বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে কোনটি পরিচিত?
A
গীতাঞ্জলি
B
বৈষ্ণব পদাবলি
C
মঙ্গলকাব্য
D
চর্যাপদ
উত্তরের বিবরণ
মঙ্গলকাব্য মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা, যা দেবমাহাত্ম্যমূলক সমাজচিত্রভিত্তিক কাহিনীর মাধ্যমে গঠিত। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য হিসেবে পরিচিত। বিশ্বাস করা হতো যে, এই কাব্য পাঠ বা শ্রবণ করলে সকল প্রকার অকল্যাণ দূর হয় এবং সর্ববিধ মঙ্গল লাভ হয়। সেই ধারণা থেকেই এ কাব্যের নামকরণ হয়েছে মঙ্গলকাব্য।
মঙ্গলকাব্যের প্রধান দেবতারা হলেন—
-
মনসা
-
চণ্ডী
-
ধর্মঠাকুর
এদের মধ্যে বিশেষভাবে মনসা ও চণ্ডী দেবীর প্রাধান্য বেশি। এই দেবতাদের কেন্দ্র করে মঙ্গলকাব্যের তিনটি প্রধান ধারা গড়ে উঠেছে—
-
মনসামঙ্গল
-
চণ্ডীমঙ্গল
-
ধর্মমঙ্গল
উৎস:

0
Updated: 12 hours ago
'আনোয়ারা' উপন্যাসের রচয়িতার নাম-
Created: 1 week ago
A
সৈয়দ মুজতবা আলী
B
কাজী আবদুল ওদুদ
C
নজিবর রহমান
D
রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন
'আনোয়ারা' হলো মোহাম্মদ নজিবর রহমানের রচিত একটি কালজয়ী সামাজিক উপন্যাস যা বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এটি তার প্রথম ও সবচেয়ে সার্থক উপন্যাস হিসেবে পরিচিত এবং উপন্যাসে ধর্ম ও সত্যের জয়, অধর্মের পরাজয় এবং আনোয়ারার স্বামীনিষ্ঠার বিষয় প্রধানভাবে ফুটে উঠেছে।
-
প্রকাশের সাল ও স্থান: ১৯১৪ সালের ১৫ জুলাই (১৩২১ বঙ্গাব্দে) কলকাতা থেকে প্রথম প্রকাশিত।
-
প্রতিপাদ্য: ধর্ম ও সত্যের জয়, অধর্মের পরাজয়, আনোয়ারার স্বামীনিষ্ঠা।
-
মূল চরিত্র: আনোয়ারা, নুরুল এসলাম, খাদেম, আজিমুল্লাহ, গোলাপজান।
-
লেখকের অন্যান্য রচনা:
-
চাঁদতারা বা হাসান গঙ্গা বাহমনি (১৯১৭)
-
পরিণাম (১৯১৮)
-
গরীবের মেয়ে (১৯২৩)
-
দুনিয়া আর চাই না (১৯২৪)
-

0
Updated: 1 week ago
কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস কোনটি?
Created: 4 months ago
A
নন্দিত নরকে
B
এই সব দিনরাত্রি
C
জোছনা ও জননীর গল্প
D
আগুনের পরশমণি
• হুমায়ূন আহমেদের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস- নন্দিত নরকে (১৯৭২)।
• হুমায়ূন আহমেদ:
- হুমায়ূন আহমেদের জন্ম ১৯৪৮ সালে নেত্রকোনা জেলা।
- তিনি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার, শিক্ষক ছিলেন।
- তাঁর প্রথম ছবি আগুনের পরশমণি (১৯৯৫) এবং শেষ ছবি ঘেটুপুত্র কমলা (২০১২)
- তিনি ২০১২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
• হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস:
- আগুনের পরশমণি,
- অনিল বাগচীর একদিন,
- শ্যামল ছায়া,
- জোছনা ও জননীর গল্প,
- ১৯৭১ ইত্যাদি।
• তাঁর রচিত অন্যান্য উপন্যাস:
- এই সব দিনরাত্রি,
- আমার আছে জল,
- নক্ষত্রের রাত,
- ফেরা,
- বহুব্রীহি,
- গৌরীপুর জংশন,
- শ্রাবণ মেঘের দিন,
- দুই দুয়ারী,
- কোথাও কেউ নেই,
- বৃষ্টি বিলাস,
- বাদশাহ নামদার,
- মেঘের ওপর বাড়ি ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 4 months ago
'বিষাদ-সিন্ধু' কার রচনা?
Created: 2 months ago
A
কায়কোবাদ
B
মীর মশাররফ হোসেন
C
মোজাম্মেল হক
D
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
বিষাদ-সিন্ধু’ (১৮৮৫–১৮৯১) হলো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস আশ্রিত এক অনন্য উপন্যাস, যা লেখক মীর মশাররফ হোসেনকে অসামান্য খ্যাতির আসনে অধিষ্ঠিত করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে হাসান ও হোসেনের শাহাদাতের করুণ কাহিনি, দামেস্ক শাসক মাবিয়ার পুত্র এজিদের রক্তপিপাসু চরিত্র এবং জয়নাবের রূপে মোহিত হয়ে বহু মানুষের ধ্বংসযজ্ঞ—সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবিক আবেগের এক বিস্ময়কর মহাগাঁথা।
তবে ইতিহাসের প্রতি অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং তা থেকে শিল্পসাহিত্যের উপযোগী বেছে নেওয়া কৌশল এই উপন্যাসকে করেছে স্বকীয়। গ্রন্থটি তিনটি পর্বে বিভক্ত:
-
মহরম পর্ব্ব (১৮৮৫)
-
উদ্ধার পর্ব্ব (১৮৮৭)
-
এজিদ-বধ পর্ব্ব (১৮৯১)
এই তিনটি পর্বে রয়েছে মোট ৬৩টি 'প্রবাহ' বা অধ্যায়—যার মধ্যে মহরম পর্বে ২৬টি প্রবাহসহ উপক্রমণিকা, উদ্ধার পর্বে ৩০টি প্রবাহ, এবং এজিদ-বধ পর্বে ৫টি প্রবাহ ও উপসংহার অংশ রয়েছে।
এই উপন্যাসের জনপ্রিয়তার পেছনে মূলত দুটি প্রধান কারণ:
-
ইসলাম ধর্মঘটিত স্পর্শকাতর কাহিনি, যা মুসলিম পাঠকের হৃদয়ে গভীর আবেদন সৃষ্টি করে।
-
সাহিত্যিক গুণ ও শৈলী, যা জ্ঞানপিপাসু ও রসিক পাঠকের কাছে এটিকে একটি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মে পরিণত করেছে।
এখানে মাইকেল মধুসূদনের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ থেকে অনুপ্রাণিত অ্যান্টি-এস্টাব্লিশমেন্ট চেতনার প্রতিফলনও লক্ষণীয়।
মীর মশাররফ হোসেন: পথিকৃৎ মুসলিম সাহিত্যিক
মীর মশাররফ হোসেন জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ সালে, কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে। তিনি ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক—বাংলা গদ্যসাহিত্যের বঙ্কিমযুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক এবং মুসলিম সমাজে সাহিত্যজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত।
ছাত্রজীবনেই ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’য় সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করে তিনি লেখালেখির সূচনা করেন। তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন ‘গ্রামবার্তা’র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ।
তিনি ‘গাজী মিয়াঁ’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। সম্পাদনা করেছেন দুটি পত্রিকা—‘আজিজননেহার’ ও ‘হিতকরী’।
প্রথম রচনা:
-
‘রত্নবতী’ (১৮৬৯): এটি বাংলা ভাষায় কোনো মুসলিম লেখকের প্রথম গদ্যগ্রন্থ।
🎭 নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমিদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
গো-জীবন
এইভাবে মীর মশাররফ হোসেন তাঁর সাহিত্যসাধনায় যেমন ধর্ম ও ইতিহাসকে সৃজনশীল রূপে প্রকাশ করেছেন, তেমনি বাংলা গদ্যসাহিত্যের উন্নয়নে রেখেছেন অমোচনীয় অবদান।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago