বাংলাদেশের চা শিল্প: ঐতিহ্য ও অগ্রগতির ধারায়
ভারত উপমহাদেশে চা চাষের ইতিহাস অনেক পুরনো। ১৮০০ শতকের শুরুর দিকে ভারতের আসাম ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে চা চাষের সূচনা হয়। এই ধারাবাহিকতা বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পৌঁছে ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে,
যখন কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এলাকায় চা আবাদের জন্য প্রথমবারের মতো জমি বরাদ্দ করা হয়। এরপর ১৮৪০ সালে চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান ক্লাব এলাকা সংলগ্ন অঞ্চলে “কুন্ডদের বাগান” নামে একটি চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু হয় সিলেটের মালনীছড়া এলাকায়, ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত মূলত দুটি জেলাতেই চা উৎপাদন সীমাবদ্ধ ছিল—একটি সিলেট, যা “সুরমা ভ্যালি” নামে পরিচিত, এবং অন্যটি চট্টগ্রাম, যা “হালদা ভ্যালি” নামে পরিচিত ছিল।
স্বাধীন বাংলাদেশের চা শিল্পকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ টি রিসার্চ স্টেশনকে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (BTRI) নামে পরিচিত।
চা শিল্পের প্রতি সম্মান জানাতে ২০২১ সাল থেকে ৪ জুন জাতীয় চা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৪ জুন প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে চা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আটটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশে চা বাগানের সংখ্যায়ও সময়ের সঙ্গে এসেছে বৃদ্ধি।
বর্তমানে দেশে তিনটি চা নিলাম কেন্দ্র রয়েছে—চট্টগ্রাম, শ্রীমঙ্গল এবং পঞ্চগড়।
জেলার পরিসংখ্যানে দেখা যায়:
সবশেষে, বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে রেকর্ড ১০২.৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, যা দেশের চা শিল্পের স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
উৎস: বাংলাদেশ চা বোর্ড ওয়েবসাইট।