সাহিত্যের রূপ ও রীতির বিচারে কোন গ্রন্থটি ব্যতিক্রম?
A
বাংলা কাব্য
B
দিবারাত্রির কাব্য
C
শেষের কবিতা
D
নদী ও নারী
উত্তরের বিবরণ
সাহিত্যের রূপ ও রীতির বিচারে ব্যতিক্রমী গ্রন্থটি হলো বাংলা কাব্য। কারণ, দিবারাত্রির কাব্য, শেষের কবিতা এবং নদী ও নারী — এই তিনটি গদ্যসাহিত্য তথা উপন্যাস, যেখানে বাংলা কাব্য পদ্যে রচিত।
• দিবারাত্রির কাব্য উপন্যাস
-
লেখক: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
-
প্রকাশকাল: ১৯৩৫ সাল
-
প্রধান চরিত্র: হেরম্ব ও আনন্দ প্রমুখ
• শেষের কবিতা উপন্যাস
-
এটি একটি রোমান্টিক-মনস্তাত্ত্বিক কাব্যিক উপন্যাস
-
প্রকাশকাল: ১৯২৯ সাল
-
একে কাব্যোপন্যাস বলা হয়
-
এতে বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা চিত্রিত হয়েছে
• নদী ও নারী উপন্যাস
-
লেখক: হুমায়ুন কবির
-
এটি তাঁর একমাত্র উপন্যাস, প্রথমে ইংরেজিতে Men and Rivers নামে রচিত হয় (১৯৪৫ সালে)
-
বাংলা সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালে
-
উপন্যাসে পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশের পদ্মাবিধৌত ফরিদপুর অঞ্চলের ভূমিহীন কৃষিশ্রমজীবী বাঙালি মুসলমানের জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে
-
এটি বাংলাদেশের সমাজ-ইতিহাসে এক মাইলফলক হিসেবে গণ্য
-
উপন্যাসে নদী ও নারীর প্রভাব মানুষের জীবনে কেমন গভীরভাবে আলোড়ন তোলে তা স্পষ্টভাবে চিত্রিত হয়েছে
-
চরিত্রগুলোর মাধ্যমে লেখক বাঙালি মুসলমানের সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবনের ভেতর-বাহিরকে নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন
-
মানুষের জীবন আসলে এক অবিরাম সংগ্রাম, পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের জীবনের মধ্য দিয়ে এ সত্য উপন্যাসে প্রকাশ পেয়েছে
0
Updated: 1 month ago
’চিত্তনামা’ কী ধরনের রচনা?
Created: 1 month ago
A
প্রবন্ধ
B
কাব্য
C
নাটক
D
গল্প
'চিত্তনামা' কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয়, যা কাজী নজরুল ইসলামের সমকালীন প্রেক্ষাপটে রচিত। ১৩৩২ বঙ্গাব্দের ২ আষাঢ়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ দার্জিলিংয়ে মৃত্যুবরণ করলে কবি শোকাহত হয়ে সমকালীন পত্রিকায় কবিতা রচনা করেন এবং সেই কবিতাগুলো সংগ্রহ করে 'চিত্তনামা' প্রকাশিত হয়।
-
কাব্যগ্রন্থের প্রকাশ: ১৯২৫
-
প্রেক্ষাপট: চিত্তরঞ্জন দাশের মৃত্যু ও তার প্রভাব
-
কাজী নজরুল ইসলামের অন্যান্য কাব্যগ্রন্থসমূহ:
-
অগ্নি-বীণা
-
সঞ্চিতা
-
চিত্তনামা
-
মরুভাস্কর
-
সর্বহারা
-
ফণি-মনসা
-
চক্রবাক
-
সাম্যবাদী
-
ছায়ানট
-
নতুন চাঁদ
-
পুবের হাওয়া
-
জিঞ্জির
-
বিষের বাঁশি
-
দোলনচাঁপা
-
চন্দ্রবিন্দু
-
সিন্ধু হিন্দোল
-
ভাঙার গান
-
সন্ধ্যা
-
0
Updated: 1 month ago
কোনটি মহাকাব্য?
Created: 6 days ago
A
মহাশ্মশান
B
নীল দর্পণ
C
দুর্গেশ নন্দিনী
D
সারদামঙ্গল
মহাকাব্য সাধারণত এমন এক বিশাল আখ্যানমূলক কাব্য যেখানে বীরত্ব, মানবিক মূল্যবোধ, ধর্ম, সমাজ ও জাতীয় চেতনার প্রতিফলন ঘটে। বাংলা সাহিত্যে ‘মহাশ্মশান’ একটি বিশিষ্ট মহাকাব্য হিসেবে স্বীকৃত। এই কাব্যের মাধ্যমে কবি ইতিহাস, জাতীয়তা এবং ধর্মীয় ভাবধারাকে একত্রিত করে গভীর মানবতাবোধ প্রকাশ করেছেন। নিচে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো।
• ‘মহাশ্মশান’ রচয়িতা মধুসূদন দত্ত। এটি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা। মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩) বাংলা সাহিত্যে আধুনিক মহাকাব্যের প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত।
• এই কাব্যের বিষয়বস্তু ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ, যেখানে বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস এক করুণ পরিণতি লাভ করে। কবি যুদ্ধ, বিশ্বাসঘাতকতা ও জাতীয় বেদনার কাব্যিক চিত্র অঙ্কন করেছেন।
• ‘মহাশ্মশান’ শব্দটি প্রতীকী—এটি বাংলার স্বাধীনতার মৃত্যুক্ষেত্র নির্দেশ করে। কবি এখানে পলাশীর প্রান্তরকে এক মহাশ্মশান হিসেবে চিত্রিত করেছেন যেখানে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা চিরনিদ্রায় শায়িত।
• এই কাব্যটি ইংরেজ শাসন, মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের ইতিহাস কাব্যিক রূপে উপস্থাপন করেছে। ইতিহাস ও কল্পনার মিশ্রণে এটি এক অনন্য কাব্যরূপ পেয়েছে।
• মধুসূদন দত্ত ‘মহাশ্মশান’-এ ইংরেজি মহাকাব্যিক রীতি ও বাংলা ছন্দের সমন্বয় ঘটিয়েছেন। তিনি ব্ল্যাঙ্ক ভার্স বা অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেছেন যা বাংলা কাব্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
• কাব্যের মূল বৈশিষ্ট্য হলো বীরত্ব, ট্র্যাজিক আবহ, ভাষার জৌলুস ও মানবিক আবেগের গভীরতা। এটি কেবল ইতিহাসের পুনর্লিখন নয়, বরং জাতীয় চেতনার জাগরণ ঘটানোর এক শিল্পসম্মত প্রচেষ্টা।
• ‘মহাশ্মশান’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র সিরাজউদ্দৌলা, যিনি বাংলার স্বাধীনতার শেষ প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হন। কবি তাঁকে একজন বীর, দেশপ্রেমিক এবং ট্র্যাজিক নায়ক হিসেবে চিত্রিত করেছেন।
• কাব্যের ভাষা আলঙ্কারিক ও গম্ভীর, যেখানে সংস্কৃতনির্ভর শব্দ ও কাব্যিক রূপকের সমাহার রয়েছে। এটি পাঠকের মনে এক মহত্ত্বের অনুভূতি জাগায়।
• মধুসূদন দত্তের অন্যান্য মহাকাব্য যেমন ‘বীরাঙ্গনা’, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ ইত্যাদির মতোই ‘মহাশ্মশান’-এও তাঁর দার্শনিক চিন্তা ও সাহিত্যিক কুশলতার প্রমাণ মেলে।
• তুলনামূলকভাবে, ‘নীল দর্পণ’ (দীনবন্ধু মিত্র) একটি সামাজিক নাটক, ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং ‘সারদামঙ্গল’ একটি মঙ্গলকাব্য—তাই এগুলো মহাকাব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতএব, প্রশ্নে প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে ‘মহাশ্মশান’ই একমাত্র মহাকাব্য, যা বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস, বীরত্ব ও জাতীয় চেতনাকে কাব্যরূপে মহিমান্বিত করেছে।
0
Updated: 6 days ago
'আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে'-এ প্রার্থনাটি করেছে-
Created: 3 months ago
A
ভাঁড়ুদত্ত
B
চাঁদ সওদাগর
C
ঈশ্বরী পাটনী
D
নলকুবের
• অন্নদামঙ্গল কাব্য:
- অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর।
- তাকে মধ্যযুগের প্রথম নাগরিক কবি বলা হয়।
- এই কাব্যের প্রধান চরিত্র: মানসিংহ, ভবানন্দ, বিদ্যাসুন্দর, মালিনী, ঈশ্বরী পাটনী ইত্যাদি।
- অন্নদামঙ্গল কাব্য তিনখণ্ডে বিভক্ত: শিবনারায়ণ, কালিকামঙ্গল ও মানসিংহ-ভবানন্দ খণ্ড।
- অন্নদামঙ্গল কাব্যের চরিত্র ঈশ্বরী পাটনীর উক্তি:
'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে'।
• অন্নদামঙ্গল কাব্যের কিছু বিখ্যাত পঙক্তি হলো-
- 'মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।’
- 'নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়?'
- 'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।’
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 3 months ago