কোন ধরনের মূল্যবোধের সাথে সুশাসনের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান?
A
সামাজিক মূল্যবোধ
B
নৈতিক মূল্যবোধ
C
রাজনৈতিক মূল্যবোধ
D
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ
উত্তরের বিবরণ
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ
সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
একটি সমাজে যখন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, কর্তব্যপরায়ণতা নিশ্চিত হয়, তখনই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
একইভাবে পরমত সহিষ্ণুতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও অন্যের মতের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মতো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুশাসনের জন্য অপরিহার্য।
সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ
পরমত সহিষ্ণুতা: নানা মত ও চিন্তায় বিভক্ত রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তিগুলো যদি একে অপরকে সম্মান দেয় এবং মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা মেনে নেয়, তবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।
স্বচ্ছতা: রাষ্ট্রীয়, সরকারি বা প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা বজায় রাখা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রকাশ। এতে জনগণের আস্থা তৈরি হয়, যা সুশাসনের জন্য অপরিহার্য।
আইনের শাসন: আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা ছাড়া সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আইনের মর্যাদা রক্ষা করে এবং এর মাধ্যমেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।
ন্যায়পরায়ণতা: গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তি ন্যায়পরায়ণ হয়। সমাজে এমন নাগরিক বেশি হলে সুশাসন ত্বরান্বিত হয়।
সচেতনাবোধ সৃষ্টি: মানবিক গুণাবলী ও মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিকরা সচেতন হয়। তারা সরকারের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে ও সুশাসনবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করতে সক্ষম হয়।
দায়বদ্ধতা: রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিক এবং নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র— উভয়েরই দায়বদ্ধতা রয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তি অধিকার ভোগের পাশাপাশি কর্তব্যও পালন করে, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক।

0
Updated: 1 day ago
সরকারি চাকরিতে সততার মাপকাঠি কি?
Created: 3 weeks ago
A
যথা সময়ে অফিসে আগমন ও অফিস ত্যাগ করা
B
দাপ্তরিক কাজে কোনো অবৈধ সুবিধা গ্রহণ না করা
C
নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি সম্পন্ন করা
D
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে কোনো নির্দেশ প্রতিপালন করা
সরকারি চাকরিতে সততার মানদণ্ড
সরকারি চাকরিতে সততার মাপকাঠি হলো নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের অভ্যাস। একজন কর্মকর্তা তার দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পন্ন করলে তাকে সততাবান ধরা হয়।
নৈতিকতা (Ethics)
-
নৈতিকতার ইংরেজি শব্দ Ethics এসেছে গ্রিক শব্দ Ethos থেকে, যার অর্থ হলো চরিত্র বা রীতিনীতি (Character or Custom)।
-
প্রতিটি মানুষের জীবনেই নৈতিকতার গুরুত্ব রয়েছে।
-
নৈতিকতা হলো মানুষের আচরণগত মান এবং নৈতিক বিচার যা ভাল ও মন্দ, সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে।
-
Webster’s Dictionary অনুযায়ী, নৈতিকতা হলো এমন একটি শৃঙ্খলা, যা নৈতিক কর্তব্য ও দায়বোধের মাধ্যমে ঠিক করে কী ভালো ও কী মন্দ।
-
Godiwalla & Faramarz মতে, নৈতিকতা হলো ভুল ও খারাপ থেকে সঠিক ও ভালো আলাদা করার প্রক্রিয়া, এবং তা বাস্তবে প্রয়োগযোগ্য।
-
Kreitner & Eliason (Foundations of Management) উল্লেখ করেছেন, নৈতিকতা হলো ভুল বনাম সঠিক এবং তার সাথে সম্পর্কিত দায়বদ্ধতার মূল্যায়ন।
নৈতিকতার মূল বৈশিষ্ট্য:
-
ভুল ও সঠিকের তুলনা করা।
-
নৈতিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করা।
-
প্রতিষ্ঠান ও সমাজের প্রতি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
-
ভালো ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা।
সংক্ষেপে, নৈতিকতা এমন কিছু মৌলিক নীতি নির্ধারণ করে যা আমাদের কাজকে গ্রহণযোগ্য ও সামাজিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে পরিচালিত হতে সাহায্য করে।
সততা (Honesty)
-
নীতিশাস্ত্রে সততা হলো মানুষের চরিত্রের স্থায়ী সৎ প্রবণতা, যা জন্মগত নয় বরং অর্জিত।
-
সততা মূলত কর্তব্যপরায়ণ অভ্যাসের ফল।
-
এরিস্টটল বলেছেন, সততা হলো মনের স্থায়ী অবস্থা, যা আমাদের ইচ্ছা ও বিচার-বুদ্ধি দ্বারা গঠিত এবং বাস্তব জীবনের আদর্শের উপর ভিত্তি করে।
-
মানুষ তখনই সৎলোক হয় যখন সে সৎ অভ্যাস গড়ে তোলে এবং নৈতিক আদর্শ অনুসারে কাজ করে।
-
নিজের প্রবৃত্তি ও কামনা বিচার-বুদ্ধি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করলে ব্যক্তি চরিত্রবান হয়ে ওঠে।
-
ম্যাকেনজি অনুযায়ী, সততা হলো চরিত্রের সৎ অভ্যাস, যা কর্তব্যের সাথে সম্পর্কিত কিন্তু তার থেকে পৃথক।
-
কর্তব্য বলতে বোঝায় সেই বিশেষ কাজ যা আমাদের অবশ্যই করা উচিত।
সংক্ষেপে, সততা হলো অভ্যাস ও নৈতিক আদর্শ অনুসরণ করে সৎ কাজ করার ক্ষমতা।
উৎসঃ সিভিক এডুকেশন-১, বিএ/বিএসএস প্রোগ্রাম, এসএসএইচএল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

0
Updated: 3 weeks ago
‘কর্তব্যের জন্য কর্তব্য’-ধারণাটির প্রবর্তক কে?
Created: 1 week ago
A
ইমানুয়েল কান্ট
B
হার্বার্ট স্পেন্সার
C
বার্ট্রান্ড রাসেল
D
অ্যারিস্টটল
ইমানুয়েল কান্টকে আধুনিক নীতিশাস্ত্রে 'কর্তব্যমুখী নৈতিকতার' প্রবর্তক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তিনি একজন প্রখ্যাত জার্মান নীতিবিজ্ঞানী, যিনি নৈতিকতার মূলনীতিকে কর্মের ফলাফলের চেয়ে কর্মের ধরণ ও উদ্দেশ্যের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তাঁর নীতিবিদ্যার মূল কনসেপ্ট তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করে: সৎ ইচ্ছা, কর্তব্যের জন্য কর্তব্য এবং শর্তহীন আদেশ। বিশেষভাবে, কান্টের কর্তব্যের নৈতিকতার দর্শন বলে যে কোনো কর্মের মূল্য তার ফলাফলের উপর নয়, বরং সেই কর্মের নৈতিক উদ্দেশ্য এবং স্বভাবের উপর নির্ভর করে। তিনি সততার জন্য সদিচ্ছা এবং কর্তব্যের জন্য কর্তব্যের ধারণার প্রবর্তক।
-
কর্তব্যমুখী নৈতিকতা বা কর্তব্যের নৈতিকতা যে কোনো কর্মের ফলাফলের বদলে কর্মের প্রকৃতির ওপর গুরুত্ব দেয়।
-
সৎ ইচ্ছা হলো নৈতিক ক্রিয়ার মূল ভিত্তি।
-
কর্তব্যের জন্য কর্তব্য বোঝায়, যে কাজ আমরা করি তা শুধুমাত্র নৈতিক দায়বদ্ধতার কারণে করা উচিত।
-
শর্তহীন আদেশ বা কাতেগরিক্যাল ইম্পেরেটিভ নৈতিকতার একটি মূলনীতি, যা নির্দেশ করে যে নৈতিক আইন সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
নিশ্চিতভাবে তাঁর নীতিশাস্ত্রের উপর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো:
-
Groundwork for the Metaphysics of Morals
-
Critique of Pure Reason
-
Critique of Practical Reason
-
Critique of Judgement

0
Updated: 1 week ago
"আইনের চোখে সব নাগরিক সমান।"- বাংলাদেশের সংবিধানের কত নম্বর ধারায় এ নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
ধারা ০৭
B
ধারা ২৭
C
ধারা ৩৭
D
ধারা ৪৭
সংবিধান সম্পর্কিত তথ্য
মৌলিক অধিকার ও সমতার নীতি:
বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে মৌলিক অধিকারগুলো বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ নং অনুচ্ছেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী:
-
সব নাগরিক আইনসম্মতভাবে সমান।
-
আইনের রক্ষাকবচ প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
অর্থাৎ, কোনও নাগরিককে আইন অনুসারে অন্যের তুলনায় বৈষম্যের শিকার হতে হবে না এবং সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে।
(উৎস: বাংলাদেশের সংবিধান, অনুচ্ছেদ ২৭)
বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদসমূহ
অনুচ্ছেদ | বিষয়বস্তু (সহজ ভাষায়) |
---|---|
১৩ | ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রের মালিকানার নীতি নির্ধারণ |
১৯ | সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা |
২২ | বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা |
২৮ | ধর্ম বা অন্যান্য কারণে বৈষম্য নিষিদ্ধ |
২৯ | সরকারি নিয়োগ ও সুযোগে সমতার নীতি |
৩১ | আইনের আশ্রয় ও সুরক্ষা লাভের অধিকার |
৩৩ | গ্রেপ্তার ও আটক সংক্রান্ত নাগরিক সুরক্ষা |
উৎস: বাংলাদেশ সংবিধান

0
Updated: 1 month ago