সিংহাসনে আরোহণ করে অশোক কোন উপাধি গ্রহণ করেন?
A
মহামতি
B
দেবনম পিয়
C
ধর্মচক্রবতী
D
রাজাধিরাজ
উত্তরের বিবরণ
মৌর্য সম্রাট অশোক ছিলেন প্রাচীন ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী শাসক, যিনি রাজনীতি, ধর্ম এবং মানবিক মূল্যবোধের মেলবন্ধনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো
-
পরিচয়: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পৌত্র ও বিম্বিসারের পুত্র অশোক ২৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পাটলিপুত্রের সিংহাসনে আরোহণ করেন।
-
প্রশাসনিক দায়িত্বের সূচনা: পিতার জীবিত অবস্থায় তিনি প্রথমে উজ্জয়িনীর শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
-
তক্ষশীলার বিদ্রোহ: পরে তক্ষশীলায় বিদ্রোহ দেখা দিলে বিন্দুসার তাঁকে বিদ্রোহ দমনের জন্য পাঠান। সফলভাবে বিদ্রোহ দমন করার পর তিনি তক্ষশীলার শাসক নিযুক্ত হন।
-
সিংহাসন আরোহন ও অভিষেক: পিতার মৃত্যুর পর ২৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসনে বসেন এবং চার বছর পর তাঁর আনুষ্ঠানিক অভিষেক সম্পন্ন হয়।
-
উপাধি: তিনি তাঁর পূর্বসুরীদের মতো ‘দেবনম পিয়’ উপাধি গ্রহণ করেন এবং নিজেকে ‘দেবনম পিয় পিয় দসী’ নামে পরিচিত করতেন।
-
সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ: পূর্বসূরিদের নীতি অনুসরণ করে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেন এবং রাজত্বের ত্রয়োদশ বছরে কলিঙ্গ আক্রমণ করে জয় করেন।
-
কলিঙ্গ যুদ্ধের প্রভাব: ভয়াবহ এই যুদ্ধে বিপুল প্রাণহানি অশোকের মানসিকতা ও শাসননীতিতে গভীর পরিবর্তন আনে।
-
ধর্ম পরিবর্তন: যুদ্ধের পর তিনি বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং সামরিক বিজয়ের পরিবর্তে ধর্মবিজয়—অর্থাৎ সৌহার্দ্য, মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে মানুষের মন জয়কেই প্রকৃত বিজয় হিসেবে মেনে নেন।
-
মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি: তিনি ঘোষণা করেন যে সব মানুষই তাঁর সন্তান এবং তাদের জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ নিশ্চিত করাই তাঁর শাসনের মূল লক্ষ্য।
-
মৃত্যু: প্রায় চল্লিশ বছরের রাজত্ব শেষে ২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহামতি অশোক মৃত্যুবরণ করেন।

0
Updated: 19 hours ago