সোনালী আঁশের দেশ কোনটি?
A
ভারত
B
শ্রীলঙ্কা
C
পাকিস্তান
D
বাংলাদেশ
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশকে ‘সোনালী আঁশের দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে, কারণ এখানকার অর্থনীতিতে পাটের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাট শুধু একটি কৃষিপণ্য নয়, বরং এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত।
পাটের গুরুত্ব ও পরিচিতি
-
পাট হলো এক প্রকার আঁশযুক্ত ফসল, যা বর্ষাকালে চাষ করা হয়।
-
এটি বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
-
প্রতিবছর পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।
-
এসব কারণে পাটকে ‘সোনালী আঁশ’ নামে ডাকা হয়।
পাটকে ‘সোনালী আঁশ’ বলার চারটি মূল কারণ:
১. অর্থনৈতিক অবদান: কৃষিপণ্যের মধ্যে পাট ও এর তৈরি পণ্যের রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ বৈদেশিক আয় করে, তা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে।
২. উপযোগী পরিবেশ: বাংলাদেশের উর্বর মাটি ও অনুকূল জলবায়ু পাট চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী, যা উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে।
৩. জনসম্পৃক্ততা: দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পাট চাষ, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
৪. বিশ্বে অবস্থান: পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ ভারতের পরেই দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে, যা বৈশ্বিক বাজারেও দেশকে গুরুত্ব দেয়।
পাটের সম্ভাবনা ও বহুমুখী ব্যবহার
-
দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ কোনো না কোনোভাবে পাট শিল্পের সঙ্গে জড়িত।
-
পাট থেকে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ, শাড়ি, জুতা, স্যান্ডেল, বিছানার চাদর, পর্দা, সোফা কভার, কার্পেটসহ নানা ধরনের আধুনিক পণ্য।
-
পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটজাত ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক হলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা আরও বেড়ে যাবে।
উপসংহার:
পাট কেবল একটি ফসল নয়, বরং এটি বাংলাদেশের পরিচিতি, অর্থনীতির স্তম্ভ এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।
তথ্যসূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, পাট অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
0
Updated: 3 months ago
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হয় কোন তারিখ থেকে?
Created: 3 months ago
A
জানুয়ারি ১০, ১৯৭৩
B
ডিসেম্বর ১৬, ১৯৭২
C
নভেম্বর ৪, ১৯৭২
D
অক্টোবর ১১, ১৯৭২
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপনের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে সংবিধান গৃহীত হয়। বহু আলোচনা, বিতর্ক ও পর্যালোচনার পর গৃহীত এই সংবিধানকে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসে কার্যকর করা হয়, যা নতুন রাষ্ট্রের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন।
সংবিধানের কাঠামো ও উপাদান:
-
এই সংবিধানে মোট ১৫৩টি অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
-
সংবিধানটি বিভক্ত হয়েছে ১১টি ভাগ বা অধ্যায়ে।
-
এতে রয়েছে ৭টি তফসিল যা বিভিন্ন আইনি বিবরণ সংযুক্ত করে।
-
প্রস্তাবনা অংশে সংবিধানের মূল চেতনা ও লক্ষ্য নির্দেশ করা হয়েছে।
-
সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত ৪টি মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি হচ্ছে:
১. জাতীয়তাবাদ
২. সমাজতন্ত্র
৩. গণতন্ত্র
৪. ধর্মনিরপেক্ষতা
প্রণয়নের ধাপসমূহ:
-
সংবিধান প্রণয়নের জন্য গঠিত খসড়া প্রণয়ন কমিটি ১৯৭২ সালের ১১ অক্টোবর চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে।
-
পরে, ১৯৭২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, জাতীয় সংসদের স্পিকার এটি প্রমাণীকরণ করেন, যা ছিল সংবিধান কার্যকর হওয়ার এক ধাপ আগে।
এই সংবিধান শুধু দেশের শাসনব্যবস্থার দিকনির্দেশনাই দেয় না, বরং এটি আমাদের নাগরিক অধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রের চরিত্র ও মূল্যবোধের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
উৎস: বাংলাদেশের সংবিধান।
0
Updated: 3 months ago
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা'র প্রথম কত চরণ নেওয়া হয়?
Created: 1 month ago
A
৮
B
১০
C
১২
D
১৪
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম ভাগ, ৪ নং অনুচ্ছেদে দেশের জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কিত বিধানাবলী সংরক্ষিত আছে।
-
জাতীয় সঙ্গীত: প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত হলো **‘আমার সোনার বাংলা’**র প্রথম দশ চরণ।
-
জাতীয় পতাকা: সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত।
-
জাতীয় প্রতীক: উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, যার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পর সংযুক্ত পত্র এবং উভয় পার্শ্বে দুইটি করে তারকা।
-
উপরোক্ত সব দফা-সাপেক্ষে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কিত অন্যান্য বিধানাবলী আইন দ্বারা নির্ধারিত হবে।
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম মুসলিম দেশ কোনটি?
Created: 2 weeks ago
A
মিসর
B
ইরান
C
ইরাক
D
তুরস্ক
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর অর্জিত হয়। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বাধীনতার পূর্ণ স্বীকৃতি পেতে কিছুটা সময় লেগেছিল। বিশ্বজুড়ে দেশগুলো একে একে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করে। এর মধ্যে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে ইরাক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে, যা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সৃষ্টি করে।
১. স্বীকৃতির প্রেক্ষাপট:
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। তখন বিশ্বরাজনীতি ঠান্ডা যুদ্ধের প্রভাবে বিভক্ত ছিল—একদিকে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান ব্লক, অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্ররা। পাকিস্তান যেহেতু মুসলিম বিশ্বের একটি প্রধান দেশ ছিল, তাই অনেক ইসলামিক দেশ প্রথম দিকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। কিন্তু ইরাক বাংলাদেশের ন্যায্য স্বাধীনতার আন্দোলনকে সমর্থন করে স্বীকৃতি দেওয়ার সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
২. ইরাকের স্বীকৃতির তারিখ ও তাৎপর্য:
১৯৭২ সালের শুরুতে ইরাক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এটি ছিল মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য প্রথম কূটনৈতিক স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইরাক প্রমাণ করে যে, মানবিক মূল্যবোধ ও জনগণের স্বাধীনতার অধিকারের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে এবং অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোকেও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করে।
৩. ইরাকের অবস্থান ও কূটনৈতিক সাহসিকতা:
ইরাক সে সময় আরব লীগের সদস্য এবং মুসলিম বিশ্বের একটি প্রভাবশালী দেশ ছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার পরও ইরাক বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল ভূমিকা নেয়। তারা মনে করেছিল, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে তাদের জনগণের অধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের আন্দোলনে সফল হয়েছে—তাই এই স্বীকৃতি ন্যায়বিচারের প্রতিফলন।
৪. বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্য:
-
এই স্বীকৃতির ফলে বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে।
-
অন্য মুসলিম দেশ যেমন মিশর, তিউনিসিয়া, ও আলজেরিয়াও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে অনুপ্রাণিত হয়।
-
এটি বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্যের সূচনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করে।
-
ইরাকের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ন্যায্যতা ও বৈধতা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে।
৫. ঐতিহাসিক প্রভাব:
ইরাকের এই পদক্ষেপ শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ছিল এক ধরনের নৈতিক সমর্থন বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। এর মাধ্যমে বিশ্ব বুঝেছিল যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল গণমানুষের মুক্তির আন্দোলন, কোনো বিচ্ছিন্ন বিদ্রোহ নয়।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে ইরাক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তাদের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের কূটনৈতিক পরিচিতিকে বিশ্বমঞ্চে দৃঢ় করে তোলে। ইরাকের এই সাহসী ও মানবিক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় থাকবে।
0
Updated: 2 weeks ago