'তুরস্ক-ভ্রমণ' কার লেখা?
A
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
B
সৈয়দ মুজতবা আলী
C
আবু জাফর শামসুদ্দীন
D
শামসুদ্দীন আবুল কালাম
উত্তরের বিবরণ
সঠিক উত্তর হলো ক) ইসমাইল হোসেন সিরাজী। ‘তুরস্ক ভ্রমণ’ গ্রন্থটি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী রচিত একটি ভ্রমণকাহিনি। তিনি ১৯১০ সালে বঙ্গীয় প্রতিনিধি হিসেবে তুরস্ক ভ্রমণ করেন এবং সেই অভিজ্ঞতাগুলো এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।
গ্রন্থটি তৎকালীন তুরস্কের সংস্কৃতি, সমাজ ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এবং এটি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে একটি।
• সাহিত্যিক সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
-
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ছিলেন লেখক, বাগ্মী ও কৃষক নেতা।
-
তিনি ১৮৮০ সালের ১৩ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
-
জন্মস্থানের কারণে তিনি নামের সঙ্গে ‘সিরাজী’ উপাধি যুক্ত করেন।
-
সিরাজগঞ্জে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
-
জমিদার ও মহাজন বিরোধী আন্দোলনে কৃষকদের সংগঠিত করেছেন।
-
তিনি ১৯৩১ সালের ১৭ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
• রচিত কাব্যগ্রন্থ:
-
অনল প্রবাহ
-
আকাঙ্ক্ষা
-
উচ্ছ্বাস
-
উদ্বোধন
-
নব উদ্দীপনা
-
স্পেন বিজয় কাব্য
• রচিত উপন্যাস:
-
রায়নন্দিনী
-
তারা-বাঈ
-
ফিরোজা বেগম
-
নূরুদ্দীন
• অন্যান্য অপশন বিশ্লেষণ:
-
(খ) সৈয়দ মুজতবা আলী: ‘দেশে বিদেশে’ নামে ভ্রমণকাহিনি রচনা করেছেন, যা কাবুলে অবস্থানের অভিজ্ঞতা ও অন্তরঙ্গ উপলব্ধি ভিত্তিক।
-
(গ) আবু জাফর শামসুদ্দীন: ‘অল্পদর্শী’ ছদ্মনামে কলাম লিখতেন। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে আছে ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, সংকর সংকীর্তন।
-
(ঘ) শামসুদ্দীন আবুল কালাম: কথাশিল্পী হিসেবে পরিচিত, গল্প ও উপন্যাস রচনা করেছেন। উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো: গল্পগ্রন্থ অনেক দিনের আশা, ঢেউ, পথ জানা নাই, শাহের বানু, পুঁই ডালিমের কাব্য; উপন্যাস: আলমনগরের উপকথা, কাশবনের কন্যা, কাঞ্চনমালা, কাঞ্চনগ্রাম।

0
Updated: 9 hours ago
মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর রচনা কোনটি?
Created: 1 month ago
A
এইসব দিন রাত্রি
B
নূরলদীনের সারা জীবন
C
একাত্তরের দিনগুলি
D
সৎ মানুষের খোঁজে
একাত্তরের দিনগুলি
‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি স্মৃতিকথা গ্রন্থ, লিখেছেন বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক জাহানারা ইমাম। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।
জাহানারা ইমাম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার পুত্র রুমী ও স্বামীকে হারান। সেই সময় তার জীবন ছিল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ভয়-উদ্বেগে ঘেরা, তবু তার মনে ছিল দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্ন। সেই দুঃসহ নয় মাসের দৈনন্দিন ঘটনা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তার কর্মকাণ্ডের বর্ণনা তিনি লিখতেন ছোট চিরকুটে, ছিন্নপত্রে এবং সংকেতভঙ্গিতে।
গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি মর্মস্পর্শী ও শিহরণ জাগানো সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।
জাহানারা ইমাম
-
জন্ম: ১৯২৯, সুন্দরপুর, মুর্শিদাবাদ জেলা।
-
খ্যাতি: শহীদ জননী নামে পরিচিত।
-
সক্রিয় ভূমিকা: মুক্তিযুদ্ধ চেতনাকে বাস্তবায়ন এবং ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক।
-
অসুস্থতা ও মৃত্যু: ১৯৮১-এর দিকে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত, মৃত্যুহয় ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, আমেরিকার মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েটে।
অন্য গ্রন্থসমূহ:
-
সাতটি তারার ঝিকিমিকি
-
অন্যজীবন
-
বুকের ভিতর আগুন
-
নাটকের অবসান
-
নিঃসঙ্গ পাইন
-
প্রবাসের দিনগুলি
-
ক্যানসারের সঙ্গে বসবাস
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম
-
হুমায়ূন আহমেদ: প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’, বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়।
-
সৈয়দ শামসুল হক: কাব্যনাট্য ‘নূরলদীনের সারা জীবন’, যা রংপুরের কৃষক বিদ্রোহের নেতা নুরুলদীনের সামন্তবিরোধী সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে রচিত।
উৎস: বাংলাপিডিয়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 1 month ago
'আবোল-তাবোল' কার লেখা?
Created: 2 months ago
A
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী
B
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
C
সুকুমার রায়
D
সত্যজিৎ রায়
'আবোল-তাবোল'-এর রচয়িতা সুকুমার রায়
বাংলা শিশুসাহিত্যের এক অনন্য নাম সুকুমার রায়। তিনি ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ ও প্রযুক্তিনিপুণ ব্যক্তিত্ব। এই বিশিষ্ট রায় পরিবারের আদি নিবাস ছিল ময়মনসিংহ জেলার মসুয়া গ্রামে।
সুকুমার রায় শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন ব্যঙ্গ-রসিকতার এক নিপুণ কারিগর। তাঁর পুত্র সত্যজিৎ রায় পরবর্তীতে বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার হিসেবে অস্কার লাভ করেন।
সাহিত্যকর্মসমূহ:
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্ম মূলত কিশোর ও শিশু পাঠকদের জন্য হলেও প্রাপ্তবয়স্করাও তাঁর রচনায় বিমোহিত হন।
কবিতা সংকলন:
-
আবোল-তাবোল (ব্যঙ্গ ও কল্পনাপ্রবণ ছড়ার এক অমর সংকলন)
-
খাই খাই (খাবার নিয়ে মজার ছড়াসমূহ)
গল্প ও সংকলন:
-
হযবরল – এক স্বপ্নময় ও রহস্যঘেরা গল্প
-
পাগলা দাশু – কৌতুক ও ব্যঙ্গ-রসের সংমিশ্রণে ভরপুর একটি গল্প সংকলন
নাট্যকর্ম:
-
চলচিত্তচঞ্চরী – সমাজ ও মনস্তত্ত্বভিত্তিক নাটক
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা:
-
অবাক জলপান
-
লক্ষণের শক্তিশেল
-
হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি
-
ঝালাপালা ও অন্যান্য নাটক
-
বহুরূপী
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্মে রস, ছন্দ, ব্যঙ্গ ও কল্পনার এক অপরূপ মিশ্রণ রয়েছে যা বাংলা সাহিত্যে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও প্রিয়।
উৎস:
ড. সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা গ্রন্থ এবং ‘হ-য-ব-র-ল’ গ্রন্থের ভূমিকা।

0
Updated: 2 months ago
'প্রভাবতী সম্ভাষণ' কার রচনা?
Created: 2 months ago
A
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
C
রামমোহন রায়
D
কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রভাবতী সম্ভাষণ: বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রথম মৌলিক রচনা
বাংলা গদ্য সাহিত্যে এক অনন্য সংযোজন হলো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘প্রভাবতী সম্ভাষণ’। এটি কেবল বাংলা ভাষার প্রথম মৌলিক গদ্য রচনাই নয়, বরং একটি গভীর শোকগাথাও, যা লেখকের মনের আবেগের নিখুঁত প্রতিফলন। প্রিয় বন্ধু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা প্রভাবতীর অকাল মৃত্যু বিদ্যাসাগরের মনে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল, তারই আবেগঘন বহিঃপ্রকাশ এই রচনাটি।
ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে, প্রভাবতীর মৃত্যু বিদ্যাসাগরকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়, এবং সেই বেদনাই তাঁকে এ লেখাটি রচনার প্রেরণা দেয়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর: বাংলা নবজাগরণের অগ্রপথিক
-
জন্ম: ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।
-
মৃত্যু: ২৯ জুলাই ১৮৯১, কলকাতায়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
-
তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ছিল ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’ (১৮৪৭), যা বাংলা গদ্য রচনায় এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে। এই বইতেই তিনি বাংলা ভাষায় প্রথমবারের মতো যতি বা বিরাম চিহ্নের ব্যবহার প্রবর্তন করেন।
-
‘প্রভাবতী সম্ভাষণ’ তাঁর রচিত এমন এক মৌলিক গ্রন্থ, যা বাংলা গদ্যের আদিতে মানবিক আবেগ ও ভাষার সৌকর্যের মেলবন্ধন ঘটায়।
-
তাঁর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘ব্রজবিলাস’ এবং ‘রত্নপরীক্ষা’।
তথ্যসূত্র:‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ - ড. সৌমিত্র শেখর, ‘বাংলাপিডিয়া’

0
Updated: 2 months ago