A
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
সুকুমার সেন
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
মুহম্মদ এনামুল হক
উত্তরের বিবরণ
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান বাঙালি ব্যক্তিত্ব, যিনি ভারতের উপমহাদেশে দার্শনিক, শিক্ষক এবং বহুভাষাবিদ হিসেবে সুপরিচিত।
‘জ্ঞানতাপস’ নামে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এছাড়াও, তাঁকে ‘চলিষ্ণু অভিধান’ নামেও অভিহিত করা হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাতিসত্তা সম্পর্কে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিল, “আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার থেকেও অধিক সত্য আমরা বাঙালি।”
এই উক্তি বাঙালির ঐক্য ও পরিচয়ের গুরুত্বকে রূপায়িত করে। ১৯৫৯ সালে তিনি ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ নামক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন, যা বাংলা ভাষার ইতিহাস ও বিকাশকে তুলে ধরে।
ড. শহীদুল্লাহর ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ হলো—‘ভাষা ও সাহিত্য’, ‘বাঙ্গালা ব্যাকরণ’, ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ ইত্যাদি। পাশাপাশি তিনি বাংলা একাডেমির ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 weeks ago
লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতা কে?
Created: 1 week ago
A
আলাওল
B
কোরেশী মগন
C
দৌলত কাজী
D
সৈয়দ সুলতান
লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতা দৌলত কাজী
দৌলত কাজী ছিলেন মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একজন প্রসিদ্ধ কবি এবং তিনি লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতার মর্যাদা অর্জন করেছেন। ষোল শতকে তার সৃজনশীলতা বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।
তার প্রধান কাব্যগ্রন্থ হলো "সতীময়না ও লোরচন্দ্রানী," যা তিন খণ্ডে বিভক্ত। এই কাব্যে সামন্তপতি লোর ও অপর একটি সামন্তবধূ চন্দ্রানীর মধ্যে পরকীয়া প্রেমের গল্প মানবিক এবং সামাজিক জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরে মানব হৃদয়ের অনুভূতিকে স্পর্শ করে।
দৌলত কাজীর এই রচনা মধ্যযুগীয় সাহিত্যে মানব জীবনের বর্ণাঢ্য রস এবং সংবেদনশীলতা ফুটিয়ে তোলে।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম; বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 week ago
কোনটি রবীন্দ্রনাথের রচনা?
Created: 3 weeks ago
A
চতুরঙ্গ
B
চতুষ্কোণ
C
চতুর্দশী
D
চতুষ্পাঠী
চতুরঙ্গ উপন্যাস পরিচিতি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও শেষ উপন্যাস 'চতুরঙ্গ' প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৬ সালে। এটি সাধু ভাষায় রচিত হওয়ায় রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসগুলোর মধ্যে এর ভাষা ও ধরণ কিছুটা ভিন্ন এবং বিশেষভাবে সমালোচকদের মধ্যে বিভ্রান্তির কারণ হয়েছিল।
'চতুরঙ্গ' উপন্যাসের অধ্যায়গুলি প্রথমে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল ১৩২১ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত, মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘সবুজপত্র’-এ। তবে সেই সময় পাঠকরা উপন্যাসটির চারটি অংশকে আলাদা আলাদা গল্প ভেবে থাকতেন, কারণ প্রতিটি অধ্যায় আলাদা গল্পের শিরোনামে প্রকাশ পেতো।
উপন্যাসের চারটি প্রধান অংশ ও চরিত্র
উপন্যাসের নামের মতোই এর কাঠামো চতুরঙ্গ অর্থাৎ চারটি অংশে বিভক্ত:
-
জ্যাঠামশায়
-
শচীশ
-
দামিনী
-
শ্রীবিলাস
এই চারটি অংশের প্রতিটি চরিত্রই উপন্যাসের মূল চালিকাশক্তি। 'সবুজপত্র' পত্রিকায় যখন এই অধ্যায়গুলো প্রকাশ পেত, তখন পাঠকরা ভাবতেন আলাদা আলাদা গল্প পাচ্ছেন। তবে পরে জানা যায় এগুলো মূলত একই কাহিনীর বিভিন্ন দিক।
প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্য
-
‘চতুরঙ্গ’ নামক একটি সাহিত্য পত্রিকা ছিল, যা হুমায়ুন কবির সম্পাদনা করতেন।
-
অন্যদিকে, বাংলা সাহিত্যে 'চতুষ্কোণ' নামে একটি উপন্যাস রয়েছে, যা ১৯৪৮ সালে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত।
-
এছাড়াও, বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের ১৯৪৭ সালের কাব্যগ্রন্থ ‘চতুর্দশী’ বাংলায় উল্লেখযোগ্য।
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
-
'চতুরঙ্গ' — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

0
Updated: 3 weeks ago
'পদাবলী'র প্রথম কবি কে?
Created: 2 weeks ago
A
শ্রীচৈতন্য
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
জ্ঞানদাস
পুথি সাহিত্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত একটি বিশেষ ধারা, যেখানে আরবি, ফারসি, উর্দু ও হিন্দি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়। এই সাহিত্যের বিকাশ ঘটে মূলত আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এবং এর রচয়িতা ও পাঠকগোষ্ঠী প্রধানত ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
‘পুথি’ শব্দটি এসেছে ‘পুস্তিকা’ থেকে, যা সাধারণভাবে যেকোনো গ্রন্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হলেও, এখানে এটি নির্দিষ্ট একটি সাহিত্যধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলা সাহিত্যের এক নির্দিষ্ট সময়ে, ভিন্ন ভাষার প্রভাব মিশিয়ে রচিত সাহিত্যকেই আমরা পুথি সাহিত্য নামে চিনি।
এই ধারার সূচনা করেন হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনুমানিক ১৬৮০–১৭৭০)। তাঁর রচিত আমীর হামজা কাব্যটি যুদ্ধ ও কাহিনিনির্ভর সাহিত্যের একটি দৃষ্টান্ত, যেখানে আরব বিশ্বের ইতিহাস ও পুরাণের ছাপ রয়েছে।
মধ্যযুগের প্রচলিত বাংলা সাহিত্যের ভাষার তুলনায় পুথি সাহিত্যের ভাষা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এতে বাংলা শব্দের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আরবি, ফারসি ও অন্যান্য বিদেশি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই সাহিত্যধারায় প্রায় ৩২% শব্দ ছিল বিদেশি উৎসের। ধারণা করা হয়, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা ও ২৪ পরগনার মুসলমানদের কথ্যভাষাই এর মূল ভিত্তি ছিল।
গরীবুল্লাহ ও তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এই ভাষারীতিতে আরও কয়েকটি কাব্য রচনা করেন এবং তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করে বহু মুসলমান কবি এই ধারা অনুসরণ করে সাহিত্য রচনা করেন। এসব সাহিত্যকর্মের পাঠক সাধারণত সমাজের সকল স্তরের মুসলমান ছিলেন, তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর প্রচলন ছিল সবচেয়ে বেশি।
এই সাহিত্যের ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। রেভারেন্ড জেমস লং এই ভাষাকে ‘মুসলমানী বাংলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং এই ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
এছাড়া, কলকাতার বটতলার ছাপাখানায় এগুলোর ব্যাপক মুদ্রণ ও প্রচার হওয়ায় এগুলিকে ‘বটতলার পুথি’ নামেও ডাকা হয়। গবেষকদের মতে, ভাষা ও বাক্যগঠনের দিক থেকে এ সাহিত্যকে প্রাথমিকভাবে ‘দোভাষী পুথি’ এবং পরবর্তীতে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 weeks ago