বাংলা সাহিত্যে 'নটগুরু' হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভ করেছেন-
A
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
রামনারায়ণ তর্করত্ন
D
দীনবন্ধু মিত্র
উত্তরের বিবরণ
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
-
গিরিশচন্দ্র ঘোষের প্রধান পরিচয় ছিল ‘নটগুরু’ হিসেবে। তিনি রঙ্গমঞ্চের অভিনয় ধারাকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য নাট্যকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। অভিনয়ে সাফল্য তাঁর নাট্যরচনা প্রতিভাকে আরও উদ্দীপ্ত করেছিল।
-
নাটক রচনায় তিনি মঞ্চের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন, সাহিত্যিক প্রয়োজন নয়। শেষ বয়সে আক্ষেপ করেছিলেন, "একখানি নাটকও তিনি নিজের ইচ্ছামত লিখে যেতে পারেন নি।"—যাতে নট ও নাট্যকারের ভিন্ন ভূমিকা স্পষ্ট হয়। প্রথমে তিনি নট ও মঞ্চাধ্যক্ষ, পরে নাট্যকার ছিলেন।
গিরিশচন্দ্র ঘোষের উল্লেখযোগ্য নাটক:
-
আগমনী
-
অভিমন্যুবধ
-
সীতার বনবাস
-
সীতাহরণ
-
পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাস
-
প্রফুল্ল
-
জনা
-
বলিদান
-
সিরাজদ্দৌলা
-
মীরকাশিম
-
ছত্রপতি শিবাজী
-
শঙ্করাচার্য
-
বিল্বমঙ্গল ঠাকুর
রচিত প্রহসন:
-
যামিনী চন্দ্রমাহীনা
-
গোপন চুম্বন
-
ভোটমঙ্গল
-
বেল্লিক বাজার
অন্যান্য সমকালীন উল্লেখযোগ্য নাট্যকার:
-
রামনারায়ণ তর্করত্ন: ‘কুলীনকুলসর্বস্ব’ রচনার মাধ্যমে ‘নাটুকে নারায়ণ’ নামে খ্যাতি লাভ।
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: কবিগুরু হিসেবে খ্যাত।
0
Updated: 1 month ago
'সিরাজদ্দৌলা' নাটকের রচয়িতা কে?
Created: 3 weeks ago
A
দীনবন্ধু মিত্র
B
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
C
কাজী মোতাহার হোসেন
D
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকটি বাংলা নাট্যসাহিত্যের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি, যার রচয়িতা গিরিশচন্দ্র ঘোষ। এই নাটকে তিনি নবাব সিরাজদ্দৌলাকে শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক চরিত্র হিসেবে নয়, বরং স্বদেশপ্রেম, ত্যাগ ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এটি বাংলা নাট্যরীতিতে দেশজাগরণের চেতনা প্রোথিত করার একটি অসাধারণ উদাহরণ।
-
‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটক গিরিশচন্দ্র ঘোষ রচিত, যেখানে নবাব সিরাজদ্দৌলাকে নবজাগরণের যুগের দেশপ্রেমিক প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
-
ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রে ইংরেজ ঐতিহাসিকদের কুৎসিত বর্ণনার বিপরীতে স্বাধীন বাংলার শেষ নবাব সিরাজদ্দৌলাকে দেশভক্ত নায়ক হিসেবে নতুনভাবে উপস্থাপন করেন।
-
গিরিশচন্দ্র ঘোষ এই নাটকে সেই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে নবাবের চরিত্রকে অত্যাচারী শাসকের পরিবর্তে বীর দেশপ্রেমিকের প্রতীক হিসেবে দেখিয়েছেন।
-
নাটকটি নবজাগ্রত বাঙালির স্বদেশচেতনা, আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।
-
এতে দেশদ্রোহিতা, ইংরেজ ষড়যন্ত্র ও বাঙালি ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
-
‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকটি মঞ্চে প্রদর্শিত হলে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ দর্শকসমাজে গভীর প্রভাব ফেলে।
গিরিশচন্দ্র ঘোষ সম্পর্কিত তথ্য:
-
জন্ম: ১৮৪৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, কলকাতার বাগবাজারে।
-
তিনি ছিলেন বাংলা নাট্যজগতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, একজন নাট্যকার, অভিনেতা ও পরিচালক।
-
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের প্রভাবে তিনি প্রথমে গান ও কবিতা লেখা শুরু করেন।
-
পরবর্তীতে মঞ্চনাট্যে যুক্ত হয়ে নাট্যরচনায় মনোনিবেশ করেন।
-
দীনবন্ধু মিত্রের বিখ্যাত প্রহসন ‘সধবার একাদশী’-তে ‘নিমচাঁদ’ চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নাট্যমঞ্চে তাঁর খ্যাতি অর্জন হয়।
-
মৃত্যু: ১৯১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, কলকাতায়।
গিরিশচন্দ্র ঘোষের রচিত প্রধান নাটকসমূহ:
১. আগমনী
২. অভিমন্যুবধ
৩. সীতার বনবাস
৪. সীতাহরণ
৫. পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাস
৬. প্রফুল্ল
৭. জনা
৮. বলিদান
৯. সিরাজদ্দৌলা
১০. মীরকাশিম
১১. ছত্রপতি শিবাজী
১২. শঙ্করাচার্য
১৩. বিল্বমঙ্গল ঠাকুর
গিরিশচন্দ্র ঘোষ বাংলা নাট্যসাহিত্যে দেশপ্রেম, ঐতিহাসিক চেতনা ও নৈতিক মূল্যবোধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নাট্যধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ আজও জাতীয় চেতনার প্রতীক হিসেবে অমর হয়ে আছে।
0
Updated: 3 weeks ago
গিরিশচন্দ্র সেনের 'তত্ত্বরত্নমালা' গ্রন্থটি কোন ভাষার গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
আরবি
B
হিন্দি
C
ফারসি
D
সংস্কৃত
তত্ত্বরত্নমালা গিরিশচন্দ্র সেনের একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এটি শেখ ফরীদুদ্দীন আত্তারের মানতেকুত্তায়েব এবং মওলানা জালালউদ্দীন রূমীর মসনবী শরীফ নামক প্রখ্যাত ফারসি গ্রন্থদ্বয় থেকে সংকলিত। গ্রন্থটিতে নীতিকথা ও শিক্ষণীয় বিষয়গুলো ছোট গল্পের আকারে রসাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
গিরিশচন্দ্র সেন:
-
ধর্মবেত্তা ও অনুবাদক, জন্ম নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা গ্রামে
-
'সুলভ সমাচার' ও 'বঙ্গবন্ধু' পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এবং 'মাসিক মহিলা' পত্রিকার সম্পাদক
-
১৮৭১ সালে কেশবচন্দ্র সেন ও বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর প্রভাবে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত
-
বাংলা সাহিত্যে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো কুরআনের পূর্ণাঙ্গ বঙ্গানুবাদ, যা বাংলা ভাষায় প্রথম
-
সকলের নিকট পরিচিতি: 'ভাই গিরিশচন্দ্র'
-
-
অন্য রচিত গ্রন্থ:
-
তাপসমালা: ৯৬ জন ওলি-আউলিয়ার জীবনচরিত, যা শেখ ফরীদুদ্দীন আত্তারের ফারসি ভাষায় রচিত তাজকেরাতুল আওলিয়ার ভাবাদর্শ অনুসারে রচিত
-
0
Updated: 1 month ago
নাটকে ‘গৈরিশ ছন্দের’ প্রবর্তন করেন কে?
Created: 2 months ago
A
রামায়ণ তর্করত্ন
B
গোবিন্দচন্দ্র দাস
C
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
D
গিরিশচন্দ্র সেন
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
-
গিরিশচন্দ্র ঘোষ (১৮৪৪–১৯১২) বাংলা নাটকের সমৃদ্ধি সাধনে অসাধারণ অবদান রেখেছেন।
-
যশস্বী অভিনেতা এবং প্রতিভাশালী নাট্যকার—এই যুগ্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে তিনি পচাঁত্তরখানি সমাপ্ত নাটক এবং চারখানি অসমাপ্ত প্রহসন রচনা করেছেন।
-
তাঁর প্রধান ও সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠা হলো ‘নটগুরু’ হিসেবে।
-
গিরিশচন্দ্র ঘোষের নাটকগুলিতে তিনি নিজে উদ্ভাবিত ‘গৈরিশ ছন্দ’ ব্যবহার করেছেন, যা যথেষ্ট সার্থকতা অর্জন করেছে। এর উদ্দেশ্য ছিল অভিনয়ে উপযোগী ভাষা সৃষ্টি।
-
এই ছন্দের প্রভাব পরবর্তীকালের নাট্যকারদের ওপরও লক্ষণীয়। ভক্তিমূলক পৌরাণিক নাটকের ক্ষেত্রেও তাঁর প্রভাব অস্বীকার্য।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago