ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের 'ভ্রান্তিবিলাস' কোন নাটকের গদ্য অনুবাদ?
A
মার্চেন্ট অব ভেনিস
B
কমেডি অব এররস
C
অ্যা মিডসামার নাইটস ড্রিম টেমিং অব দ্য শ্রুনাইটস ড্রিম
D
টেমিং অব দ্য শ্রু
উত্তরের বিবরণ
ভ্রান্তিবিলাস
- ভ্রান্তিবিলাস রচিত হয় ১৮৬৯ সালে, বিদ্যাসাগরের প্রথম রচনা বেতালপঞ্চবিংশতির বাইশ বছর পরে।
- ভ্রান্তিবিলাস বিশ্বখ্যাত নাট্যকার শেক্সপীয়রের 'কমেডি অব এররস' নাটক অবলম্বনে রচিত।
- বইয়ের 'বিজ্ঞাপন' শিরোনাম অংশে তিনি লিখেছেন:
'কিছু দিন পূর্বে, ইংলন্ডের অদ্বিতীয় কবি শেক্সপীয়রের প্রণীত ভ্রান্তিপ্রহসন পড়িয়া আমার বোধ হইয়াছিল, এতদীয় উপাখ্যানভাগ বাঙ্গালাভাষায় সঙ্কলিত হইলে লোকের চিত্তরঞ্জন হইতে পারে। তদনুসারে ঐ প্রহসনের উপাখ্যানভাগ বাঙ্গালাভাষায় সঙ্কলিত ও ভ্রান্তিবিলাস নামে প্রচারিত হইল।'
- এরপরে তিনি বলেছেন যে এই নাটকের কাব্য-অংশ শেক্সপীয়রের অন্যান্য নাটকের চেয়ে 'নিকৃষ্ট', কিন্তু এর কাহিনী-অংশ কৌতুকপূর্ণ। সেজন্য তিনি এই নাটকটি বাংলাভাষায় রূপান্তরের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
-------------------------
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ ঈশ্বরচন্দ্রকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 'ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা' নামেও স্বাক্ষর করতেন।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম গদ্যে যতিচিহ বা বিরামচিহ্নের ব্যবহার শুরু করেন।
- তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ বেতাল পঞ্চবিংশতি (১৮৪৭)। এই গ্রন্থে তিনি প্রথম যতি বা বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করেন।
• বিদ্যাসাগরের কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম:
- শকুন্তলা,
- সীতার বনবাসের,
- ভ্রান্তিবিলাস ইত্যাদি।
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
- আখ্যান মঞ্জরী,
- বোধোদয়,
- বর্ণপরিচয়,
- কথামালা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং ‘ভ্রান্তিবিলাস’ গ্রন্থ।
0
Updated: 3 months ago
কোনটি নাটক?
Created: 3 months ago
A
কর্তার ইচ্ছায় কর্ম
B
গড্ডলিকা
C
পল্লীসমাজ
D
সাজাহান
‘সাজাহান’ নাটক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রথম সার্থক ঐতিহাসিক নাটক হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯০৯ সালে রচিত এই নাটকে মোগল সম্রাট সাজাহানের জীবনকাহিনীকে কেন্দ্র করে এক গভীর ঐতিহাসিক চেতনার নির্মাণ দেখা যায়।
এটি রচনা করেন কবি, নাট্যকার ও দেশাত্মবোধক গীতির স্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, যিনি প্রথমবারের মতো সাজাহানকে নাটকের চরিত্র হিসেবে বাংলা সাহিত্যে উপস্থাপন করেন। উল্লেখযোগ্য যে, এই নাটকেই রয়েছে তাঁর অমর দেশাত্মবোধক গান ‘ধনধান্য পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’, যা বাংলা গান ও নাট্যজগতের মেলবন্ধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
অন্যদিকে, বাংলা সাহিত্যের অন্যান্য রচনায়ও ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট অনন্যভাবে প্রতিফলিত হয়েছে—
-
‘গড্ডলিকা’ রাজশেখর বসু রচিত একটি প্রবন্ধসংকলন বা গল্পগ্রন্থ,
-
‘পল্লীসমাজ’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত সমাজ-চিত্রমূলক একটি উপন্যাস,
-
এবং ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত একটি বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়: জীবন ও সাহিত্যকীর্তি
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী এই সাহিত্যিক ছিলেন কবি, নাট্যকার এবং গীতিকার। ছাত্রাবস্থায় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আর্য্যগাথা’ এবং বিলেতে অবস্থানকালে ‘Lyrics of Ind’ (১৮৮৬) প্রকাশিত হয়। ১৯০৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানত কবিতা রচনায় মনোযোগী ছিলেন এবং এই সময়ে তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ছিল ১২টি।
১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় জাতীয়তাবোধ জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে তিনি অসংখ্য গান রচনা করেন। ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’ এবং ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ তাঁর রচিত সেইসব গানের মধ্যে অন্যতম, যেগুলো আজও বাঙালির হৃদয়ে গেঁথে আছে। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি তিনি ১৯০৫ সালেই কলকাতায় ‘পূর্ণিমা মিলন’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ১৯১৩ সালের ১৭ মে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর নাট্যধারা
ঐতিহাসিক নাটকসমূহ:
-
তারাবাঈ
-
প্রতাপ-সিংহ
-
দুর্গাদাস
-
নূরজাহান
-
মেবার পতন
-
সাজাহান
-
চন্দ্রগুপ্ত
-
সিংহলবিজয়
সামাজিক নাটকসমূহ:
-
পরপারে
-
বঙ্গনারী
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাটকে ঐতিহাসিক প্রামাণ্যতা, কাব্যময় ভাষা এবং দেশপ্রেমের যে সংমিশ্রণ দেখা যায়, তা বাংলা নাট্যসাহিত্যের ভান্ডারে এক অমূল্য সংযোজন।
তথ্যসূত্র:
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস — মাহবুবুল আলম
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা — ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 3 months ago
সেলিম আল দীনের নাটকে অনুসৃত শিল্পতত্ত্ব -
Created: 1 week ago
A
অস্তিত্ববাদ
B
অভিব্যক্তিবাদ
C
পরাবাস্তববাদ
D
দ্বৈতাদ্বৈতবাদ
সেলিম আল দীন, যিনি ১৯৪৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে খ্যাত, তাঁর রচনায় দ্বৈতাদ্বৈতবাদ শিল্পতত্ত্ব বা সাহিত্যরীতি অনুসৃত হয়েছে। তিনি ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনি জেলার সোনাগাজী উপজেলার সেনেরখিল গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
সেলিম আল দীন ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৮৬ সালে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে যোগদান করেন, যেখানে তিনি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নাটকগুলিতে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণী, পেশাজীবী, এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সমাজজীবন ও সংস্কৃতির মহাকাব্যিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি ঢাকা থিয়েটার এবং বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নাট্য রচনার জন্য তিনি ‘দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পতত্ত্ব’ নামে এক নতুন শিল্প রীতি প্রবর্তন করেন, যা বাংলা সাহিত্যে একটি নবতর ধারার সূচনা করে। পাশ্চাত্য শিল্পের বিভাজনকে অস্বীকার করে, সেলিম আল দীন বাঙালির হাজার বছরের নন্দতত্ত্বের আলোকে একটি নতুন শিল্প দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন।
শুধু নাটক রচনা নয়, তিনি নাট্যতত্ত্ব সম্পর্কিত বহু গবেষণামূলক প্রবন্ধও রচনা করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ (১৯৯৬)। তিনি বাঙলা নাট্যকোষ নামে নাট্যবিষয়ক একটি কোষগ্রন্থও সংকলন ও সম্পাদনা করেন। এছাড়া, থিয়েটার স্টাডিজ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং নাট্যশিক্ষার্থীদের জন্য ‘নন্দিকেশ্বরের অভিনয় দর্পণ’ (১৯৮২) গ্রন্থটি অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন।
সেলিম আল দীনের অন্যান্য প্রকাশিত সাহিত্যকীর্তির মধ্যে রয়েছে:
-
কাব্যগ্রন্থ: কবি ও তিমি,
-
উপন্যাস: অমৃত উপাখ্যান।
তার রচনাসমগ্র ৫ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে (২০০৫-২০০৯)।
0
Updated: 1 week ago
সিরাজগঞ্জে সংঘটিত কৃষক-বিদ্রোহের পটভূমিকায় রচিত নাটক কোনটি?
Created: 1 month ago
A
জমিদার দর্পণ
B
নবান্ন
C
নুরুলদীনের সারা জীবন
D
গোত্রান্তর
‘জমিদার দর্পণ’ নাটক
-
রচয়িতা: মীর মশাররফ হোসেন।
-
বিষয়বস্তু: ১৮৭২-৭৩ সালের সিরাজগঞ্জের কৃষক-বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট।
-
কাহিনী: অত্যাচারী জমিদার হায়ওয়ান আলী এর অত্যাচার এবং অধীনস্থ প্রজা আবু মোল্লার গর্ভবতী স্ত্রী নূরন্নেহারকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা।
-
বৈশিষ্ট্য: নাটকটির দৃশ্য ও ঘটনা সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত, কোন অংশই সাজানো নয়।
-
প্রভাব: নামকরণে ও ঘটনা বিন্যাসে দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল-দর্পণ’ নাটকের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
অন্য সমকালীন নাটকসমূহ:
-
‘নবান্ন’ – বিজন ভট্টাচার্য রচিত; পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিতে কৃষক জীবনের দুঃখ ও সংগ্রামের কাহিনি।
-
‘গোত্রান্তর’ (১৯৬০) – বিজন ভট্টাচার্য রচিত; ছিন্নমূল পূর্ববঙ্গবাসীর ভাগ্যবিপর্যয়।
-
‘নুরুলদীনের সারা জীবন’ – সৈয়দ শামসুল হক রচিত কাব্যনাট্য; রংপুরের কৃষক বিদ্রোহের বিষয়বস্তু।
0
Updated: 1 month ago