বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে কোনটি পরিচিত?
A
গীতাঞ্জলি
B
বৈষ্ণব পদাবলি
C
মঙ্গলকাব্য
D
চর্যাপদ
উত্তরের বিবরণ
মঙ্গলকাব্য মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা, যা দেবমাহাত্ম্যমূলক সমাজচিত্রভিত্তিক কাহিনীর মাধ্যমে গঠিত। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে পরিচিত। বিশ্বাস করা হতো যে, এই কাব্য পাঠ বা শ্রবণ করলে সকল প্রকার অকল্যাণ দূর হয় এবং সর্ববিধ মঙ্গল লাভ হয়। সেই ধারণা থেকেই এ কাব্যের নামকরণ হয়েছে মঙ্গলকাব্য।
মঙ্গলকাব্যের প্রধান দেবতারা হলেন—
-
মনসা
-
চণ্ডী
-
ধর্মঠাকুর
এদের মধ্যে বিশেষভাবে মনসা ও চণ্ডী দেবীর প্রাধান্য বেশি। এই দেবতাদের কেন্দ্র করে মঙ্গলকাব্যের তিনটি প্রধান ধারা গড়ে উঠেছে—
-
মনসামঙ্গল
-
চণ্ডীমঙ্গল
-
ধর্মমঙ্গল
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
'আনন্দমঠ' উপন্যাসের লেখক কে?
Created: 3 months ago
A
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
B
তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়
C
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
D
আনন্দমোহন বাগচী
‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস
-
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৮৮২ সালে।
-
এই উপন্যাসের পটভূমি ১৭৭০ সালের ছিয়াত্তরের মন্বন্তর এবং সন্ন্যাসী বিদ্রোহ।
-
মূল বিষয়: দেশভক্তি, জাতিপ্রেম ও হিন্দুধর্মে বিশ্বাস।
-
এখানে ‘স্বদেশ’ বলতে বোঝানো হয়েছে বঙ্গভূমিকে এবং ‘ধর্ম’ বলতে বোঝানো হয়েছে হিন্দু ধর্মকে।
-
উপন্যাসে উল্লেখিত ‘বন্দে মাতরম্’ গানটি ইংরেজবিরোধী আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হয়ে ওঠে।
-
এটি ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়, তবে এর ঘটনা কল্পিত হলেও বিশ্বাসযোগ্য এবং চরিত্রগুলো আদর্শায়িত।
-
গ্রামীণ জীবনের চিত্র ও মন্বন্তরের বর্ণনা বাস্তবধর্মী।
-
কাহিনিতে প্রেম ও আদর্শের সংঘাত উপন্যাসকে গভীরতা দিয়েছে।
-
‘বন্দে মাতরম্’ গানটি পরে became একটি উদ্দীপক দেশাত্মবোধক স্লোগান।
-
উপন্যাসটির ইংরেজি অনুবাদ করেন:
-
নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত (The Abbey of Bliss, 1907)
-
শ্রী অরবিন্দ (Ananda Math, 1910)
-
-
এটি একটি বাস্তবধর্মী রোমান্টিক উপন্যাস।
-
এই রচনায় বঙ্কিমচন্দ্রের স্বসম্প্রদায়প্রীতি বা নিজের ধর্ম ও জাতির প্রতি পক্ষপাত লক্ষ্য করা যায়।
● বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
-
তিনি ছিলেন একজন ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক এবং বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ।
-
জন্ম: ১৮৩৮ সাল, চব্বিশ পরগনার কাঁঠালপাড়া গ্রামে।
-
তাঁকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়।
-
তাঁর প্রথম উপন্যাস: Rajmohan’s Wife (ইংরেজিতে লেখা)।
-
প্রথম সার্থক বাংলা উপন্যাস: দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫)।
-
প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)।
-
দ্বিতীয় বাংলা উপন্যাস: কপালকুণ্ডলা (১৮৬৬)।
-
তাঁর রচিত বিখ্যাত ত্রয়ী উপন্যাস: আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী, ও সীতারাম।
● বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসসমূহ
-
দুর্গেশনন্দিনী
-
কপালকুণ্ডলা
-
মৃণালিনী
-
বিষবৃক্ষ
-
ইন্দিরা
-
যুগলাঙ্গুরীয়
-
চন্দ্রশেখর
-
রাধারানী
-
রজনী
-
কৃষ্ণকান্তের উইল
-
রাজসিংহ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'শেষের কবিতা' কি জাতীয় রচনা?
Created: 2 weeks ago
A
কাব্যগ্রন্থ
B
নাটক
C
উপন্যাস
D
গল্প সংকলন
‘শেষের কবিতা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অনন্য সৃষ্টিকর্ম, যা তাঁর সাহিত্য জীবনে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এটি কাব্যিক ভাষায় রচিত হলেও প্রকৃত অর্থে এটি একটি উপন্যাস, যেখানে প্রেম, ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং মানসিক দ্বন্দ্বের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ ঘটেছে। উপন্যাসটির মূল আকর্ষণ এর দার্শনিক ভাবনা ও গভীর মানবিক আবেগের মিশ্রণ।
উপন্যাসটি সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো—
-
রচনাপ্রকার: ‘শেষের কবিতা’ একটি উপন্যাস। যদিও এতে কবিত্বময় ভাষা ও ছন্দময় বর্ণনা বিদ্যমান, কিন্তু মূল কাঠামো ও বিষয়বস্তুর কারণে এটি উপন্যাসের অন্তর্ভুক্ত।
-
লেখক: এটি রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করেছেন তাঁর অসামান্য সৃষ্টিশীলতা ও দার্শনিক চিন্তাধারার মাধ্যমে।
-
প্রকাশকাল: উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে, যা রবীন্দ্রনাথের পরিণত বয়সের এক প্রতিফলন।
-
প্রধান চরিত্রসমূহ: লাবণ্য, অমিত ও কেতকীর ত্রিকোণ সম্পর্ক উপন্যাসটির মূল আবর্তন। এই তিনজনের চিন্তা, অনুভূতি ও সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে সমাজ, প্রেম এবং ব্যক্তিত্বের সংঘাত ফুটে উঠেছে।
-
প্রেমের দার্শনিকতা: এতে প্রেমকে শুধু রোমান্টিক অনুভূতি হিসেবে নয়, বরং বুদ্ধি ও আত্মসম্মানের সঙ্গে সম্পর্কিত এক জটিল মানসিক অবস্থারূপে উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
ভাষার ব্যবহার: উপন্যাসটি কাব্যময়, বুদ্ধিদীপ্ত ও দার্শনিক আলোচনায় পরিপূর্ণ। কথোপকথনের মধ্যে কবিত্ব ও রসবোধের মিশ্রণ একে অন্যরকম সৌন্দর্য দিয়েছে।
-
প্রেক্ষাপট: গল্পের বেশিরভাগ অংশ ঘটেছে শিলঙে, যা প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে চরিত্রদের মনোজগতের মিল খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।
-
মূল ভাবধারা: মানবজীবনের দ্বন্দ্ব, প্রেমে আত্মসম্মান ও স্বাধীনতার গুরুত্ব, এবং সমাজের প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা—এসবই উপন্যাসটির মূলে নিহিত।
-
সাহিত্যিক গুরুত্ব: ‘শেষের কবিতা’ বাংলা উপন্যাসের ধারায় নতুনত্ব এনে দিয়েছে। এখানে সংলাপ ও মনস্তত্ত্বের যে সূক্ষ্ম প্রয়োগ দেখা যায়, তা পরবর্তীকালে বাংলা কথাসাহিত্যের রূপ পরিবর্তনে সহায়ক হয়েছে।
সব মিলিয়ে, ‘শেষের কবিতা’ একটি উপন্যাস, যেখানে কাব্যের সৌন্দর্য ও দার্শনিক গভীরতার সমন্বয়ে রবীন্দ্রনাথ এক অনন্য সাহিত্যরূপ সৃষ্টি করেছেন। এটি শুধু প্রেমকাহিনি নয়, বরং চিন্তা, আত্মোপলব্ধি ও মানবসম্পর্কের এক অনন্য প্রতিচ্ছবি।
0
Updated: 2 weeks ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত মৌলিক গ্রন্থ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
সীতার বনবাস
B
অল্প হইল
C
শকুন্তলা
D
ব্রজবিলাস
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ এবং সমাজসংস্কারক। তিনি জনহিতৈষী চিন্তাধারার অধিকারী এবং বাংলা গদ্যের জনক হিসেবে সুপরিচিত।
-
জন্ম ও মৃত্যু: ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন; ২৯ জুলাই, ১৮৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
-
পদবি ও স্বাক্ষর: পৈতৃক পদবি বন্দ্যোপাধ্যায়; স্বাক্ষর করতেন 'ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা' নামে।
-
উপাধি: ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ তাঁকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
-
ভাষা ও সাহিত্য: বাংলা গদ্যের প্রবর্তক; প্রথম যতি বা বিরামচিহ্ন স্থাপন করেন।
-
প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ: 'বেতাল পঞ্চবিংশতি'।
-
বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক গদ্য রচনা: 'প্রভাবতী সম্ভাষণ'।
-
ব্যাকরণ গ্রন্থ: 'ব্যাকরণ কৌমুদী'।
বিখ্যাত গ্রন্থ:
-
শকুন্তলা
-
সীতার বনবাস
-
ভ্রান্তিবিলাস
মৌলিক রচনা:
-
অতি অল্প হইল
-
আবার অতি অল্প হইল
-
ব্রজবিলাস
-
বিধবা বিবাহ ও যশোরের হিন্দু ধর্মরক্ষিণী সভা
-
রত্ন পরীক্ষা
শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
-
আখ্যান মঞ্জরী
-
বোধোদয়
-
বর্ণপরিচয়
-
কথামালা
0
Updated: 1 month ago