A
১৮১৯ সালে
B
১৮২৯ সালে
C
১৮৩৯ সালে
D
১৯৪৯ সালে
উত্তরের বিবরণ
সতীদাহ প্রথা: ইতিহাস ও বিলুপ্তির পথচলা
সতীদাহ প্রথা ছিল হিন্দু সমাজের একটি নিষ্ঠুর এবং অমানবিক রীতি, যেখানে সদ্য বিধবা নারীকে জোরপূর্বক স্বামীর চিতায় আত্মাহুতি দিতে বাধ্য করা হতো। ধর্মীয় ও সামাজিক আবরণে এই প্রথাটি মূলত নারীর প্রতি সহিংসতা এবং একধরনের সামাজিক হত্যাকাণ্ড হিসেবেই পরিগণিত।
এই নির্মম প্রথার বিরুদ্ধে প্রথম সক্রিয় অবস্থান নেন মিশনারি উইলিয়াম কেরি। ১৭৯৯ সালে তিনি গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলির কাছে এ প্রথা বন্ধের আবেদন জানান। পরবর্তী সময়ে, ১৮১২ সালে, সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় এ প্রথার বিরুদ্ধে সুসংগঠিত সামাজিক আন্দোলন শুরু করেন। তাঁর উদ্যোগে বিষয়টি ক্রমে গুরুত্ব পেতে থাকে।
১৮২৮ সালে বাংলার গভর্নর হিসেবে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক নিযুক্ত হন। রামমোহন রায় তাঁর কাছে সতীদাহ নিষিদ্ধকরণের দাবি জানান এবং বেন্টিঙ্ক রামমোহনের যুক্তিসমূহ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন। অবশেষে, ব্রিটিশ শাসনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করা হয়, যা এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
পরবর্তী সময়ে, ১৮৩২ সালে প্রিভি কাউন্সিল রক্ষণশীল হিন্দুদের আপিল খারিজ করে আইনটির বৈধতা বহাল রাখে। এই ঐতিহাসিক জয়কে স্বীকৃতি জানিয়ে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর রামমোহন রায়কে “রাজা” উপাধি প্রদান করেন। যদিও আইনিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, বাস্তবিকভাবে পুরো ভারত থেকে সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত হতে আরও প্রায় তিন দশক সময় লেগে যায়।
তথ্যসূত্র:
১. প্রথম আলো
২. ইতিহাস প্রথম পত্র, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 2 weeks ago