রভাব অস্বীকার্য।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম

0
Updated: 3 weeks ago
প্রদীপ নিবিয়া গেল!'-এ বিখ্যাত বর্ণনা কোন উপন্যাসের?
Created: 2 weeks ago
A
বঙ্কিমচন্দ্রের 'বিষবৃক্ষ
B
রবীন্দ্রনাথের 'চোখের বালি'
C
বঙ্কিমচন্দ্রের কপালকুণ্ডলা
D
রবীন্দ্রনাথের ‘যোগাযোগ’
‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাস
-
প্রকাশকাল ও বৈশিষ্ট্য:
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’ প্রকাশিত হয় ১৮৬৬ সালে। রহস্যময় আবহ ও গভীর ভাবসম্প্রক্তির কারণে একে রোমান্সধর্মী উপন্যাস বলা হয়। -
কাহিনি সংক্ষেপ:
অরণ্যে এক কাপালিকের আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা কন্যা কপালকুণ্ডলা। সমাজজীবন ও সংস্কারের সঙ্গে অপরিচিত এই কন্যার সঙ্গে নবকুমারের বিবাহকে কেন্দ্র করেই কাহিনি গড়ে ওঠে। কিন্তু সমাজজীবনের সঙ্গে কপালকুণ্ডলার অমিল ও দ্বন্দ্বই গল্পকে নিয়ে যায় করুণ পরিণতির দিকে। -
উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য:
কাহিনিতে একদিকে আছে সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলের আগ্রার স্থাপত্য ও নগরজীবন, অন্যদিকে অরণ্য ও সমুদ্রের রহস্যময় পরিবেশ। প্রকৃতির সৌন্দর্য, কপালকুণ্ডলার রহস্যময় চরিত্র, এবং ট্র্যাজিক সমাপ্তিই এই উপন্যাসকে বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। -
জনপ্রিয়তা:
বঙ্কিমচন্দ্র জীবিত থাকতেই এ উপন্যাসের আটবার সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল। অনেক সমালোচকের মতে, এটি তাঁর সেরা উপন্যাসগুলির একটি। -
উল্লেখযোগ্য চরিত্র:
-
কপালকুণ্ডলা
-
নবকুমার
-
কাপালিক
-
-
বিখ্যাত উক্তি:
-
“পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ।” — কপালকুণ্ডলার নবকুমারকে উদ্দেশ্য করে বলা সংলাপ।
-
“তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন?”
-
“প্রদীপ নিবিয়া গেল।”
-
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কপালকুণ্ডলা উপন্যাস।

0
Updated: 2 weeks ago