'ভিক্ষুকটা যে পিছনে লেগেই রয়েছে, কী বিপদ!'- এই বাক্যের 'কী'-এর অর্থ-
A
ভয়
B
রাগ
C
বিরক্তি
D
বিপদ
উত্তরের বিবরণ
একই অব্যয় শব্দ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করতে পারে।
যেমন:
‘লোকটা কী যে পিছু ছাড়ে না, একেবারে বিপদে ফেলেছে!’ — এই বাক্যে ‘কী’ অব্যয়টি স্পষ্টভাবে বিরক্তি প্রকাশ করছে।
আবার,
‘এই ভিক্ষুকটা কী যে লেগেই আছে, এক মুহূর্ত শান্তি নেই!’ — এখানেও ‘কী’ শব্দটি বিরক্তির অনুভূতি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
উৎস: নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, ২০১৯ সংস্করণ।
0
Updated: 3 months ago
”ইনকিলাব” শব্দের অর্থ কি?
Created: 2 weeks ago
A
বিপ্লব
B
চিরজীবী
C
সন্ত্রাস
D
আন্দোলন
“ইনকিলাব” (انقلاب) শব্দটি মূলত আরবি ভাষা থেকে আগত। এর আদি অর্থ হলো উলট-পালট, পরিবর্তন বা রূপান্তর। এই শব্দটি পরবর্তীকালে ফারসি ও উর্দু ভাষায় প্রচলিত হয় এবং বাংলা ভাষায়ও ব্যবহৃত হতে থাকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে “ইনকিলাব” শব্দের সবচেয়ে প্রচলিত অর্থ হলো বিপ্লব বা বড় ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন।
শব্দতাত্ত্বিকভাবে “ইনকিলাব” শব্দের মূল ধাতু হলো “ক-ল-ব” (قلب), যার অর্থ “উলটে দেওয়া” বা “অন্য রূপে পরিবর্তন করা”। অর্থাৎ, কোনো অবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে বদলে দেওয়া বা পূর্বাবস্থাকে উল্টে ফেলা। তাই ইনকিলাব মানে এমন একটি পরিবর্তন যা সমাজ, রাজনীতি বা রাষ্ট্রে মৌলিক রূপান্তর ঘটায়।
বাংলা ভাষায় “ইনকিলাব” শব্দটি সাধারণত বিপ্লব অর্থে ব্যবহৃত হয়। “বিপ্লব” মানে কোনো দেশের, সমাজের বা ব্যবস্থার পুরোনো কাঠামো ভেঙে নতুন কাঠামো স্থাপন করা। এটি সাধারণত অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণের জাগরণ, রাজনৈতিক পরিবর্তন বা সামাজিক মুক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, “ফরাসি বিপ্লব”, “রুশ বিপ্লব” বা “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ” — এগুলো সবই এক অর্থে “ইনকিলাব”।
আরবি ও ইসলামী ইতিহাসে “ইনকিলাব” শব্দটি কেবল রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, বরং নৈতিক ও সামাজিক পুনর্জাগরণের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। যেমন— “ইনকিলাবে ইসলামী” মানে এমন এক আন্দোলন বা পরিবর্তন যা ইসলামী মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ “ইনকিলাব” শব্দটি ব্যবহার করেছেন আত্মিক ও নৈতিক রূপান্তরের অর্থে।
আধুনিক বাংলায় “ইনকিলাব” শব্দটি বিশেষত উর্দুভাষী সমাজের মাধ্যমে প্রবেশ করেছে। উর্দু কবিতা, গান ও রাজনৈতিক বক্তৃতায় এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি শব্দ। “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” (انقلاب زندہ باد) বাক্যটি তার একটি বিখ্যাত উদাহরণ, যার অর্থ “বিপ্লব চিরজীবী হোক” বা “বিপ্লবের জয় হোক”। এই স্লোগানটি উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের সময় ভারতবর্ষে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষত ভগত সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ প্রমুখ বিপ্লবীদের মুখে। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণার উৎস হিসেবেও এই শব্দটির ব্যবহার গভীর তাৎপর্যপূর্ণ।
বাংলাদেশের ইতিহাসেও “ইনকিলাব” শব্দটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে বিশ শতকের শুরু পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী, সমাজতান্ত্রিক ও ইসলামী আন্দোলনে “ইনকিলাব” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে পরিবর্তন, জাগরণ ও নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার অর্থে। পত্র-পত্রিকায়ও এই শব্দটি দেখা যায়— যেমন “দৈনিক ইনকিলাব” পত্রিকার নামেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যা সংবাদ জগতে পরিবর্তন ও জনগণের কণ্ঠস্বরের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও “ইনকিলাব” শব্দটি এক গভীর প্রেরণার প্রতীক। এটি শুধু অস্ত্রধারী বিপ্লব নয়, বরং চিন্তা, নীতি ও সামাজিক ন্যায়ের ক্ষেত্রেও এক নবজাগরণের আহ্বান। যেমন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় দেখা যায়, তিনি ইনকিলাব বা বিপ্লবের আহ্বান জানিয়েছেন অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে। তাঁর বিখ্যাত পঙক্তি— “আমি চির উন্নত শির” — আসলে সেই বিপ্লবী চেতনারই প্রকাশ।
অতএব, “ইনকিলাব” শব্দটি কেবল একটি আরবি শব্দ নয়; এটি একটি চেতনা, সংগ্রাম ও পরিবর্তনের প্রতীক। এর অর্থ সীমাবদ্ধ নয় কেবল রাজনৈতিক বিপ্লবে, বরং এটি সামাজিক, নৈতিক ও মানসিক পরিবর্তনের দিকেও ইঙ্গিত করে।
সংক্ষেপে বলা যায়, “ইনকিলাব” অর্থ বিপ্লব, যা অন্যায়, অমানবিকতা ও পুরোনো জড় প্রথার বিরুদ্ধে পরিবর্তনের আহ্বান জানায়। এটি এমন এক শব্দ, যা ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্য ও মানবমুক্তির প্রতীক হিসেবে মানবসমাজে চিরকাল প্রাসঙ্গিক থাকবে।
0
Updated: 2 weeks ago
'চোখের বালি' এর অর্থ কি?
Created: 6 days ago
A
চোখের পীড়া
B
শত্রু
C
চোখের দৃষ্টি ক্ষয়
D
কোনোটি নয়
‘চোখের বালি’ একটি প্রচলিত বাংলা প্রবাদ, যার অর্থ হলো শত্রু বা এমন কেউ, যাকে দেখলেই মনে বিরক্তি বা ঈর্ষা জাগে। এই প্রবাদটি সাধারণত এমন ব্যক্তিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যিনি কারও সুখ বা আনন্দে সহ্য করতে পারেন না এবং সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মনোভাব পোষণ করেন।
এই বাক্যাংশের উৎপত্তি এসেছে চোখে বালি পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে। যেমন চোখে বালি পড়লে অস্বস্তি, ব্যথা ও জ্বালা সৃষ্টি হয়, তেমনি জীবনে কিছু মানুষ থাকে যারা সর্বদা কষ্ট বা অস্বস্তির কারণ হয়। তাই প্রতীকী অর্থে ‘চোখের বালি’ বলতে এমন শত্রু বা বিরক্তিকর ব্যক্তিকেই বোঝানো হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
-
‘চোখের বালি’ শব্দগুচ্ছটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ‘বালি’ বোঝায় ক্ষুদ্র অথচ বিরক্তিকর কিছু, যা চোখে পড়লে অসহ্য যন্ত্রণা সৃষ্টি করে।
-
এই প্রবাদটি ব্যবহার করা হয় এমন পরিস্থিতিতে, যেখানে কেউ কারও জীবনে বিরক্তি, ঈর্ষা বা শত্রুতার কারণ হয়। যেমন—“ওই মেয়েটি আমার চোখের বালি”—অর্থাৎ সে এমন একজন, যার উপস্থিতি সহ্য হয় না।
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসের নামও রেখেছিলেন ‘চোখের বালি’, যেখানে এই রূপক অর্থটি গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। উপন্যাসে সম্পর্ক, ঈর্ষা, ভালোবাসা ও প্রতিশোধের জটিলতা এই নামের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
-
সাধারণভাবে, এই প্রবাদটি মানসিক বিরাগ বা ঈর্ষার প্রকাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কেউ অন্যের সৌন্দর্য, সাফল্য বা সুখ সহ্য করতে না পারলে, তাকে চোখের বালি বলা হয়।
-
এটি কখনও কখনও রাগ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে যেখানে আবেগের সংঘাত থাকে।
সবশেষে বলা যায়, ‘চোখের বালি’ এমন এক রূপক প্রবাদ, যা শত্রুতা, ঈর্ষা ও অসহ্যতার অনুভূতিকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করে। তাই এর প্রকৃত অর্থ ‘শত্রু’ বা এমন কেউ, যিনি কারও জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিত কষ্ট বা বিরক্তির কারণ হন।
0
Updated: 6 days ago
’দ্যুলোক’ শব্দের অর্থ –
Created: 2 months ago
A
আকাশ
B
বাতাস
C
পৃথিবী
D
পাতাল
সঠিক উত্তর: ক) আকাশ
দ্যু (সংস্কৃত ধাতু) শব্দের অর্থ হলো আলো, জ্যোতি বা আকাশ।
লোক মানে স্থান বা জগৎ।
অতএব দ্যুলোক শব্দের অর্থ দাঁড়ায়— আলোকময় জগৎ বা আকাশলোক।
দ্যুলোক বলতে দেবতাদের বাসস্থান (স্বর্গ/আকাশ) বোঝায়।
তাই এর অর্থ হলো আকাশ।
0
Updated: 2 months ago