কোন মঙ্গলকাব্যে ঐতিহাসিক চরিত্র আছে?
A
মনসামঙ্গল
B
চণ্ডীমঙ্গল
C
অন্নদামঙ্গল
D
ধর্মমঙ্গল
উত্তরের বিবরণ
সঠিক উত্তর হলো গ) অন্নদামঙ্গল। এই কাব্যে ঐতিহাসিক চরিত্র যেমন মানসিংহ এবং ভবানন্দকে প্রধান চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা উভয়েই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যুক্ত, যদিও কাব্যে কিছুটা কল্পনার সংযোজন রয়েছে।
-
মানসিংহ: তিনি ছিলেন মুঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি এবং বাংলায় বহু অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। কাব্যের মানসিংহ-ভবানন্দ খণ্ডে তাঁর কাহিনি ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে মিশে বর্ণিত হয়েছে।
-
ভবানন্দ: ভবানন্দ মজুমদার বর্ধমানের ঐতিহাসিক জমিদার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত একটি চরিত্র। যদিও কাব্যে তাঁর চরিত্র আংশিকভাবে কল্পিত, তবুও ঐতিহাসিক ভিত্তি বিদ্যমান।
-
কাব্যের দ্বিতীয় খণ্ডে মানসিংহের বাংলায় আগমন, প্রতাপাদিত্য দমন এবং বীরসিংহ সম্পর্কিত ঘটনাবলি বর্ণিত হয়েছে, যা বাস্তব ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই কারণে, কাব্যে ঐতিহাসিক চরিত্রের উপস্থিতি স্পষ্ট।
অন্নদামঙ্গল কাব্য সম্পর্কিত তথ্য
-
নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর এই কাব্য রচনা করেন।
-
ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলো অন্নদামঙ্গল (১৭৫২-৫৩ সালে রচিত)।
-
এই কাব্যের বৈশিষ্ট্য হলো ছন্দ ও অলঙ্কারের দক্ষ প্রয়োগ।
-
অধ্যাপক অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন: “অন্নদামঙ্গলকাব্য অষ্টদশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্য, সমগ্র বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের অন্যতম।”
-
কাব্যটি ৩টি খণ্ডে বিভক্ত: শিবনারায়ণ, কালিকামঙ্গল এবং মানসিংহ-ভবানন্দ খণ্ড।
প্রধান চরিত্রসমূহ
-
মানসিংহ
-
ভবানন্দ
-
বিদ্যাসুন্দর
-
মালিনী
-
ঈশ্বরী পাটনী প্রমুখ
বিখ্যাত পঙ্ক্তি
-
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।
-
মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।
-
হাভাতে যদ্যপি চায় সাগর শুকায়ে যায়।
-
নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়?
-
না রবে প্রাসাদগুণ না হবে রসাল, অতএব কহি ভাষা যাবনী মিশাল।
-
বড়র পিরীতি বালির বাঁধ! ক্ষণে হাতে দড়ি, ক্ষনেকে চাঁদ।
অন্যান্য অপশনের বিশ্লেষণ
-
মনসামঙ্গল: দেবী মনসার পূজা ও চাঁদ সদাগরের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এটি পৌরাণিক ও কাল্পনিক; ঐতিহাসিক চরিত্র নেই।
-
চণ্ডীমঙ্গল: দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য এবং কালকেতু-ফুল্লরার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এটি পৌরাণিক ও লোককথা নির্ভর; ঐতিহাসিক চরিত্র নেই।
-
ধর্মমঙ্গল: ধর্মঠাকুরের নামে রচিত। এটি দুটি পালায় বিভক্ত—রাজা হরিশ্চন্দ্রের গল্প এবং লাউসেনের গল্প।

0
Updated: 9 hours ago
মনসা দেবীকে নিয়ে লেখা বিজয়গুপ্তের মঙ্গলকাব্যের নাম কী?
Created: 1 week ago
A
মনসামঙ্গল
B
মনসাবিজয়
C
পদ্মপুরাণ
D
পদ্মাবতী
মনসা দেবীকে কেন্দ্র করে লেখা মনসামঙ্গল কাব্যগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রচনা হলো পদ্মপুরাণ, যা কবি বিজয়গুপ্ত রচনা করেছেন। পদ্মপুরাণ মনসামঙ্গল কাব্যের একটি শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে পরিচিত এবং কাব্যধারার ইতিহাসে এটি বিশেষ গুরুত্ব রাখে।
মনসামঙ্গল কাব্যসমূহে দেবতা, মানুষের সম্পর্ক, সামাজিক দ্বন্দ্ব এবং অলৌকিক শক্তির বিষয়গুলি ফুটে উঠেছে। এছাড়া, মনসামঙ্গলের অন্যান্য কবিরাও এই ধারা অনুসরণ করেছেন, যেমন নারায়ণ দেব ও বিপ্রদাস পিপিলাই।
মনসামঙ্গল ও পদ্মপুরাণ
-
মনসামঙ্গল কাব্যধারার অন্যতম কবি বিজয়গুপ্ত, যিনি পদ্মপুরাণ রচনা করেছেন।
-
পদ্মপুরাণ মনসামঙ্গল কাব্যের অপর নাম হিসেবেও পরিচিত।
-
বিজয়গুপ্ত প্রাপ্ত পুঁথিভিত্তিক প্রাচীনতম মনসামঙ্গল কাব্যের কবি।
-
মনসামঙ্গলের আরেকজন কবি নারায়ণ দেব, যিনি তার রচিত কাব্যেও পদ্মপুরাণ নাম ব্যবহার করেছেন।
-
বিপ্রদাস পিপিলাই রচনা করেছেন মনসাবিজয়।
মনসামঙ্গল কাব্যের বৈশিষ্ট্য ও আখ্যান
-
মনসামঙ্গল কাব্যগুলির মধ্যে প্রাচীনতম।
-
সাপের দেবী মনসাকে কেন্দ্র করে স্তব, কাহিনি ও অলৌকিক ঘটনা নিয়ে রচিত।
-
চাঁদ সওদাগর প্রথমে মনসার প্রতি বিরূপতা দেখান, পরে তার অলৌকিক শক্তির প্রভাব স্বীকার করে বশ্যতা স্বীকার করেন।
-
দেবতা ও মানুষের দ্বন্দ্ব, সামাজিক শ্রেণিবৈষম্য এবং আর্য-অনার্য দ্বন্দ্ব কাব্যে প্রতিফলিত।
-
কাব্যের প্রাথমিক কবি: কানা হরিদত্ত।
মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান চরিত্র:
-
বেহুলা
-
লখিন্দর
-
সনকা
-
সাপের দেবী মনসা
-
মধ্যযুগের সংগ্রামী নারী চরিত্র হিসেবে বেহুলা উল্লেখযোগ্য।

0
Updated: 1 week ago
একটি সম্পূর্ণ মঙ্গলকাব্যের সাধারণত কয়টি অংশ থাকে?
Created: 4 weeks ago
A
২টি
B
৪টি
C
৫টি
D
৬টি
মঙ্গলকাব্য:
- মঙ্গলকাব্য মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের এক বিশেষ ধারা। দেবমাহাত্ম্যমূলক সমাজচিত্রভিত্তিক এ কাব্যই বাংলা সাহিত্যের প্রথম ও নিজস্ব কাহিনীকাব্য। এ কাব্য পাঠ বা শ্রবণ করলে সকল প্রকার অকল্যাণ নাশ ও সর্ববিধ মঙ্গল লাভ হয় এরূপ ধারণা থেকেই এর নাম হয়েছে মঙ্গলকাব্য।
- পনের থেকে আঠারো শতকের শেষ অবধি এই ধারার কাব্য বাংলায় রচিত হয়।- মঙ্গলকাব্যের প্রধান শাখা ৩টি। যথা: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল।
একটি সম্পূর্ণ মঙ্গলকাব্যে সাধারণত ৫টি অংশ থাকে।
যথা:
- বন্দনা,
- আত্মপরিচয়,
- দেবখণ্ড,
- মর্ত্যখণ্ড,
- শ্রুতিফল।

0
Updated: 4 weeks ago
’মনসামঙ্গল’ কাব্যের আদি কবি কে?
Created: 1 month ago
A
কানা হরিদত্ত
B
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
C
মানিক দত্ত
D
দ্বিজ রামদেব
মনসামঙ্গল কাব্য
-
বিষয়: সাপের দেবী মনসার স্তব, স্তুতি ও কাহিনি
-
ধরন: এক ধরনের পদ্মপুরাণ
-
উৎস: বাংলার প্রাকৃত জীবন ও লৌকিক জীবনাচার
-
আদি কবি: কানা হরিদত্ত
প্রধান চরিত্র:
-
সাপের দেবী মনসা
-
চাঁদ সওদাগর
-
বেহুলা
-
লখিন্দর
-
সনকা
অন্য কাব্য ও কবি:
-
চণ্ডীমঙ্গল → আদি কবি: মানিক দত্ত, প্রধান বা শ্রেষ্ঠ কবি: মুকুন্দরাম চক্রবর্তী

0
Updated: 1 month ago