মীর মশাররফ হোসেন সম্পর্কে কোন তথ্যটি যথার্থ নয়?
A
তিন খণ্ডে 'বিষাদ-সিন্ধু' রচনা করেন
B
নিজের জীবনী রচনা করেন
C
জমিদারি দেখাশোনার কাজ করেছেন
D
বিবি কুলসুম তাঁর প্রথম স্ত্রী
উত্তরের বিবরণ
মীর মশাররফ হোসেন একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সমাজচিন্তক, যিনি বিষাদ-সিন্ধু উপন্যাস, আত্মজীবনীমূলক রচনা ও জমিদারি পরিচালনার কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর জীবন ও সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে মূল তথ্যগুলো নিম্নরূপ:
তিন খণ্ডে ‘বিষাদ-সিন্ধু’ রচনা করেছেন
-
‘বিষাদ-সিন্ধু’ (১৮৮৫–১৮৯১) ইতিহাসভিত্তিক একটি উপন্যাস।
-
হাসান ও হোসেনের সঙ্গে দামেস্ক অধিপতি মাবিয়ার একমাত্র পুত্র এজিদের কারবালা প্রান্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং ইমাম হাসান-হোসেনের করুণ মৃত্যু কাহিনি এতে বর্ণিত।
-
গ্রন্থে ঐতিহাসিক সত্যতা থাকলেও ইতিহাসের অন্ধ অনুসরণ করা হয়নি।
-
উপন্যাসটি তিনটি পর্বে সম্পন্ন হয়েছে: ‘মহরম পর্ব্ব’ (১৮৮৫), ‘উদ্ধার পর্ব্ব’ (১৮৮৭), ‘এজিদ-বধ পর্ব্ব’ (১৮৯১)।
-
মোট ৬৩টি অধ্যায় নিয়ে উপন্যাসটি লেখা হয়েছে, যার মধ্যে উপক্রমণিকা ও উপসংহার অন্তর্ভুক্ত।
• নিজের জীবনী রচনা করেছেন:
-
‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’ (১৮৯০): লেখকের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ইতিহাস, সমসাময়িক ঘটনা এবং কিছু কাল্পনিক উপাদান মিশিয়ে আত্মজীবনীমূলক উপস্থাপনা।
-
‘কুলসুম জীবনী’ (১৯১০): দ্বিতীয় স্ত্রী বিবি কুলসুমকে কেন্দ্র করে রচিত, যেখানে তার জীবন ও চরিত্রের বিস্তারিত বর্ণনা আছে।
-
‘গাজী মিয়াঁর বস্তানী’: কর্মজীবনভিত্তিক আত্মজীবনীমূলক রচনা, সমাজের অন্যায়, দুর্নীতি এবং মানুষের নৈতিক অধঃপতন নিয়ে তীব্র ব্যঙ্গাত্মক সমালোচনা। লেখক নিজেকে ‘ভেড়াকান্ত’ নামে উল্লেখ করেছেন।
• জমিদারি দেখাশোনার কাজ করেছেন:
-
মীর মশাররফ হোসেন পারিবারিক জমিদারি ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে যুক্ত ছিলেন, যা তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
• দাম্পত্য জীবন ও বিবি কুলসুম:
-
কুলসুম তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী, প্রথম স্ত্রীর নাম আজিজননেহার।
-
প্রথম বিবাহ অশান্ত ও অসুখী ছিল। বিবি কুলসুমের সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের ফলে ১২৮১ সালের পৌষ মাসে বিয়ে হয়।
-
দ্বিতীয় বিবাহ আত্মীয়স্বজন ও প্রথম স্ত্রী মেনে নেননি; তবে কুলসুমের আগমন মশাররফের জীবনে নতুন সুখ, অনুপ্রেরণা ও সৃজনশীলতা বয়ে এনেছিল।

0
Updated: 9 hours ago
'হিতকরী' পত্রিকা'র সম্পাদক কে?
Created: 4 weeks ago
A
মীর মশাররফ হোসেন
B
শেখ আবদুর রহিম
C
আহমদ ছফা
D
কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য
‘হিতকরী’ পত্রিকা
-
‘হিতকরী’ পত্রিকা ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়া থেকে মীর মশাররফ হোসেনের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
-
পরবর্তীকালে এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোসলেম উদ্দীন খান।
-
এই পত্রিকায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হতো—
-
বাঙালি মুসলমানদের মাতৃভাষা বাংলাচর্চা, এবং
-
হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা।
-
অন্য উল্লেখযোগ্য পত্রিকা ও সম্পাদকগণ
-
হিতবাদী → কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য
-
সুধাকর → শেখ আবদুর রহিম
-
স্বদেশ → আহমদ ছফা
উৎস:
১) বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা
২) বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 4 weeks ago
নিচের কোনটি মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম-মৃত্যু সাল?
Created: 1 month ago
A
১৮৪৭-১৯১১
B
১৮৫২-১৯১২
C
১৮৫৭-১৯১১
D
১৮৪৭-১৯১২
মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭–১৯১১)
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন একজন বিখ্যাত ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ই নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ছাত্রজীবনেই তিনি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হন। সে সময় তিনি ‘সংবাদ প্রভাকর’ এবং ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ নামক পত্রিকায় মফঃস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করতেন। এখান থেকেই তার সাহিত্যিক জীবনের সূচনা হয়। ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ ছিলেন তার সাহিত্যজীবনের প্রথম অনুপ্রেরণা ও গুরু।
তিনি নিজেও ‘আজিজননেহার’ ও ‘হিতকরী’ নামে দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
মীর মশাররফ হোসেন বঙ্কিমচন্দ্র যুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ গদ্যশিল্পী হিসেবে পরিচিত। তিনি উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথপ্রদর্শক বলেও গণ্য হন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম
✅ নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমিদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
✅ প্রহসন (হাস্যরসাত্মক নাট্যরচনা)
-
টালা অভিনয়
-
এর উপায় কী
-
ফাঁস কাগজ
-
ভাই ভাই, এই তো চাই
✅ উপন্যাস
-
বিষাদ-সিন্ধু (তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস)
✅ আত্মজীবনীমূলক রচনা
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
নোট: তার মৃত্যুর সাল অনেক বইয়ে ১৯১১ উল্লেখ করা হলেও বাংলাপিডিয়াতে এটি ১৯১২ সাল বলা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য

0
Updated: 1 month ago
উদাসী বাউলের জীবনদর্শনের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় মীর মশাররফ হোসেনের কোন রচনায়?
Created: 1 day ago
A
উদাসীন পথিকের মনের কথা
B
বেহুলা গীতাভিনয়
C
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
D
বসন্তকুমারী
‘গাজী মিয়াঁর বস্তানী’ আত্মজৈবনিক উপন্যাস
-
রচয়িতা: মীর মশাররফ হোসেন
-
প্রকৃতি: আত্মজৈবনিক ও উপন্যাসজাতীয় রস-রচনা।
-
প্রকাশ: প্রথম অংশ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে। দ্বিতীয় অংশ পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়নি; এর অংশসমূহ তাঁর ‘আমার জীবনী’-তে মুদ্রিত।
-
ছদ্মনাম: প্রকাশক হিসেবে লেখা হয়েছে ‘উদাসীন পথিক’।
-
বিষয়বস্তু:
-
উদাসী বাউলের জীবনদর্শনের প্রভাব।
-
তৎকালীন সমাজের অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি, মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ও বর্বর আচরণ।
-
উপন্যাসে প্রধান ঘটনা: দুই বিধবা মহিলা, সোনাবিবি ও মনিবিবি’র জমিদার দ্বন্দ্ব।
-
চরিত্র ও স্থান: অভিনব নামকরণ যেমন—অরাজকপুর, যমদ্বার, নচ্ছারপুর, পয়জারন্নেসা, সবলোট চৌধুরী, ভেড়াকান্ত, জয়ঢাক। ভেড়াকান্ত চরিত্রে লেখকের নিজের ছায়াপাত রয়েছে।
-
-
ব্যঙ্গরসের ব্যবহার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
-
অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় মন্তব্য: “গাজী মিয়াঁর বস্তানী একখানি বিচিত্র সমাজচিত্র, সুশোভিত, সুলিখিত উপন্যাস।”
মীর মশাররফ হোসেনের অন্যান্য রচনাসমূহ
-
নাটক: বসন্তকুমারী, জমীদার দর্পণ, বেহুলা গীতাভিনয়
-
উপন্যাস: বিষাদ-সিন্ধু
-
আত্মজীবনীমূলক রচনা: উদাসীন পথিকের মনের কথা, গাজী মিয়াঁর বস্তানী, আমার জীবনী, কুলসুম জীবনী

0
Updated: 1 day ago