অপরাধ হলো সমাজ বা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠিত রীতি-নীতি ও আইনবিরোধী আচরণ, যা সমাজ কর্তৃক অনুমোদিত নয় এবং নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধবিজ্ঞানীরা অপরাধকে পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন, প্রতিটির বৈশিষ্ট্য আলাদা।
-
কিশোর অপরাধ (Juvenile delinquency): ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে বা মেয়ে কর্তৃক সংঘটিত অপরাধকে কিশোর অপরাধ বলা হয়। কিশোর-কিশোরীর অপরিণত মানসিকতা, পারিবারিক অবহেলা, পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাব ইত্যাদি এ ধরনের অপরাধের কারণ হতে পারে।
-
আত্মবিনাশ অপরাধ (Self-destroyed crime): যে অপরাধে অপরাধীর নিজের ক্ষতিই ঘটে তাকে আত্মবিনাশ অপরাধ বলা হয়। মাদকাসক্তি, ধূমপান, জুয়াখেলা, পতিতাবৃত্তি ইত্যাদি এর উদাহরণ। এসব অভ্যাস একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনকে ধ্বংস করে দেয়।
-
ভদ্রবেশী অপরাধ (White-collar crime): সাধারণত শিক্ষিত, পেশাজীবী ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা এ ধরনের অপরাধ করে থাকে। দায়িত্বে অবহেলা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আয়কর ফাঁকি, প্রতারণা, জালিয়াতি, তহবিল তছরূপ, মিথ্যা সাক্ষ্যদান, ট্রেডমার্ক বা বইয়ের পাণ্ডুলিপি চুরি ও নকল ভদ্রবেশী অপরাধের মধ্যে পড়ে। এ ধরনের অপরাধ সমাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলে, কারণ এগুলো প্রভাবশালী শ্রেণির মাধ্যমে সংঘটিত হয়।
-
সংগঠিত অপরাধ (Organized crime): এটি দলগত অপরাধ, যা পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট বা চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করে সংঘটিত হয়। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক মাফিয়াচক্র, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, মানব ও নারী পাচারকারী চক্র, মাদক ব্যবসায়ী, জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী এসব অপরাধে জড়িত থাকে। চোরাচালান, পতিতাবৃত্তি, সরকারি সেবা ক্ষেত্রেও (যেমন ভিসা-পাসপোর্ট, স্বাস্থ্যসেবা, ভূমি অফিস) সিন্ডিকেটভিত্তিক অপরাধ দেখা যায়।
-
ফৌজদারি অপরাধ (Criminal crime): এটি সরাসরি আইনের লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এতে ভুক্তভোগী ব্যক্তি, পরিবার বা গোষ্ঠী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন-জখম, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, রাহাজানি, সম্পত্তি আত্মসাৎ বা জবরদখল ইত্যাদি ফৌজদারি অপরাধের অন্তর্ভুক্ত।