বাংলা ভাষায় রচিত মধ্যযুগের কোনো লেখকের প্রথম এককগ্রন্থ কোনটি?
A
মনসামঙ্গল
B
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
C
বৈষ্ণব পদাবলী
D
সেক শুভোদয়া
উত্তরের বিবরণ
'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যটি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম কাব্য হিসেবে স্বীকৃত এবং এর লেখক হলো বড়ু চণ্ডীদাস। এটি বাংলা ভাষায় কোন লেখকের প্রথম এককগ্রন্থ। যেহেতু পুথির প্রথম দুটি এবং শেষপৃষ্ঠা পাওয়া যায়নি, তাই নাম ও কবির পরিচয় স্পষ্ট ছিল না; তবে কবির ভণিতায় 'চণ্ডীদাস' এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে 'বড়ু চণ্ডীদাস' লেখা থাকার কারণে তাঁকে এই গ্রন্থের কবি হিসেবে গৃহীত করা হয়েছে।
-
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) বসন্তরঞ্জন রায় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামে শ্রী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে পুথিটি আবিষ্কার করেন।
-
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে (১৩২৩ বঙ্গাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
-
কাব্যটি গীতি-আলেখ্য এবং রাধা-কৃষ্ণের প্রণয়লীলা এর বিষয়বস্তু।
-
প্রধান তিনটি চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি। চরিত্রের মধ্যে ঘাত-প্রতিঘাত, বাক-বিতণ্ডা, রাগ-দ্বেষ ইত্যাদি থাকায় কাব্যটি গতিশীল ও নাট্যরসসমৃদ্ধ।
-
এতে গীতিরসের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। কাব্যটি শৃঙ্গাররসপ্রধান এবং ঝুমুর গানের বৈশিষ্ট্যযুক্ত। এটি পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে রচিত।
-
কাব্যে মোট ১৩টি খণ্ড রয়েছে: জন্ম খণ্ড, তাম্বুল খণ্ড, দান খণ্ড, নৌকা খণ্ড, ভার খণ্ড, ছত্র খণ্ড, বৃন্দাবন খণ্ড, কালিয়দমন খণ্ড, যমুনা খণ্ড, হার খণ্ড, বাণ খণ্ড, বংশী খণ্ড ও বিরহ খণ্ড।
অন্যদিকে, বাংলা সাহিত্যে:
-
হলায়ুধ মিশ্র রচিত পীর মাহাত্ম্য-ব্যঞ্জক কাব্য 'সেক শুভোদয়া', যা অন্ধকার যুগের সাহিত্য নিদর্শন। এতে ২৫টি অধ্যায় রয়েছে। ১৩২০-২১ বঙ্গাব্দে মণীন্দ্রমোহন বসু ১৩টি পরিচ্ছেদ বঙ্গানুবাদসহ 'কায়স্থ' পত্রিকায় প্রকাশ করেন। সুকুমার সেনের সম্পাদনায় গ্রন্থটি প্রথম মুদ্রিত হয় ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে।
-
মনসামঙ্গল ও বৈষ্ণব পদাবলী কোনো একক লেখকের রচনা নয়; এগুলোতে একাধিক কবি ও ভণিতার পদ রয়েছে।
0
Updated: 1 month ago
’শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের অংশ নয় কোনটি?
Created: 1 month ago
A
নৌকা খণ্ড
B
হার খণ্ড
C
রাধা বিরহ
D
প্রণয় খণ্ড
“শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্যটি বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম কাব্য হিসেবে স্বীকৃত। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় এটি আবিষ্কার করেন এবং ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। কাব্যটির প্রাপ্তি, রচনা এবং চরিত্র ও কাঠামো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিম্নরূপ:
-
কাব্যের প্রথম দুটি এবং শেষ পৃষ্ঠা পাওয়া যায়নি, ফলে কবির নাম এবং কাব্যের পুরো নাম স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে কবির ভণিতায় চণ্ডীদাস এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বড়ু চণ্ডীদাস পাওয়া যাওয়ায়, গ্রন্থের কবি হিসেবে বড়ু চণ্ডীদাসকে গ্রহণ করা হয়।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন হলো গীতি-আলেখ্য, মূলত রাধা ও কৃষ্ণের প্রণয়লীলা এর বিষয়বস্তু। প্রধান চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি।
-
কাব্যের চরিত্রগুলোর মধ্যে ঘাত-প্রতিঘাত, বাক-বিতণ্ডা, রাগ-দ্বেষ ইত্যাদি রয়েছে, ফলে কাব্যটি গতিশীল ও নাট্যরসশীল হয়েছে।
-
এতে গীতিরসের উপস্থিতি লক্ষণীয়। কাব্যটি শৃঙ্গাররসপ্রধান এবং ঝুমুর গানের বৈশিষ্ট্য বহন করে। এটি পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে রচিত।
-
কাব্যে খণ্ডিতপদসহ মোট ৪১৮টি পদ রয়েছে। পুঁথিতে সংস্কৃত শ্লোক ১৬১টি অন্তর্ভুক্ত।
-
পুঁথির পাতার সংখ্যা ২২৬, অর্থাৎ পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৫২; এর মধ্যে ৪৫টি পৃষ্ঠা পাওয়া যায়নি, ফলে প্রাপ্ত পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪০৭।
-
পুঁথির লিপি তিন হাতের লেখা। ৪১৮টি পদের মধ্যে কবির ভণিতা আছে ৪০৯টি।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য মোট তের খণ্ডে বিভক্ত। খণ্ডগুলো হলো:
-
জন্মখণ্ড
-
তাম্বুলখণ্ড
-
দানখণ্ড
-
নৌকাখণ্ড
-
ভারখণ্ড
-
ছত্রখণ্ড
-
বৃন্দাবনখণ্ড
-
কালিয়দমনখণ্ড
-
যমুনাখণ্ড
-
হারখণ্ড
-
বাণখণ্ড
-
বংশীখণ্ড
-
রাধাবিরহ
-
-
লক্ষ্যণীয় যে, প্রণয় খণ্ড নামে কোন খণ্ড শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে নেই। তাই সঠিক উত্তর হলো প্রণয় খণ্ড।
0
Updated: 1 month ago
গঠনরীতিতে 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য মূলত-
Created: 2 months ago
A
পদাবলি
B
ধামালি
C
গ্রেমগীতি
D
নাট্যগীতি
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন: গঠন ও বৈশিষ্ট্য
গঠন ও রূপ
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মূলত মধ্যযুগীয় বাংলার একটি যাত্রাপালা রূপের কাব্য। এটি নাট্যগীতিকাব্যের স্বরূপে রচিত, অর্থাৎ গীত ও সংলাপের সমন্বয়ে নাট্যরসসমৃদ্ধ। কাব্যে গল্প বলার পাশাপাশি সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলোর অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। কবি কখনও নিজেই কাহিনির মধ্যে প্রবেশ করে বর্ণনা যোগ করেছেন, আবার কখনও সংস্কৃত শ্লোক ব্যবহার করে গল্পের সংযোগ স্থাপন করেছেন। এতে নাটকীয়তা বজায় রেখেই কাব্যিক সৌন্দর্য পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও আবিষ্কার
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম কাব্য হিসেবে পরিচিত।
-
১৯০৯ সালে বসন্তরঞ্জন রায় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে এর পুথি আবিষ্কার করেন।
-
প্রথম পৃষ্ঠায় কোনো নাম না থাকায় বসন্তরঞ্জন রায় পুথিটিকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামে ডাকেন। কখনও এটিকে শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামেও উল্লেখ করা হয়।
-
১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পুথিটিকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশ করে।
-
পুথির প্রথম দুটি এবং শেষ পৃষ্ঠা না পাওয়ায় কাব্যের সম্পূর্ণ নাম ও কবির পরিচয় নিশ্চিত নয়। তবে কবির ভণিতায় ‘চণ্ডীদাস’ এবং প্রায় সকল স্থানে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ পাওয়া যায়, তাই কবি হিসেবে বড়ু চণ্ডীদাসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিষয়বস্তু ও কাঠামো
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন গীতি-আলেখ্য রূপের কাব্য।
-
প্রধান বিষয়: রাধা-শ্রীকৃষ্ণের প্রণয়লীলা।
-
বিন্যস্ত: মোট ১৩ খণ্ডে ৪১৮টি পদ।
-
মূল চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা, বড়ায়ি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago
’শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যগ্রন্থের প্রথম খণ্ডের নাম কী?
Created: 1 month ago
A
নৌকাখণ্ড
B
বৃন্দাবন খণ্ড
C
জন্মখণ্ড
D
বংশী খণ্ড
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য কাব্যগ্রন্থ। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামে মল্লরাজগুরু বৈষ্ণব মহন্ত শ্রীনিবাসের দৌহিত্র শ্রী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘর থেকে এই পুথিটি আবিষ্কার করেন। গ্রন্থটি শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামেও পরিচিত। এর রচয়িতা ছিলেন বড়ু চণ্ডীদাস।
-
গ্রন্থের প্রধান তিনটি চরিত্র: কৃষ্ণ, রাধা ও বড়ায়ি।
-
এতে মোট ১৩টি খণ্ড রয়েছে।
-
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে (১৩২৩ বঙ্গাব্দ) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় এটি ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
-
কাব্যে রাধাকৃষ্ণ প্রেমকাহিনি বৈষ্ণব ভাবধারায় উপস্থাপিত হয়েছে।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকে মধ্যযুগীয় বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদাবলী কাব্য ধরা হয়।
-
কাব্যের ভাষা গ্রাম্য প্রাকৃতভাষার কাছাকাছি, যাতে প্রাচীন বাংলার ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত।
-
এ কাব্যের মাধ্যমে বাংলার লোকসংস্কৃতি, আঞ্চলিক জীবনধারা ও ধর্মীয় চেতনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের ১৩টি খণ্ড হলো—
-
জন্মখণ্ড
-
তাম্বুল খণ্ড
-
দানখণ্ড
-
নৌকাখণ্ড
-
ভারখণ্ড
-
ছত্রখণ্ড
-
বৃন্দাবন খণ্ড
-
কালিয়দমন খণ্ড
-
যমুনা খণ্ড
-
হার খণ্ড
-
বাণ খণ্ড
-
বংশী খণ্ড
-
বিরহ খণ্ড
0
Updated: 1 month ago