'পদাবলী'র প্রথম কবি কে?
A
শ্রীচৈতন্য
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
জ্ঞানদাস
উত্তরের বিবরণ
পুথি সাহিত্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত একটি বিশেষ ধারা, যেখানে আরবি, ফারসি, উর্দু ও হিন্দি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়। এই সাহিত্যের বিকাশ ঘটে মূলত আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এবং এর রচয়িতা ও পাঠকগোষ্ঠী প্রধানত ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
‘পুথি’ শব্দটি এসেছে ‘পুস্তিকা’ থেকে, যা সাধারণভাবে যেকোনো গ্রন্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হলেও, এখানে এটি নির্দিষ্ট একটি সাহিত্যধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলা সাহিত্যের এক নির্দিষ্ট সময়ে, ভিন্ন ভাষার প্রভাব মিশিয়ে রচিত সাহিত্যকেই আমরা পুথি সাহিত্য নামে চিনি।
এই ধারার সূচনা করেন হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনুমানিক ১৬৮০–১৭৭০)। তাঁর রচিত আমীর হামজা কাব্যটি যুদ্ধ ও কাহিনিনির্ভর সাহিত্যের একটি দৃষ্টান্ত, যেখানে আরব বিশ্বের ইতিহাস ও পুরাণের ছাপ রয়েছে।
মধ্যযুগের প্রচলিত বাংলা সাহিত্যের ভাষার তুলনায় পুথি সাহিত্যের ভাষা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এতে বাংলা শব্দের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আরবি, ফারসি ও অন্যান্য বিদেশি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই সাহিত্যধারায় প্রায় ৩২% শব্দ ছিল বিদেশি উৎসের। ধারণা করা হয়, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা ও ২৪ পরগনার মুসলমানদের কথ্যভাষাই এর মূল ভিত্তি ছিল।
গরীবুল্লাহ ও তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এই ভাষারীতিতে আরও কয়েকটি কাব্য রচনা করেন এবং তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করে বহু মুসলমান কবি এই ধারা অনুসরণ করে সাহিত্য রচনা করেন। এসব সাহিত্যকর্মের পাঠক সাধারণত সমাজের সকল স্তরের মুসলমান ছিলেন, তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর প্রচলন ছিল সবচেয়ে বেশি।
এই সাহিত্যের ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। রেভারেন্ড জেমস লং এই ভাষাকে ‘মুসলমানী বাংলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং এই ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
এছাড়া, কলকাতার বটতলার ছাপাখানায় এগুলোর ব্যাপক মুদ্রণ ও প্রচার হওয়ায় এগুলিকে ‘বটতলার পুথি’ নামেও ডাকা হয়। গবেষকদের মতে, ভাষা ও বাক্যগঠনের দিক থেকে এ সাহিত্যকে প্রাথমিকভাবে ‘দোভাষী পুথি’ এবং পরবর্তীতে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago
‘বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ’ গ্রন্থের রচয়িতার নাম-
Created: 1 month ago
A
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
B
সুনীতিকুমার
C
বিদ্যাপতি
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ইংরেজিতে একটি বই লিখেন ‘বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ’ নামে। ইংরেজিতে এই গ্রন্থটির নাম হলো: ‘The Origin and Development of the Bengali Language’। সংক্ষেপে এটিকে বলা হয় ODBL এবং এটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত।

0
Updated: 1 month ago
মধুসূদন দত্ত রচিত 'বীরাঙ্গনা'-
Created: 3 months ago
A
মহাকাব্য
B
পত্রকাব্য
C
গীতিকাব্য
D
আখ্যানকাব্য
‘বীরাঙ্গনা কাব্য’
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ একটি পত্রকাব্য, যা বাংলা সাহিত্যে এই ধরনের প্রথম রচনা।
-
এটি ১৮৬২ সালে প্রকাশিত হয়।
-
এই কাব্যগ্রন্থটি রোমান কবি ওভিড-এর ‘Heroides’ কাব্যের অনুসরণে রচিত হয়েছে।
-
এতে মোট ১১টি চিঠির আকারে কবিতা রয়েছে, যেখানে পৌরাণিক নারীরা আধুনিক চেতনায় নিজেদের প্রেম, আবেগ ও কামনার কথা ব্যক্ত করেছে।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
-
তিনি ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ও সনেটের প্রবর্তক হিসেবে তিনি প্রসিদ্ধ।
-
প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রয়োগ করেন তাঁর নাটক ‘পদ্মাবতী’-তে (দ্বিতীয় অঙ্ক, দ্বিতীয় গর্ভাঙ্কে)।
-
অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাব্যগ্রন্থ হলো ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’।
-
তাঁর রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘The Captive Lady’ (ইংরেজিতে রচিত)।
📖 তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ:
-
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য
-
মেঘনাদবধ কাব্য
-
ব্রজাঙ্গনা কাব্য
-
বীরাঙ্গনা কাব্য (পত্রকাব্য)
-
চতুর্দশপদী কবিতাবলী
📚 উল্লেখযোগ্য গদ্য অনুবাদ:
-
‘হেক্টরবধ’ (গদ্যে রচিত অনুবাদ)
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা - ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 3 months ago
'পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল'- পংক্তির রচয়িতা কে?
Created: 1 month ago
A
মদনমোহন তর্কালংকার
B
রামনারায়ণ তর্করত্ন
C
বিহারীলাল চক্রবর্তী
D
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
• 'পাখী সব করে রব রাতি পোহাইল' - পঙ্ক্তিটির রচয়িতা মদনমোহন তর্কালঙ্কার ।
------------------------------
• মদনমোহন তর্কালঙ্কার:
- কবি, সমাজসেবক মদনমোহন তর্কালঙ্কার পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিল্বগ্রামে ১৮১৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পারিবারিক উপাধি ‘চট্টোপাধ্যায়’ হলেও প্রাপ্ত উপাধি ‘তর্কালঙ্কার’ হিসেবেই তিনি সুপরিচিত।
- মদনমোহন বিদ্যাসাগরের সহযোগিতায় ‘সংস্কৃত-যন্ত্র’ (১৮৪৭) নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকে ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যটি সর্বপ্রথম গ্রন্থাকারে মুদ্রিত হয়।
- বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় সহযোগিতা দান করেন।
মদনমোহনের মৌলিক কাব্যগ্রন্থ
- রসতরঙ্গিণী (১৮৩৪) ও
- বাসবদত্তা (১৮৩৬) ।
- তিন খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর শিশু শিক্ষা (১৮৪৯ ও ১৮৫৩) শিশুদের উপযোগী একটি অনন্যসাধারণ গ্রন্থ; ‘পাখী সব করে রব রাতি পোহাইল’ শিশুপাঠ্য এই বিখ্যাত কবিতাটি তাঁরই রচনা।
- মদনমোহন সংস্কৃত ভাষায় রচিত বেশ কয়েকখানি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন। সেগুলির মধ্যে সংবাদতত্ত্বকৌমুদী, চিন্তামণিদীধিতি, বেদান্তপরিভাষা, কাদম্বরী, কুমারসম্ভব ও মেঘদূত প্রধান।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago