'পথের দাবি' উপন্যাসের রচয়িতা কে?
A
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
B
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
C
সত্যেন সেন
D
সুকান্ত ভট্টাচার্য
উত্তরের বিবরণ
'পথের দাবী' উপন্যাস
'পথের দাবী' হলো ভারতীয় লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি রাজনৈতিক উপন্যাস, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৬ সালে।
উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট ব্রহ্মদেশ, যেখানে কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছেন এক গুপ্ত বিপ্লবী দলের নায়ক সব্যসাচী। ইতিহাস ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সব্যসাচী চরিত্রে বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর ছায়া স্পষ্ট। বইটিতে ব্রিটিশ শাসনের তীব্র সমালোচনা এবং সশস্ত্র বিপ্লবের প্রতি গভীর সমর্থন প্রকাশ পেয়েছে।
প্রকাশের পরপরই সরকার কর্তৃক এটি নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে 'পথের দাবী' উৎকৃষ্ট সাহিত্যকর্ম কিনা তা নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে, তবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই উপন্যাস একটি প্রাণপ্রদীপের মতো কাজ করেছে।
উপন্যাসের সমাপ্তিতে লেখা ছিল —
“আমি বিপ্লবী, ভারতের স্বাধীনতাই আমার একমাত্র লক্ষ্য, আমার একমাত্র সাধনা।”
এই সংলাপটি ভারতীয় রাজনৈতিক ইতিহাসে এই গ্রন্থের গুরুত্বকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
'পথের দাবী' ধারাবাহিক রূপে প্রথম প্রকাশিত হয় 'বঙ্গবাণী' পত্রিকার ১৩২৯ সালের ফাল্গুন সংখ্যায়।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 3 months ago
"তারা তোমাদের ভোলেনি।" - কোন ধরনের বাক্য?
Created: 1 month ago
A
অনুজ্ঞাবাচক বাক্য
B
আবেগবাচক বাক্য
C
বিবৃতিবাচক বাক্য
D
কোনোটিই নয়
বক্তব্যের লক্ষ্য অনুযায়ী বাক্যকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিবৃতিবাচক, প্রশ্নবাচক, অনুজ্ঞাবাচক এবং আবেগবাচক বাক্য।
-
বিবৃতিবাচক বাক্য : যেসব বাক্যে সাধারণভাবে কোনো বিবরণ প্রকাশ পায়, সেগুলো বিবৃতিমূলক বাক্য। এগুলো ইতিবাচক বা নেতিবাচক উভয় রকম হতে পারে।
যেমন–-
আমরা রোজ বেড়াতে যেতাম।
-
তারা তোমাদের ভোলেনি।
-
-
প্রশ্নবাচক বাক্য : বক্তা কারও কাছ থেকে কিছু জানার জন্য যে ধরনের বাক্য বলে, সেগুলো প্রশ্নবাচক বাক্য।
যেমন–-
তোমার নাম কী?
-
সুন্দরবনকে কোন ধরনের বনাঞ্চল বলা হয়?
-
-
অনুজ্ঞাবাচক বাক্য : আদেশ, নিষেধ, অনুরোধ বা প্রার্থনা প্রকাশের জন্য অনুজ্ঞাবাচক বাক্য ব্যবহৃত হয়।
যেমন–-
আমাকে একটি কলম দাও।
-
তার মঙ্গল হোক।
-
-
আবেগবাচক বাক্য : হঠাৎ কিছু দেখে বা শুনে বিস্ময়, আনন্দ বা ভয় প্রকাশ করতে যে ধরনের বাক্য গঠিত হয়, তাকে আবেগবাচক বাক্য বলে।
যেমন–-
দারুণ! আমরা জিতে গিয়েছি।
-
অত উঁচু পাহাড়ে উঠে আমি তো ভয়েই মরি!
-
(উৎস:
0
Updated: 1 month ago
'অস্তিত্ববাদী' উপন্যাস কোনটি?
Created: 4 days ago
A
ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী
B
সংকর সংকীর্তন
C
সূর্যদীঘল বাড়ি
D
কাঁদো নদী কাঁদো
‘অস্তিত্ববাদী’ ধারা বাংলা সাহিত্যে একটি বিশেষ ধরনের চিন্তাভাবনার পরিচায়ক। অস্তিত্ববাদ মূলত মানুষের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, সংকট, এবং জীবন-উপলব্ধির জটিলতা নিয়ে লেখালিখি করে। এই ধারার সাহিত্য সাধারণত মানব জীবনের অবশ্যকতা, দায়বোধ, উদ্বেগ ও মানসিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। বাংলা সাহিত্যে এই ধারা তুলনামূলকভাবে আধুনিক যুগে প্রবেশ করে এবং বিশেষভাবে লেখকরা মানব জীবনের গভীর মানসিক সমস্যা ও নিজস্ব অভিজ্ঞতাকে উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসেন।
কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাসটি এই ধরণের পরিচয়ের সেরা উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে কয়েকটি মূল বিষয় তুলে ধরা যেতে পারে:
-
মানবিক দ্বন্দ্ব ও মানসিক জটিলতা: উপন্যাসের চরিত্রগুলো জীবনের নানা প্রতিকূলতা ও সংকটের মধ্যে নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। তারা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সমাজের প্রত্যাশার মধ্যে দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হয়।
-
উদ্বেগ ও বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি: অস্তিত্ববাদী সাহিত্যে সাধারণত চরিত্ররা জীবনের অর্থ খোঁজে এবং নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে। কাঁদো নদী কাঁদো-তে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনা এবং দার্শনিক পর্যবেক্ষণ স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
-
মানব জীবনের জটিল বাস্তবতা: উপন্যাসে কোনো রোমান্টিক বা আদর্শিক চিত্রায়ন নয়, বরং বাস্তবসম্মতভাবে মানুষ ও তার চারপাশের পৃথিবীর সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। এটি অস্তিত্ববাদী সাহিত্যিক চিন্তাভাবনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
-
ভাষা ও নির্মাণ: লেখকের ভাষা সরল হলেও গভীর। চরিত্রগুলোর অভ্যন্তরীণ ভাবনা এবং জীবনদর্শন পাঠকের কাছে দার্শনিক রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে।
অতএব, কাঁদো নদী কাঁদো শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, এটি মানুষের জীবনের অস্তিত্ব, সংকট ও মানসিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে নির্মিত একটি সাহিত্যকর্ম। এটি পাঠককে মানুষের অস্তিত্বের গভীরতা বোঝার সুযোগ দেয় এবং প্রতিটি চরিত্রের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের চিত্রায়ন করে। বাংলার আধুনিক উপন্যাসের মধ্যে এটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ এটি মানুষের অস্তিত্ব এবং তার সীমাবদ্ধতার চেতনাকে সুস্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাসটি একটি অস্তিত্ববাদী উপন্যাস, যা মানব জীবনের গভীর দার্শনিক ভাবনা, মানসিক দ্বন্দ্ব ও বাস্তবতা-ভিত্তিক অভিজ্ঞতাকে সাহিত্যের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। এটি পাঠককে শুধু গল্পের সঙ্গে পরিচয় করায় না, বরং জীবনের অবশ্যকতা, দায়বোধ ও স্বাধীনতার সীমা সম্পর্কে চিন্তা করতে প্ররোচিত করে।
0
Updated: 4 days ago
'আবদুল্লাহ' উপন্যাসের রচয়িতা কে?
Created: 3 months ago
A
মোহাম্মদ নজীবর রহমান
B
কাজী ইমদাদুল হক
C
শেখ ফজলুল করিম
D
মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ
● 'আবদুল্লাহ' উপন্যাস
-
'আবদুল্লাহ' হলো কাজী ইমদাদুল হক রচিত একটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস।
-
এটি প্রথমে 'মোসলেম ভারত' নামের একটি পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হতো। পরে, ১৯৩৩ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয়।
-
উপন্যাসটি লেখার সময়েই কাজী ইমদাদুল হকের মৃত্যু হলে, তাঁর রেখে যাওয়া খসড়া ব্যবহার করে কাজী আনোয়ারুল কাদির উপন্যাসটি শেষ করেন।
-
এই উপন্যাসে গ্রামীণ মুসলিম সমাজের পিরভক্তি, কুসংস্কার, পর্দাপ্রথা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মানবিক প্রতিবাদ তুলে ধরা হয়েছে।
-
যদিও এটি শিল্পের দিক থেকে খুব উঁচু মানের উপন্যাস নয়, তবুও এতে বাঙালি মুসলমান সমাজের পরিবর্তন ও অগ্রগতির চিত্র স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। তাই এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক।
● কাজী ইমদাদুল হক
-
কাজী ইমদাদুল হক জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮২ সালে খুলনা জেলায়।
-
তিনি মূলত ‘আবদুল্লাহ’ উপন্যাসের লেখক হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
-
এই উপন্যাসটির মাধ্যমেই তিনি একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসেবে স্বীকৃতি পান।
-
তাঁর সাহিত্যচর্চার মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি মুসলমান সমাজের উন্নয়ন।
-
তিনি ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’ (১৯১৮) প্রকাশনার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো:
-
আঁখিজল
-
মোসলেম জগতে বিজ্ঞানচর্চা
-
ভূগোল শিক্ষা প্রণালী (দুই খণ্ড)
-
নবীকাহিনী (প্রবন্ধ সংকলন)
-
কামারের কাণ্ড
-
আবদুল্লাহ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 3 months ago