'চার ইয়ারী কথা' গল্পগ্রন্থটি রচনা করেন কে?
A
প্রমথ চৌধুরী
B
মোতাহার হোসেন চৌধুরী
C
বুদ্ধদেব বসু
D
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
'চার ইয়ারী কথা' একটি গল্পগ্রন্থ, রচয়িতা প্রমথ চৌধুরী।
-
প্রকাশকাল: ১৯১৬
-
বিষয়বস্তু: চার বন্ধুর প্রেমের কাহিনী
-
গল্পগ্রন্থের নায়িকা চারজনই ইউরোপীয়
-
নায়িকাদের চরিত্র:
-
প্রথম নায়িকা: উন্মাদ
-
দ্বিতীয় নায়িকা: চোর
-
তৃতীয় নায়িকা: প্রতারক
-
চতুর্থ নায়িকা: মৃত্যুর পর ভালোবাসা ব্যক্ত করেছে
-
-
-
ভাষা ও শৈলী: চাতুর্যপূর্ণ ভাষা, পরিহাসপ্রিয়তা এবং সূক্ষ্ম ব্যঙ্গের মাধ্যমে ভাবালু প্রেমকাহিনীকে প্রতিবাদী রূপে উপস্থাপন
প্রমথ চৌধুরী সম্পর্কে:
-
বাংলা ভাষার সাধু ও চলিত রূপের মধ্যে তুলনামূলক গবেষণা করেছেন
-
বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক ও বিদ্রূপাত্মক প্রাবন্ধিক
-
সাহিত্যিক ছদ্মনাম: বীরবল
-
'বীরবলের হালখাতা' (১৯০২) ভারতী পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত; এতে প্রথম চলিত রীতির প্রয়োগ ঘটেছে
-
বাংলা কাব্য সাহিত্যে তিনিই প্রথম ইতালীয় সনেটের প্রবর্তক
0
Updated: 1 month ago
প্রমথ চৌধুরী বাংলা গদ্যে কোন রীতির প্রবর্তক ছিলেন?
Created: 3 weeks ago
A
যতিচিহ্ন রীতি
B
চলিত রীতি
C
অলঙ্কারিক রীতি
D
প্রকৃত রীতি
প্রমথ চৌধুরী ছিলেন বাংলা গদ্যের চলিত রীতির প্রবর্তক এবং আধুনিক বাংলা গদ্যের এক বিশিষ্ট রূপকার। তাঁর লেখনিতে ভাষা পেয়েছিল নতুন ছন্দ, স্বাভাবিকতা ও প্রাণবন্ত প্রকাশভঙ্গি। তিনি বাংলা সাহিত্যকে সাধুভাষার কৃত্রিমতা থেকে মুক্ত করে স্বাভাবিক কথ্যরীতির গদ্যের ধারা প্রতিষ্ঠা করেন।
-
জন্ম: ৭ আগস্ট, ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দে যশোর জেলায়।
-
তিনি বাংলা ভাষার সাধু ও চলিত রূপের তুলনামূলক গবেষক ছিলেন এবং চলিত রীতির গুরুত্ব প্রথম উপলব্ধি করেন।
-
বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক ও বিদ্রূপাত্মক প্রাবন্ধিক হিসেবে তাঁর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।
-
তাঁর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’, এই নামে তিনি ব্যঙ্গ-রসাত্মক রচনা লিখতেন।
-
তিনি ছিলেন ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার (প্রকাশকাল: ১৯১৪ সাল) সম্পাদক, যা রবীন্দ্র-পরবর্তী যুগের সাহিত্যচর্চায় এক নবধারার সূচনা করেছিল।
-
তাঁর গদ্যে ভাষা সহজ, কথ্য ও প্রাঞ্জল — যা পাঠকের মনে তাত্ক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম।
-
তিনি ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, সমালোচক, চিন্তাবিদ ও ভাষাবিশারদ।
-
তাঁর গদ্যরীতির বৈশিষ্ট্য হলো বুদ্ধিদীপ্ত রস, ব্যঙ্গ ও তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণশক্তি।
বাংলা সাহিত্যে অবদান:
-
বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যে তিনি “চলিত রীতির পথিকৃৎ” হিসেবে পরিচিত।
-
তাঁর লেখায় দেখা যায় তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ, সূক্ষ্ম রসবোধ ও যুক্তিনিষ্ঠ ভাবনা।
-
‘সবুজপত্র’-এর মাধ্যমে তিনি তরুণ লেখকদের জন্য নতুন সাহিত্যধারার সূচনা করেন, যার ফলে বাংলা গদ্যের আধুনিক রূপ প্রতিষ্ঠিত হয়।
মৃত্যু: ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬ (১৬ ভাদ্র ১৩৫৩ বঙ্গাব্দ), শান্তিনিকেতনে।
প্রমথ চৌধুরীর রচনায় ভাষার স্বাভাবিকতা, যুক্তি, রসবোধ এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির যে সমন্বয় দেখা যায়, তা বাংলা গদ্যকে আধুনিক রূপে প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই তাঁকেই যথার্থ বলা হয়— বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক।
0
Updated: 3 weeks ago
'সবুজপত্র' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন-
Created: 1 week ago
A
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
B
প্রমথ চৌধুরী
C
কাজী নজরুল ইসলাম
D
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
উত্তর: খ) প্রমথ চৌধুরী
‘সবুজপত্র’ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পত্রিকা, যার সম্পাদনা করেছিলেন প্রমথ চৌধুরী। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৪ সালে। বাংলা গদ্যসাহিত্যে নতুন রুচি, আধুনিক মনন ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবধারার সূচনা এই পত্রিকার মাধ্যমেই ঘটে। প্রমথ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই পত্রিকা সাহিত্যজগতে এক নবজাগরণের সূচনা করেছিল।
‘সবুজপত্র’-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এর আধুনিক চিন্তাধারা ও নতুন সাহিত্যরীতির প্রবর্তন। প্রমথ চৌধুরী বিশ্বাস করতেন যে সাহিত্যকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তাই তিনি পুরোনো প্রথাগত রচনাশৈলী থেকে বেরিয়ে এসে নতুন ভাষারীতি ও রুচির বিকাশ ঘটান। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি চলিত ভাষায় সাহিত্য রচনার ধারা শুরু করেন, যা পরবর্তীকালে বাংলা সাহিত্যের প্রধান ভাষাশৈলী হয়ে ওঠে।
এই পত্রিকার মূল উদ্দেশ্য ছিল সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজজীবনের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করা। প্রমথ চৌধুরী এতে মননশীল প্রবন্ধ, গল্প, সমালোচনা ও অনুবাদ সাহিত্য প্রকাশ করতেন, যা পাঠকের চিন্তাকে উদ্দীপ্ত করত।
এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মোহিতলাল মজুমদার, সজনীকান্ত দাস, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রমুখ খ্যাতনামা সাহিত্যিক। ফলে ‘সবুজপত্র’ হয়ে ওঠে নবযুগের সাহিত্যচর্চার কেন্দ্রবিন্দু।
পত্রিকাটি বাংলা সাহিত্যে যে পরিবর্তন এনেছিল তা কয়েকটি দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ—
-
এটি চলিত ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা পূর্বে উচ্চাঙ্গ সাহিত্যে ব্যবহৃত হতো না।
-
এতে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীন চিন্তার মূল্যায়ন করা হয়, যা তৎকালীন সমাজে এক নতুন ধারণা ছিল।
-
প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যে রুচিশীলতা ও ব্যঙ্গরসের সংযোজন করেন, যা পাঠকের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেয়।
-
এই পত্রিকার মাধ্যমে আধুনিক প্রবন্ধ ও সমালোচনার ধারা গড়ে ওঠে।
-
এটি নতুন লেখকদের জন্য এক মুক্ত চিন্তার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছিল।
সর্বোপরি, ‘সবুজপত্র’ কেবল একটি সাহিত্যপত্রিকা ছিল না; এটি ছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের এক নবজাগরণের আন্দোলন। প্রমথ চৌধুরীর সম্পাদনা ও দিকনির্দেশনায় পত্রিকাটি বাংলা গদ্যসাহিত্যকে আধুনিক রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তাঁর এই অবদান বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আজও অম্লান।
0
Updated: 1 week ago
প্রমথ চৌধুরী রচিত প্রবন্ধ গ্রন্থ নয় কোনটি?
Created: 1 month ago
A
তেল-নুন-লকড়ী
B
চার-ইয়ারী কথা
C
বীরবলের হালখাতা
D
নানাকথা
‘চার-ইয়ারী কথা’ প্রমথ চৌধুরী রচিত একটি জনপ্রিয় গল্পগ্রন্থ, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ‘সবুজপত্র’ পত্রিকায়। এটি ১৩২২ বঙ্গাব্দের চৈত্র সংখ্যা এবং ১৩২৩ বঙ্গাব্দের বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ সংখ্যায় তিন কিস্তিতে প্রকাশিত হয়। ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভের পর গল্পটি ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
প্রমথ চৌধুরী বইটি উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর স্ত্রী ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীকে। ১৯৪৪ সালে ইন্দিরা দেবী বইটির ইংরেজি অনুবাদ ‘Tale of Four Friends’ নামে প্রকাশ করেন, যা প্রকাশিত হয় বিশ্বভারতী থেকে। এই গল্পকে নিয়ে একসময় অভিযোগ ওঠে যে এটি আনাতোল ফ্রাঁস-এর একটি রচনার অনুকরণে লেখা।
গল্প প্রকাশের পর পাঠকমহলে বিশেষ আলোচনা সৃষ্টি হয়। অনেকেই প্রমথ চৌধুরীকে বলেন যে, তাঁর চার নায়িকার চরিত্রচিত্রণ, সংলাপ ও বর্ণনা এত বাস্তব যে মনে হয়, লেখকের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ পরিচয় ছিল। প্রমথ চৌধুরী জবাবে বলেন— “প্রথম নায়িকা পাগল, দ্বিতীয়টি চোর, তৃতীয়টি জুয়াচ্চোর, আর চতুর্থটি ভূত। এই চারটি চরিত্রই আমার মনগড়া। তবে তৃতীয় গল্পের নায়িকা ‘রিণী’-র সঙ্গে আমার বাস্তব পরিচয় ছিল।”
সেকালের পাঠক সমাজে বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করেছিল তৃতীয় গল্পের রহস্যময়ী নায়িকা রিণী। অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন লেখকের সঙ্গে রিণীর সম্পর্ক কতটা বাস্তব। প্রমথ চৌধুরীর আত্মকথায় এই বিষয়ে কিছু অংশ পাওয়া গেলেও এর অধিকাংশ হারিয়ে গেছে; উদ্ধারকৃত অংশটি ১৩৫২ বঙ্গাব্দে ‘বৈশাখী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
প্রমথ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের একজন প্রভাবশালী লেখক ও গদ্যশৈলীর নবপ্রবর্তক। তিনি ৭ আগস্ট ১৮৬৮ সালে যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ভাষার সাধু ও চলিত রীতির মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেন এবং চলিত গদ্যরীতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’। বাংলা সাহিত্যে তিনিই প্রথম ইতালীয় সনেট প্রবর্তন করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:
-
তেল-নুন-লকড়ী
-
বীরবলের হালখাতা (প্রথম প্রকাশ: ভারতী পত্রিকা, ১৯০২)
-
নানাকথা
-
ভাষার কথ
-
আমাদের শিক্ষা
-
নানাচর্চা
তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থসমূহ:
-
চার-ইয়ারী কথা
-
নীল্লোহিত
-
ঘোষালে ত্রিকথা
0
Updated: 1 month ago