সহজযান প্রসঙ্গে চর্যাপদের অন্তর্নিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেন কে?
A
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
ড. বিজয়চন্দ্র মজুমদার
C
রাহুল সাংকৃত্যায়ন
D
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত
উত্তরের বিবরণ
চর্যাপদ ও গবেষণা
-
চর্যাপদ: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন, যা বৈষ্ণব-বৌদ্ধ ধারার সঙ্গীতমালা।
-
ভাষা: চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয় ‘সন্ধ্যা’ বা ‘সান্ধ্য ভাষা’। কখনো স্পষ্ট, কখনো অস্পষ্ট। এজন্য একে ‘আলো-আঁধারি’ ভাষা বলা হয়।
-
ছন্দ: চর্যাপদের পদগুলি প্রাচীন ছন্দে রচিত, যা আধুনিক ছন্দের বিচারে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অধীনে বিবেচিত।
চর্যাপদ বিষয়ক গবেষণা:
-
ড. বিজয়চন্দ্র মজুমদার (১৯২০): চর্যাপদের ভাষা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা।
-
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৯২৬): তার গ্রন্থ ‘দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব দি বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ’-এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চর্যাপদের ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
অন্যান্য ভাষাবিজ্ঞানীরা সমর্থন করেছেন, যেমন: ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত, যারা চর্যাপদের ভাষা, বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব নিয়ে বিশদ গবেষণা করেছেন।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৯২৭): চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব বিশ্লেষণ।
-
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত (১৯৪৬): সহজযান প্রসঙ্গে চর্যাপদের অন্তর্নিহিত তত্ত্ব ব্যাখ্যা।
-
রাহুল সাংকৃত্যায়ন (বিহার): বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য, সহজযান ও চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা।

0
Updated: 1 day ago
সবচেয়ে বেশি চর্যাপদ পাওয়া গেছে কোন কবির?
Created: 1 month ago
A
লুইপা
B
শবরপা
C
ভুসুকুপা
D
কাহ্নপা
কাহ্নপা এবং চর্যাপদে কবিদের অবদান
-
চর্যাপদের কবিদের মধ্যে কাহ্নপা সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেছেন।
-
তিনি মোট ১৩টি পদ রচনা করেছেন। এই সংখ্যার কারণে কাহ্নপাকে চর্যাপদের প্রধান কবি এবং সিদ্ধাচার্যদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বলা হয়।
-
কাহ্নপা রচিত পদগুলো হলো: ৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৮, ১৯, ২৪, ৩৬, ৪০, ৪২ ও ৪৫। তবে ২৪ নং পদটি আজ পাওয়া যায়নি।
-
তাঁর পদগুলোতে দূরদর্শী সমাজচিত্র এবং নিপুণ কবিত্ব শক্তি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
-
চর্যাপদে কাহ্নপা বিভিন্ন নামে লিখেছেন, যেমন: কাহ্নিল, কাহ্নি, কৃষ্ণচর্য, কৃষ্ণবজ্রপাদ এবং কাহ্নু।
অন্য কবিদের অবদান:
-
ভুসুকুপা: চর্যাপদের দ্বিতীয় সর্বাধিক পদ রচনা করেছেন, মোট ৮টি পদ।
-
শবরপা: ২৮ ও ৫০ নং দুটি পদ রচনা করেছেন।
-
লুইপা: ১ ও ২৯ নং দুটি পদ রচনা করেছেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 1 month ago
চর্যাপদে কোন কবির পদে পঁউয়া খালের(পদ্মা খাল) নাম আছে?
Created: 1 month ago
A
ভুসুকুপা
B
কাহ্নপা
C
লুইপা
D
ডোম্বীপা
ভুসুকুপা এবং চর্যাপদ
-
ভুসুকুপা:
-
চর্যাগীতি রচনায় দ্বিতীয় স্থানের কবি
-
প্রকৃত নাম: শান্তিদেব (কিছু কিংবদন্তিতে ভুসুকুপা নামটি ছন্দ নাম হিসেবে ধরা হয়)
-
চর্যাপদে তাঁর ৮টি পদ সংরক্ষিত
-
-
বিখ্যাত পদ ও বিষয়বস্তু:
-
৪৯ নং পদ: পদ্মা নদী (পঁঊআ খাল), 'বঙ্গাল' দেশ ও 'বঙ্গালী' উল্লেখ
-
পঙ্ক্তি: "বাজ ণাব পাড়ী পঁউআ খালে বাহিউ। অদঅ বঙ্গাল দেশ লুড়িউ।"
-
-
৬ নং পদ: "আপনা মাংসে হরিণা বৈরী" – রচয়িতা: ভুসুকুপা
-
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা

0
Updated: 1 month ago
"কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল।" - চর্যাপদের এই পঙ্ক্তিটিতে “পাঞ্চ বি ডাল” দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
Created: 18 hours ago
A
পঞ্চতত্ত্ব
B
পঞ্চ প্রাণ
C
পঞ্চশর
D
পঞ্চ ইন্দ্রিয়
চর্যাপদের প্রথম পদ —
''কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডালচঞ্চল চীএ পইঠা কাল।'' রচয়িতা লুইপা। আধুনিক বাংলায় এর রূপান্তর:
''কায়া তরুর মত, পাঁচটি তার ডালচঞ্চল চিত্তে কাল প্রবেশ করেছে।।''
-
অন্তর্নিহিত ভাব:
• মানুষকে একটি গাছের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যার পাঁচটি শাখা হল পঞ্চ ইন্দ্রিয় (চোখ, কান, নাক, জিহ্বা, ত্বক)।
• এই পাঁচ ইন্দ্রিয় দ্বারা মানুষ দৈনন্দিন বস্তুজগতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে।
• চর্যাপদের গূঢ় ভাষায়:-
“তরু” = দেহ
-
“ডাল/শাখা” = ইন্দ্রিয়
-
“পাঞ্চ বি ডাল” = দেহের পাঁচটি ইন্দ্রিয়
-
-
লুইপা সম্পর্কিত তথ্য:
• প্রবীণ বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য ও চর্যাপদের কবি।
• মুহম্মদ শহীদুল্লাহ-এর অনুমান: ৭৩০–৮১০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে জীবিত ছিলেন।
• চর্যাপদে দুটি পদ লিখেছেন (১ ও ২৯ নং পদ)।

0
Updated: 18 hours ago