নীতিশাস্ত্রে সততা বলতে কী বোঝায়?
A
জন্মগত গুণ
B
চরিত্রের স্থায়ী প্রবণতা
C
সামাজিক নিয়ম
D
মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি
উত্তরের বিবরণ
সততা নীতিশাস্ত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি মানুষের চরিত্রের এক স্থায়ী প্রবণতা, যা জন্মগত নয় বরং অর্জিত। মানুষ কর্তব্য পালনের অভ্যাসের মাধ্যমে সততাকে নিজের মধ্যে গড়ে তোলে এবং সেই অভ্যাসই তাকে প্রকৃত অর্থে সৎ করে তোলে।
-
সততা স্বভাবজাত নয়, অর্জিত প্রবণতা।
-
কর্তব্য পালনের অভ্যাস থেকেই সততার জন্ম হয়।
-
এরিস্টটল মনে করেন, সততা হলো মনের স্থায়ী অবস্থা যা ইচ্ছার দ্বারা গঠিত এবং এর ভিত্তি হলো বাস্তব জীবনের সর্বোৎকৃষ্ট আদর্শ, যা বিচারবুদ্ধি দ্বারা নির্ধারিত।
-
নৈতিক আদর্শ মেনে সঠিক কাজ নির্বাচন ও সম্পাদনের মাধ্যমে সততার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
-
কোন মানুষ জন্মগতভাবে সৎ নয়, বরং ভালো কাজের মাধ্যমে সৎ অভ্যাস অর্জন করলে তাকে সৎলোক বলা যায়।
-
যখন মানুষ নিজের কামনা, বাসনা ও প্রবৃত্তিকে বিচারবুদ্ধি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন সে চরিত্রবান বলে পরিচিত হয়।
-
ম্যাকেনজীর মতে, সততা হলো চরিত্রের সৎ অভ্যাস, যা কর্তব্য থেকে ভিন্ন।
-
কর্তব্য বলতে বোঝানো হয় এমন বিশেষ ধরনের কাজ, যা আমাদের অবশ্যই সম্পাদন করা উচিত।

0
Updated: 1 day ago
'আইন হল পক্ষপাতহীন যুক্তি'-উক্তিটি কে করেছেন?
Created: 1 day ago
A
এ্যারিস্টটল
B
জন অস্টিন
C
হল্যান্ড
D
হেনরি মেইন
আইনের প্রামাণ্য সংজ্ঞা বিভিন্ন দার্শনিক, আইনবিদ ও চিন্তাবিদের ব্যাখ্যায় ভিন্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তবে প্রত্যেকেই আইনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
-
গ্রিক দার্শনিক এ্যারিস্টটল মনে করেন, “আইন হল পক্ষপাতহীন যুক্তি।” অর্থাৎ আইন ব্যক্তিগত স্বার্থ বা আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, বরং নিরপেক্ষ যুক্তি ও ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
-
আইনবিদ জন অস্টিন এর মতে, “সার্বভৌম শক্তির আদেশই আইন।” তাঁর দৃষ্টিতে আইন হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বা শাসকের নির্দেশ, যা অমান্য করলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।
-
অধ্যাপক হল্যান্ড আইনকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে— “আইন হল মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের এমন কতগুলো সাধারণ নিয়ম যা সার্বভৌম রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দ্বারা প্রযুক্ত হয়।” অর্থাৎ আইন মানুষের সমাজজীবনের কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করার জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতা দ্বারা প্রয়োগিত নিয়ম।
-
স্যার হেনরি মেইন এর মতে, “আইন হল পরিবর্তনশীল, ক্রমউন্নতিমূলক, ক্রমবর্ধমান ও দীর্ঘকালীন সামাজিক প্রথার গতির ফল।” তাঁর দৃষ্টিতে আইন স্থির নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে সময়ের প্রয়োজনে গড়ে ওঠে ও বিকশিত হয়।
-
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন আইনের একটি সার্বজনীন ও উৎকৃষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করেন। তাঁর মতে, “আইন হল সমাজের সে সব সুপ্রতিষ্ঠিত প্রথা ও রীতিনীতি যেগুলো সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত ও রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত বিধিতে পরিণত হয়েছে এবং যাদের পিছনে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের সুস্পষ্ট সমর্থন রয়েছে।” অর্থাৎ আইন কেবল রাষ্ট্রীয় বিধি নয়, বরং সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সমর্থিত প্রথা ও রীতিনীতির পরিণতি।

0
Updated: 1 day ago
ক্ষমতায় 'স্বতন্ত্রীকরণ নীতির' প্রবক্তা কে?
Created: 1 day ago
A
টি, এইচ, গ্রীন
B
জন স্টুয়ার্ট মিল
C
মন্টেস্কু
D
হেগেল
ক্ষমতায় স্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রথম প্রতিষ্ঠিত ধারণা চার্লস মন্টেস্কুর নামে জড়িত। এই নীতির মূল ধারণা হলো রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষমতা এক ব্যক্তির বা এক সংস্থার হাতে集中 না করে পৃথকভাবে বিতরণ করা, যাতে এক বিভাগ অন্য বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করতে না পারে।
-
প্রত্যেক রাষ্ট্রের সরকার সাধারণত তিনটি বিভাগে বিভক্ত: আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ, এবং বিচার বিভাগ।
-
আইন বিভাগ আইন প্রণয়ন করে, শাসন বিভাগ আইন অনুযায়ী শাসন করে, এবং বিচার বিভাগ আইন লঙ্ঘনকারীর বিচার করে শাস্তি প্রদান করে।
-
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বোঝায় যে আইন প্রণয়ন, শাসন এবং বিচার ক্ষমতা পৃথক ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্ঠীর হাতে রাখা।
-
এরিস্টটলও ক্ষমতার বণ্টনের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি সরকারের কাজকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন: (ক) আলোচনামূলক, (খ) শাসন সম্পর্কিত, (গ) বিচার বিষয়ক। একত্রিত হলে প্রশাসনের দক্ষতা হ্রাস পায়।
-
চার্লস মন্টেস্কু ১৭৪৮ সালে তার The Spirit of Laws গ্রন্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির আধুনিক ব্যাখ্যা দেন।
-
মন্টেস্কুর মতে, প্রত্যেক সরকারের তিন ধরনের ক্ষমতা—আইন প্রণয়ন, শাসন ও বিচার—এক হাতে বা এক ব্যক্তিগোষ্ঠীর হাতে একত্রিত হলে ব্যক্তি স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখীন হয়।

0
Updated: 1 day ago
'স্বাধীনতা ও সাম্য পরস্পর সম্পূরক' উক্তিটি কে করেছেন?
Created: 1 day ago
A
লর্ড এ্যাকটন
B
অধ্যাপক ডাইসি
C
অধ্যাপক লাস্কি
D
জি, ডি, এইচ, কোল
সাম্য ও স্বাধীনতার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দুটি প্রধান মতবাদ প্রচলিত আছে। কিছু মতবাদ মনে করে এই দুইটি পরস্পর বিরোধী, আবার কিছু মতবাদ মনে করে এগুলো পরস্পর সম্পূরক।
-
স্বাধীনতা ও সাম্য পরস্পর বিরোধী:
-
এই মতবাদে ধরা হয় যে একটির উপস্থিতি অপরটির মৃত্যু ঘটায়।
-
লর্ড এ্যাকটন (Lord Acton) এই মতের প্রবক্তা। তিনি বলেন, সাম্য ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।
-
এ মতবাদে স্বাধীনতার অর্থ দাঁড়ায় নিয়ন্ত্রণবিহীন স্বাধীনতা যা প্রকৃতিতে স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর।
-
সাম্য এখানে বোঝায় সুযোগের সমতা, তবে বাস্তবে সকল মানুষ সমান নয়।
-
এই দৃষ্টিভঙ্গি সমালোচিত কারণ এটি স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থকে বিকৃত করে।
-
-
স্বাধীনতা ও সাম্য পরস্পর সম্পূরক:
-
এই মতবাদে দেখা যায় যে সাম্য ও স্বাধীনতা পরস্পর বিরোধী নয় বরং একে অপরের সহায়ক।
-
স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ হলো অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে নিজের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করার ক্ষমতা।
-
সাম্য ছাড়া স্বাধীনতা কার্যকর হতে পারে না; অসাম্য স্বাধীনতার অন্তরায় এবং তার ধ্বংসকারী।
-
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠিত না হলে নাগরিক স্বাধীনতা বিনষ্ট হয়।
-
এই মতের প্রবক্তা হলেন জি. ডি. এইচ. কোল (G. D. H. Cole) ও আর. এইচ. টনী (R. H. Tawny)। তারা মনে করেন, সাম্যের উপস্থিতি স্বাধীনতার জন্য অপরিহার্য।
-
হার্বার্ট এ. ডীন (Herbert A. Deane) বলেন, "স্বাধীনতা ও সাম্য একে অপরের বিরোধী নয়, বরং একই আদর্শের ভিন্ন দিক।"
-
আধুনিক গণতান্ত্রিক সমাজে এই ধারণা এক গুরুত্বপূর্ণ সত্য হিসেবে বিবেচিত।
-

0
Updated: 1 day ago