বাংলা ভাষা নানা ভাষার শব্দে সমৃদ্ধ হয়েছে, যার মধ্যে আরবি ভাষা থেকে আগত শব্দের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এই শব্দগুলো মূলত ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতির মাধ্যমে বাংলায় প্রবেশ করেছে। “খবর” শব্দটি এমনই একটি শব্দ, যা আরবি উৎস থেকে এসেছে এবং আজকের বাংলা ভাষায় বহুল ব্যবহৃত।
-
“খবর” শব্দটির উৎস আরবি শব্দ “খবর” (خَبَر), যার অর্থ হলো সংবাদ, তথ্য বা বার্তা। পরে এটি ফারসি ও উর্দুর মাধ্যমে বাংলায় প্রবেশ করে।
-
বাংলায় “খবর” শব্দটি মূলত কোনো ঘটনা, সংবাদ বা তথ্য বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন— “আজকের খবর কী?”, “ওর কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না।”
-
এই শব্দটি বাংলায় শুধুমাত্র ধর্মীয় বা সাহিত্যিক পরিসরে নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের যোগাযোগ ও সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
আরবি ভাষা থেকে আগত অনেক শব্দ ইসলাম ধর্ম প্রচারের সময় বাংলায় প্রবেশ করে, যখন আরব বণিক ও সুফি-সন্তরা এ অঞ্চলে আসেন।
-
“খবর” ছাড়াও বাংলায় ব্যবহৃত আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আরবি শব্দ হলো— “নামাজ”, “রোজা”, “আলেম”, “দুনিয়া”, “আখিরাত”, “হালাল” ও “হারাম”।
-
আরবি শব্দগুলো সাধারণত ধর্মীয় ও প্রশাসনিক বিষয়ে ব্যবহৃত হতো, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো বাংলার প্রাত্যহিক শব্দভান্ডারের অংশ হয়ে গেছে।
-
বাংলায় “খবর” শব্দটি কখনও সংবাদপত্র বা সাংবাদিকতার প্রতিশব্দ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। যেমন— “খবরের কাগজ” বা “খবরদাতা”।
-
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বাংলা ভাষা ফারসি, তুর্কি ও আরবি ভাষা থেকে শব্দ ধার করে তার শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। তবে আরবি শব্দগুলো প্রধানত ইসলামি সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল বলে ধর্মীয় ও সামাজিক যোগাযোগে এর প্রভাব বেশি দেখা যায়।
-
আরবি শব্দগুলো বাংলার উচ্চারণ ও রূপে কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে, যেমন “খবর” এর মূল আরবি উচ্চারণ “খাবার” হলেও বাংলায় তা “খবর” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
-
ভাষাতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে “খবর” শব্দটি বাংলায় সম্পূর্ণরূপে রূপান্তরিত ও স্থানীয়কৃত হয়েছে, যা বাংলাভাষার অভিযোজনক্ষমতা ও সমৃদ্ধির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
অতএব, প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে “খবর”-ই একমাত্র আরবি থেকে আগত শব্দ, যা আজও বাংলা ভাষায় জীবন্ত ও বহুল ব্যবহৃত।