ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে কবে?
A
২০০০ সালে
B
২০১৫ সালে
C
১৯৯৯ সালে
D
১৯৯৫ সালে
উত্তরের বিবরণ
ইউনেস্কো ও বাংলা ভাষা
-
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
-
২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা বিশ্বে এ দিবস উৎসব আকারে পালন শুরু হয়।
-
বাংলা ভাষাকে বিশ্বের মাঝে যথাযথভাবে তুলে ধরার জন্য ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকার ইউনেস্কোকে ‘একুশে পদক’ প্রদান করে।
উল্লেখযোগ্য প্রেক্ষাপট
-
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় এবং পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকার ছাত্র ও সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
-
বাংলা রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ২১ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্ররা মিছিল বের করে।
-
মিছিলে পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও কয়েকজন নিহত হন।
-
মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার জন্য ভাষা শহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকে স্মরণ করে, জাতি ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করে ‘অমর একুশে’, ভাষা শহীদ দিবস’ এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’।
আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ও স্বীকৃতি
-
একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন কানাডাপ্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম এবং কানাডার বহুভাষিক ও বহুজাতিক সংগঠন ‘মাতৃভাষা প্রেমিক গোষ্ঠী’।
-
তৎকালীন সরকার ৭ ডিসেম্বর ১৯৯৯, পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় ঘোষণা করে যে, পৃথিবীর বিকাশমান ও বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলির মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
-
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, জাতিসংঘের (ইউনেস্কো) ১৬০তম অধিবেশনে বাংলাদেশসহ ২৭টি দেশের সমর্থন নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
-
২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বের ১৮৮টি দেশে প্রথমবারের মতো এটি উদযাপিত হয়।
-
ইউনেস্কোর পর, জাতিসংঘও ৫ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
0
Updated: 1 month ago
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কোনটি?
Created: 2 weeks ago
A
২১ ফেব্রুয়ারি
B
১৬ ডিসেম্বর
C
১৫ আগস্ট
D
২৬ মার্চ
0
Updated: 2 weeks ago
১৯৪৮-১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় ‘ভাষা দিবস’ হিসেবে কোন দিনটি পালন করা হতাে?
Created: 1 month ago
A
২৫শে জানুয়ারি
B
১১ই ফেব্রুয়ারি
C
১১ই মার্চ
D
২৫শে এপ্রিল
ভাষা দিবসের ইতিহাস বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। এটি শুধু একটি দিবস উদযাপন নয়, বরং দেশের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত এবং পরবর্তীকালে স্বাধীনতার পথে এর প্রভাব নিচের মতো সংক্ষেপে দেখা যায়:
-
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির পূর্ব পর্যন্ত ১১ মার্চকে রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হতো।
-
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ, পূর্ব বাংলায় সাধারণ ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়, যার মূল দাবি ছিল বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
-
এটি ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এ দেশের প্রথম সফল হরতাল এবং ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
-
১১ মার্চের প্রতিবাদ ও সংঘর্ষের প্রভাবের কারণে তৎকালীন সরকারকে ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হতে হয়।
-
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের ঘটনাবলি পরবর্তীতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রভাব এবং অবশেষে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার আন্দোলন বিকাশ লাভ করে।
0
Updated: 1 month ago
কোন সংস্থা ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে?
Created: 2 days ago
A
WHO
B
UNICEF
C
UNESCO
D
ILO
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের ধারণাটি এসেছে বাংলাদেশের উদ্যোগে। এই প্রস্তাবটি ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে উপস্থাপিত হয় এবং অনুমোদিত হয়। এরপর থেকেই প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। এই দিবসের লক্ষ্য হলো বিশ্বের সব মাতৃভাষার সংরক্ষণ, বিকাশ ও সম্মান নিশ্চিত করা, যাতে কোনো ভাষা বিলুপ্ত না হয়।
এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস—১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। সে সময় বাঙালি জাতি তাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ গুলি চালালে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের আত্মত্যাগ ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকারের এক উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে উঠেছিল। এই ঐতিহাসিক ঘটনাই পরবর্তীতে ইউনেস্কোকে অনুপ্রাণিত করে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য একটি আন্তর্জাতিক দিবস ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিতে।
প্রথমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় ২০০০ সালে। তখন থেকেই এ দিবস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাষার বৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি করছে। ইউনেস্কো মনে করে, ভাষা হলো একটি জাতির সংস্কৃতি, পরিচয় ও ঐতিহ্যের বাহক। কোনো ভাষা হারিয়ে গেলে সেই জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতিও হারিয়ে যায়। তাই এই দিবসের মাধ্যমে মানুষকে উৎসাহিত করা হয় বহুভাষিক শিক্ষা, ভাষাগত অধিকার ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে।
বাংলাদেশের এই প্রস্তাবের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে ভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন একটি বিশ্বজনীন মূল্যবোধে রূপ নেয়। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এই দিনটিকে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করে। আয়োজন করা হয় সেমিনার, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভাষা রক্ষা কার্যক্রম, যেখানে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও সংরক্ষণের উপায় তুলে ধরা হয়।
সবশেষে বলা যায়, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাদেশের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি ছিল মানব সভ্যতার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এটি শুধু বাংলাদেশের গৌরব নয়, বরং বিশ্বের সব ভাষাভাষী মানুষের স্বাধীনতা, সম্মান ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে প্রতিটি ভাষা মূল্যবান, প্রতিটি সংস্কৃতি সম্মানের যোগ্য এবং ভাষার বৈচিত্র্যই মানবতার শক্তি।
0
Updated: 2 days ago