কোন মঙ্গলকাব্যে চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যিক অভিযান ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনধারা বর্ণিত হয়েছে?
A
ধর্মমঙ্গল
B
চণ্ডীমঙ্গল
C
কালিকামঙ্গল
D
মনসামঙ্গল
উত্তরের বিবরণ
• সঠিক উত্তর: ঘ) মনসামঙ্গল
মঙ্গলকাব্য ও মনসামঙ্গল সম্পর্কিত আলোচনা:
-
মঙ্গলকাব্য বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা, যা মধ্যযুগে (প্রায় ১৩শ থেকে ১৮শ শতাব্দী) রচিত হয়।
-
এই কাব্যগুলো সাধারণত দেব-দেবীর গুণকীর্তন ও পূজার প্রচারের উদ্দেশ্যে রচিত হলেও এতে সমকালীন সমাজ, সংস্কৃতি, ও জীবনযাত্রার প্রতিফলন দেখা যায়।
মনসামঙ্গল কাব্য:
-
দেবী মনসার পূজা ও গুণকীর্তন নিয়ে রচিত।
-
কাব্যের প্রধান চরিত্র: চাঁদ সওদাগর, একজন ধনী বণিক, যিনি বাণিজ্যিক অভিযানের জন্য বিখ্যাত।
-
কাহিনী: চাঁদ সওদাগরের সমুদ্রযাত্রা, বাণিজ্য, মনসা দেবীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব, এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন ও ধর্মীয় বিরোধ।
-
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র: সাপের দেবী মনসা, বেহুলা, লখিন্দর, সনকা।
মনসামঙ্গল কাব্যের বিশেষত্ব:
-
চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যিক অভিযান: সমুদ্রযাত্রার বিপদ, সম্পদ, ও প্রভাবের বর্ণনা।
-
সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ: উচ্চবর্গ (বণিক), নিম্নস্তর (মাঝি, কৃষক), পারিবারিক জীবন, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব।
অন্য অপশন সংক্ষেপে:
-
ধর্মমঙ্গল: ধর্মঠাকুরের ভক্তি ও আধ্যাত্মিক বিষয়বস্তু; চাঁদ সওদাগর নেই।
-
চণ্ডীমঙ্গল: দেবী চণ্ডীর পূজা ও গুণকীর্তন; কালকেতু ও ফুল্লরার গল্প প্রধান।
-
কালিকামঙ্গল: দেবী কালির মাহাত্ম্য বর্ণনা; চাঁদ সওদাগর চরিত্র নয়।
0
Updated: 1 month ago
মঙ্গলকাব্যের কবি নন কে?
Created: 3 months ago
A
কানাহরি দত্ত
B
মানিক দত্ত
C
ভারতচন্দ্র
D
দাশু রায়
দাশরথি রায় ও তাঁর সাহিত্য
-
দাশরথি রায় (১৮০৬–১৮৫৭) একজন স্বভাবকবি এবং পাঁচালিকার (গীতিকাব্যকার)।
-
তিনি সাধারণত ‘দাশু রায়’ নামেও পরিচিত।
-
তাঁর পাঁচালিকাব্যে শুধু ধর্ম ও ভক্তির কথা ছিল না, তিনি তাতে ছন্দের ঝংকার, অনুপ্রাস, হাস্যরস, গান ও সুর মিশিয়ে এক আকর্ষণীয় রূপ দিয়েছিলেন।
-
তাঁর এই বিশেষ ধরনের পাঁচালিই পরিচিত ‘দাশুরায়ের পাঁচালি’ নামে।
-
তাঁর গানগুলো সাধারণত সুরে রচিত এবং টপ্পা ঘরানার গানেও এর প্রভাব আছে।
-
এই ধারার পূর্বসূরি কবিদের মধ্যে গঙ্গানারায়ণ নস্কর অন্যতম।
তাই, দাশরথি রায় ছিলেন পাঁচালিকবি, তিনি মঙ্গলকাব্যের কবি নন।
মঙ্গলকাব্য
-
মঙ্গলকাব্য হল এক ধরনের ধর্মভিত্তিক কাব্য, যেখানে দেব-দেবীর গুণগান করা হয়।
-
মানুষের বিশ্বাস, এই কাব্য পাঠ করলে নিজে ও সমাজের মঙ্গল সাধিত হয়।
-
এই কাব্যের রচনার সময়কাল ১৫শ থেকে ১৮শ শতকের শেষ পর্যন্ত।
-
মঙ্গলকাব্যের মূল দেবতারা হলেন:
✅ মনসা
✅ চণ্ডী
✅ ধর্মঠাকুর -
একটি পূর্ণাঙ্গ মঙ্গলকাব্যে থাকে ৫টি অংশ:
-
বন্দনা
-
আত্মপরিচয়
-
দেবখণ্ড
-
মর্ত্যখণ্ড
-
শ্রুতিফল
-
বাংলা সাহিত্যে প্রায় ৬২ জন মঙ্গলকাব্য রচয়িতা পাওয়া যায়।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হল:
➡️ কানাহারি দত্ত
➡️ মানিক দত্ত
➡️ ভারতচন্দ্র
➡️ দ্বিজমাধব
➡️ ঘনরাম চক্রবর্তী
মঙ্গলকাব্যের দুই ধারা
খাঁটি বা লৌকিক মঙ্গলকাব্য
এই ধারায় লোকজ বিশ্বাস ও দেবতার মাহাত্ম্য গুরুত্ব পায়।
উদাহরণ:
-
মনসামঙ্গল
-
চণ্ডীমঙ্গল
-
ধর্মমঙ্গল
-
কালিকামঙ্গল (বিদ্যাসুন্দর)
অন্যান্য: শিবমঙ্গল, ষষ্ঠীমঙ্গল, সূর্যমঙ্গল, শীতলামঙ্গল, রায়মঙ্গল ইত্যাদি।
পৌরাণিক মঙ্গলকাব্য
এগুলো পুরাণ নির্ভর এবং দেব-দেবীর গল্প ঘিরে তৈরি।
উদাহরণ:
-
অন্নদামঙ্গল
-
গৌরীমঙ্গল
-
দুর্গামঙ্গল
-
চণ্ডিকামঙ্গল
-
গঙ্গামঙ্গল
-
ভবানীমঙ্গল
-
কমলামঙ্গল ইত্যাদি।
দাশু রায় বা দাশরথি রায় মঙ্গলকাব্যের কবি ছিলেন না। তিনি পাঁচালি ধারার জনপ্রিয় কবি, যাঁর লেখায় ছিল রস, ছন্দ ও সুরের অপূর্ব মেলবন্ধন।
আর মঙ্গলকাব্য হল ধর্মীয় কাব্যরূপে দেবদেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করে সমাজের মঙ্গল কামনা করার এক সাহিত্যধারা।
0
Updated: 3 months ago
মঙ্গলকাব্যের বিদ্রোহী নারী চরিত্র কোনটি?
Created: 1 month ago
A
সনকা
B
ফুল্লরা
C
বেহুলা
D
মনসা
'মনসামঙ্গল' কাব্য সাপের দেবী মনসাকে কেন্দ্র করে রচিত। মনসার অপর নাম কেতকা বা পদ্মা, তাই এই কাব্যকে কেতকামঙ্গল বা পদ্মাপুরাণ নামেও ডাকা হয়। মনসামঙ্গল কাব্য মঙ্গলকাব্যের প্রাচীনতম ধারা হিসেবে পরিচিত এবং এতে মানুষের সংগ্রামের কাহিনি ফুটে উঠেছে।
-
কাব্যের আদি কবি ছিলেন কানা হরিদত্ত। এছাড়াও বিজয় গুপ্ত, নারায়ণ দেব, বিপ্রদাস পিপিলাই, দ্বিজ বংশীদাস, কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ প্রমুখ মনসামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা ছিলেন।
মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান চরিত্রগুলো:
-
সাপের দেবী মনসা
-
চাঁদ সওদাগর
-
সনকা
-
বেহুলা
-
লখিন্দর
চরিত্র বিশ্লেষণ:
-
চাঁদ সওদাগরের চরিত্রটি নিগৃহীত মানবতার জীবনের বাণীকে প্রকাশ করে। ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহী মনোভাব কাব্যের মূল বৈশিষ্ট্য। সে যুগের মানবিক পীড়ন, বঞ্চনা ও বিক্ষোভ চাঁদ সওদাগরের বিদ্রোহী স্বভাবের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।
-
বেহুলার চরিত্রে বাঙালি নারীত্বের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। তার ত্যাগ, তিতিক্ষা, আত্মবিশ্বাস ও অমিত বীর্য তাকে শক্তিশালী প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বেহুলার নারীশক্তি চাঁদ সওদাগরের পৌরুষের সমগোত্রীয় বিদ্রোহী হিসেবে কার্যকর এবং তার উপস্থিতি মানবী শক্তির সার্থক রূপ হিসেবে চিত্রিত।
0
Updated: 1 month ago
’মনসামঙ্গল’ কাব্যের আদি কবি কে?
Created: 2 months ago
A
কানা হরিদত্ত
B
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
C
মানিক দত্ত
D
দ্বিজ রামদেব
মনসামঙ্গল কাব্য
-
বিষয়: সাপের দেবী মনসার স্তব, স্তুতি ও কাহিনি
-
ধরন: এক ধরনের পদ্মপুরাণ
-
উৎস: বাংলার প্রাকৃত জীবন ও লৌকিক জীবনাচার
-
আদি কবি: কানা হরিদত্ত
প্রধান চরিত্র:
-
সাপের দেবী মনসা
-
চাঁদ সওদাগর
-
বেহুলা
-
লখিন্দর
-
সনকা
অন্য কাব্য ও কবি:
-
চণ্ডীমঙ্গল → আদি কবি: মানিক দত্ত, প্রধান বা শ্রেষ্ঠ কবি: মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
0
Updated: 2 months ago