বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত (আধুনিক) কারা রচনা করেন?
A
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও সৈয়দ আলী আহসান
B
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও মুহম্মদ আব্দুল হাই
C
মুহম্মদ আব্দুল হাই, আনিসুজ্জামান ও আনোয়ার পাশা
D
মুহম্মদ আব্দুল হাই ও সৈয়দ আলী আহসান
উত্তরের বিবরণ
‘বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত’ (আধুনিক যুগ) গ্রন্থের রচয়িতা সৈয়দ আলী আহসান। তিনি মুহম্মদ আবদুল হাইয়ের সাথে মিলিয়ে এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেন।
কয়েক বছর পূর্বে কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের উদ্যোগে বাংলা সাহিত্যের ধারাবাহিক ইতিহাস রচনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগকে। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় খণ্ড সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
এ ইতিহাসের লেখক হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ মুহম্মদ আবদুল হাই ও করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ সৈয়দ আলী আহসান। গ্রন্থে আধুনিক যুগের বাংলা সাহিত্যের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে, যা বৃটিশ শাসনকালের শুরু থেকে পাকিস্তানোত্তর যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত।
0
Updated: 3 months ago
মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর রচনা কোনটি?
Created: 2 months ago
A
এইসব দিন রাত্রি
B
নূরলদীনের সারা জীবন
C
একাত্তরের দিনগুলি
D
সৎ মানুষের খোঁজে
একাত্তরের দিনগুলি
‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি স্মৃতিকথা গ্রন্থ, লিখেছেন বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক জাহানারা ইমাম। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।
জাহানারা ইমাম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার পুত্র রুমী ও স্বামীকে হারান। সেই সময় তার জীবন ছিল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ভয়-উদ্বেগে ঘেরা, তবু তার মনে ছিল দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্ন। সেই দুঃসহ নয় মাসের দৈনন্দিন ঘটনা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তার কর্মকাণ্ডের বর্ণনা তিনি লিখতেন ছোট চিরকুটে, ছিন্নপত্রে এবং সংকেতভঙ্গিতে।
গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি মর্মস্পর্শী ও শিহরণ জাগানো সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।
জাহানারা ইমাম
-
জন্ম: ১৯২৯, সুন্দরপুর, মুর্শিদাবাদ জেলা।
-
খ্যাতি: শহীদ জননী নামে পরিচিত।
-
সক্রিয় ভূমিকা: মুক্তিযুদ্ধ চেতনাকে বাস্তবায়ন এবং ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক।
-
অসুস্থতা ও মৃত্যু: ১৯৮১-এর দিকে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত, মৃত্যুহয় ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, আমেরিকার মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েটে।
অন্য গ্রন্থসমূহ:
-
সাতটি তারার ঝিকিমিকি
-
অন্যজীবন
-
বুকের ভিতর আগুন
-
নাটকের অবসান
-
নিঃসঙ্গ পাইন
-
প্রবাসের দিনগুলি
-
ক্যানসারের সঙ্গে বসবাস
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম
-
হুমায়ূন আহমেদ: প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’, বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়।
-
সৈয়দ শামসুল হক: কাব্যনাট্য ‘নূরলদীনের সারা জীবন’, যা রংপুরের কৃষক বিদ্রোহের নেতা নুরুলদীনের সামন্তবিরোধী সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে রচিত।
উৎস: বাংলাপিডিয়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago
'ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ' -গানটির রচয়িতা -
Created: 1 week ago
A
কাজী নজরুল ইসলাম
B
গোলাম মোস্তফা
C
জসীমউদ্দীন
D
আব্বাস উদ্দীন আহমদ
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং একজন কিংবদন্তি সাহিত্যিক, যিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতিতে বিশাল অবদান রেখে গেছেন। তাঁর রচিত "ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ" গানটি মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে উদযাপন ও আনন্দের এক অনন্য নিদর্শন। এই গানটি কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৩১ সালে রচনা করেন, যখন তাঁর শিষ্য শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহমদ তাঁর কাছে এটি রচনার অনুরোধ করেন। গানটি রমজান মাস শেষে ঈদের আনন্দের শুভেচ্ছা জানায় এবং মুসলমানদের ধর্মীয় দায়িত্বের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে।
গানটির কিছু মূল পংক্তি:
-
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ,
-
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।
-
তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ,
-
দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ।
এই গানটি শুধু একটি ধর্মীয় উত্সবের উদযাপন নয়, বরং মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতীক হিসেবেও কাজ করে।
কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে কিছু তথ্য:
-
তিনি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তাঁর ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।
-
বাংলা সাহিত্যে তিনি পরিচিত ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে।
-
তিনি আধুনিক বাংলা গানের জগতে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাত।
কাজী নজরুল ইসলামের রচিত সাহিত্যকর্ম:
-
কাব্যগ্রন্থ: অগ্নি-বীণা, সঞ্চিতা, চিত্তনামা, মরুভাস্কর, ফণি-মনসা, চক্রবাক এবং আরও অনেক।
-
উপন্যাস: বাঁধনহারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা।
-
গল্পগ্রন্থ: ব্যথার দান, রিক্তার বেদন, শিউলিমালা।
-
প্রবন্ধগ্রন্থ: যুগবাণী, রাজবন্দীর জবানবন্দী, দুর্দিনের যাত্রী, রুদ্রমঙ্গল।
তিনি বাংলা সাহিত্যে, গান এবং কবিতায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন এবং তাঁর কাজ আজও সবার হৃদয়ে চিরকালীন প্রভাব রেখে গেছে।
0
Updated: 1 week ago
'সংশপ্তক' কার রচনা?
Created: 3 months ago
A
মুনীর চৌধুরী
B
শহীদুল্লাহ কায়সার
C
জহির রায়হান
D
শওকত ওসমান
বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য উচ্চতায় স্থান পেয়েছে শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত উপন্যাস ‘সংশপ্তক’, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে। উপন্যাসটির নামের মধ্যেই রয়েছে এর মূল দর্শন—“সংশপ্তক”
অর্থাৎ এমন যোদ্ধা যারা জীবন-মরণের শপথে অবিচল থেকে লড়াই চালিয়ে যায়। এই শব্দার্থকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এক বিশাল পরিসরের কাহিনি।
সংশপ্তক উপন্যাসটি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগের সময় থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলনের পূর্ব পর্যন্ত পূর্ববাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে উপজীব্য করে রচিত। বাংলার মানুষের জীবনে ঘটতে থাকা রূপান্তর, সংগ্রাম, সংকট, আশা ও অস্থিরতা—সবকিছুরই এক বাস্তব ও প্রাণবন্ত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসে। এজন্যই একে যথার্থভাবে একটি “মহাকাব্যিক উপন্যাস” বলা হয়ে থাকে।
এই উপন্যাসে উঠে এসেছে হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত জীবনধারা, অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী চিন্তাধারা, আর সেই সঙ্গে দাঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, সাম্প্রদায়িকতা, রাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব—সবকিছুই নিপুণভাবে আঁকা হয়েছে।
উপন্যাসের উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ
-
রাবেয়া খাতুন (রাবু) – উপন্যাসের প্রধান নারীচরিত্র, সংগ্রামী চেতনাধারার প্রতীক।
-
জাহেদ – রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক এক যুবক।
-
সেকেন্দার, মালু, হুরমতি, লেকু, রমজান, রামদয়াল – এই সব চরিত্রগুলো উপন্যাসে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে উঠে এসেছে।
শহীদুল্লাহ কায়সার ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন প্রভাবশালী ঔপন্যাসিক। তাঁর লেখায় যেমন রয়েছে বাস্তবতা, তেমনি রয়েছে ইতিহাস, সমাজ ও মানবচেতনার গভীর অনুসন্ধান। তিনি সমাজের নানা সংকট, সংগ্রাম ও পরিবর্তনের চিত্র সাহসিকতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হলো
-
সারেং বৌ
-
সংশপ্তক
-
কৃষ্ণচূড়া মেঘ
-
তিমির বলয়
-
দিগন্তে ফুলের আগুন
-
সমুদ্র ও তৃষ্ণা
-
চন্দ্রভানের কন্যা
-
কবে পোহাবে বিভাবরী (অসমাপ্ত)
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 3 months ago