মনোএল দা আসসুম্পসাঁউ তাঁর বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেছিলেন—
A
একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থ হিসেবে
B
বাংলা-পর্তুগিজ অভিধানের ভূমিকা অংশ হিসেবে
C
একটি সাহিত্য গ্রন্থের অংশ হিসেবে
D
ধর্মীয় গ্রন্থের অংশ হিসেবে
উত্তরের বিবরণ
সঠিক উত্তর হলো খ) বাংলা-পর্তুগিজ অভিধানের ভূমিকা অংশ হিসেবে। বাংলা ব্যাকরণ রচনার ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্যগুলো নিচে দেওয়া হলো।
-
প্রথম পর্যায়:
• প্রথম বাংলা ব্যাকরণ প্রকাশিত হয় ১৭৪৩ সালে।
• এটি পর্তুগিজ ভাষায় রচিত, লেখক ছিলেন মনোএল দা আসসুম্পসাঁউ।
• তিনি এটি রচনা করেন বাংলা-পর্তুগিজ অভিধানের ভূমিকা অংশ হিসেবে। -
ইংরেজি ভাষায় বাংলা ব্যাকরণ:
• ১৭৭৮ সালে নাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড প্রণীত A Grammar of the Bengal Language প্রকাশিত হয়। এটি ইংরেজি ভাষায় রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাংলা ব্যাকরণ।
• ১৮০১ সালে উইলিয়াম কেরি ইংরেজি ভাষায় রচনা করেন A Grammar of the Bengalee Language, যা ১৮৪৬ সালে জন রবিনসনের বঙ্গানুবাদে অনূদিত হয়। -
বাংলা ভাষায় রচিত ব্যাকরণ:
• ১৮৩৩ সালে রামমোহন রায়ের ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ প্রকাশিত হয়।
• এটি বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ।
0
Updated: 1 month ago
'অনল-প্রবাহ' রচনা করেন-
Created: 3 months ago
A
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী
B
মোজাম্মেল হক
C
এয়াকুব আলী চৌধুরী
D
মুনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
অনল প্রবাহ কাব্য
• মুসলিম জাগরণের উদ্দেশ্যে লেখা কাব্য ‘অনল প্রবাহ’ রচনা করেন সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০০ সালে।
• এই কাব্যে বলা হয়েছে, যেগুলো অতীতে চলে গেছে সেগুলো নিয়ে শোক করাটা বৃথা, বরং আমাদের জাতির হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এখানে মুসলমানদের দুরবস্থা এবং ইংরেজদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
• ‘অনল প্রবাহ’-এর কবিতাগুলোতে হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভারত ভিক্ষা’ ও ‘ভারত বিলাপ’ কবিতার প্রভাব দেখা যায়।
• ১৯০৮ সালে (১৩১৫ বঙ্গাব্দে) এই কাব্যের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ পায়, যা প্রথম সংস্করণ থেকে বড় ও পরিবর্তিত। প্রথম সংস্করণে মাত্র ৯টি কবিতা ছিল।
• প্রথম সংস্করণের কবিতার নামগুলো হলো: অনল-প্রবাহ, তুর্যধ্বনি, মূর্ছনা, বীর-পূজা, ছাত্রদের প্রতি অভিভাষণ, মরক্কো-সঙ্কট, আমীর-আগমন, দীপনা, আমীর-অভ্যর্থনা।
• বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের পর তখনকার বাংলার সরকার এটি বাজেয়াপ্ত করে এবং সিরাজীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
• সিরাজী তখন ফরাসি শাসিত চন্দননগরে গিয়ে ৮ মাস আত্মগোপন করেন। পরে আত্মসমর্পণ করলে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে।
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর অন্যান্য রচনা
-
উপন্যাস: রায়নন্দিনী, তারাবাঈ, ফিরোজা বেগম
-
প্রবন্ধ: স্বজাতি প্রেম, তুর্কি নারী জীবন, স্পেনীয় মুসলিম সভ্যতা
-
কাব্যগ্রন্থ: অনল প্রবাহ, উচ্ছ্বাস, উদ্বোধন, স্পেন বিজয় কাব্য
-
ভ্রমণ কাহিনী: তুরস্ক ভ্রমণ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ - কার রচনা?
Created: 1 month ago
A
সত্যজিৎ রায়
B
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
C
দক্ষিণারঞ্জন মিত্রমজুমদার
D
সুকুমার রায়
• ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’
-
রচয়িতা: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
-
প্রথম প্রকাশ: সন্দেশ পত্রিকায়, ১৯১৫
-
পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা লাভ: সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ (১৯৬৯)
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী সম্পর্কে তথ্য:
-
জন্ম ও মৃত্যু: ১৮৬৩–১৯১৫
-
বিশেষত্ব: প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী, বাংলা মুদ্রণশিল্পের পথিকৃৎ
-
সাহিত্যচর্চার হাতেখড়ি: ১৮৮৩ সালে ছাত্রাবস্থায় সখা পত্রিকায় প্রথম রচনা প্রকাশ
-
সম্পাদিত পত্রিকা: ১৯১৩ সালে সন্দেশ, আজও কলকাতা থেকে প্রকাশিত
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ:
-
ছোটদের রামায়ণ
-
ছোটদের মহাভারত
-
সেকালের কথা
-
মহাভারতের গল্প
-
ছোট্ট রামায়ণ
-
টুনটুনির বই
-
গুপী গাইন বাঘা বাইন
0
Updated: 1 month ago
পদ বা পদাবলী বলতে কি বুঝায়?
Created: 3 months ago
A
লাচাড়ী ছন্দে রচিত পদ্য বা কবিতাবলী
B
পদ্যাকারে রচিত দেবস্তুতিমূলক রচনা
C
বাউল বা মরমী গীতি
D
বৌদ্ধ বা বৈষ্ণবীয় ধর্মের গূঢ় বিষয়ের বিশেষ সৃষ্টি
পদাবলী (বিশেষ্য পদ)
অর্থাৎ, বৈষ্ণব ও শাক্ত ধর্মভিত্তিক গীতিকাব্যের এক বিশেষ শাখা।
পদাবলী:
পদাবলী হলো এক ধরণের সামগ্রিক গীতিকাব্য যা লোকজ সাহিত্য, ধর্মীয় কাব্য এবং মানবীয় অনুভূতির মেলবন্ধন। ছন্দবদ্ধ, গীতিময় রচনাকে ‘পদ’ বলা হয়। রাধা-শ্রীকৃষ্ণের প্রেমলীলা এবং চৈতন্যদেবের ভক্তির সাধনাকে কেন্দ্র করেই মধ্যযুগে পদাবলী বা গীতিকাব্যের একটি বিশাল প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
বৈষ্ণব পদাবলী:
বৈষ্ণব পদাবলী প্রধানত বৈষ্ণব ধর্ম ও কৃষ্ণ ভক্তির প্রতি নিবেদিত। এতে শ্রীকৃষ্ণ, গোপী প্রেম, কৃষ্ণের মহিমা ও ভক্তির গুণাবলী গভীরভাবে ফুটে ওঠে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, পদাবলী একটি বিস্তৃত শব্দ, যা বিভিন্ন ধরনের গান ও গীতিকাব্যকে নির্দেশ করে, তবে বৈষ্ণব পদাবলী বলতে বোঝায় সেই পদাবলী
যা বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবিত কাব্যধারা।অর্থাৎ, পদ বা পদাবলী মূলত পদ্যরূপে রচিত ভক্তিমূলক রচনা।
প্রাসঙ্গিক আলোচনা:
চৈতন্যদেবের আগের সময়ের সাহিত্যধারার মধ্যে পদাবলীর অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারার সূচনা হয় চৈতন্যপূর্ব যুগেই। রাধা-শ্রীকৃষ্ণের লীলাবিষয়ক সাহিত্যিক ভাবনা, ভাষা ও ছন্দের দিক থেকে এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে। এতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আত্মার আত্মীয় হিসেবে কল্পিত, যেখানে ভক্ত ও ঈশ্বরের মধ্যে কোনো দূরত্ব নেই।
মধ্যযুগে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা এবং চৈতন্যদেবের ভক্তি সাধনাকে অবলম্বন করে পদাবলী বা গীতিকাব্যের ধারা ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়। চৈতন্যদেবের পরবর্তী বৈষ্ণব কবিরা এই সাহিত্যের সমৃদ্ধিতে ব্যাপক অবদান রাখেন। অনেক বিশ্লেষকের মতে, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মহান জাগরণ ঘটে এই পদাবলী রচনার মধ্য দিয়ে।
অনেকে মুসলমান কবিরাও রাধাকৃষ্ণের লীলার পদ রচনা করে বাংলা সাহিত্যের পরিধি প্রসারিত করেছেন, যেমন চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, লোচনদাস, গোবিন্দদাস, কবিবল্লভ রায়শেখর, বলরাম দাস, নরোত্তম দাস, নরহরি দাস, রাধামোহন ঠাকুর ইত্যাদি। মৈথিল ভাষার বিখ্যাত কবি বিদ্যাপতিও চৈতন্যপূর্ব যুগের প্রভাবশালী পদ রচয়িতা।
মৈথিল ভাষায় রচিত বিদ্যাপতির পদাবলী বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। চণ্ডীদাস ও বিদ্যাপতি এই ধারার শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে বিবেচিত।
উৎস:
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago