যখন একটি গাড়ি ব্রেক কষে, তখন ব্রেক প্যাড চাকায় ঘর্ষণ সৃষ্টি করে। এই ঘর্ষণ বল চাকাকে ঘুরতে বাধা দেয় এবং ক্রমান্বয়ে গাড়ির গতি কমিয়ে একসময় থামিয়ে দেয়।
ঘর্ষণ ও ঘর্ষণ বল:
-
যখন দু'টি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থাকে এবং একটি বস্তু অপরটির উপর দিয়ে চলতে চেষ্টা করে, তখন তাদের সংস্পর্শে একটি বাধার সৃষ্টি হয়। এই বাধাকেই ঘর্ষণ বলা হয়।
-
যে বল গতিশীল বস্তুর গতির পথে বাধা সৃষ্টি করে, তাকে ঘর্ষণ বল বলা হয়।
ঘর্ষণের প্রকারভেদ:
১. প্রবাহী ঘর্ষণ:
-
যখন কোনো বস্তু তরল বা বায়বীয় পদার্থের ভেতর দিয়ে যায়, তখন যে ঘর্ষণ বল অনুভব করে সেটি হলো প্রবাহী ঘর্ষণ।
-
উদাহরণ:
-
প্যারাশুট নিয়ে প্লেন থেকে ঝাঁপ দেওয়া, বাতাসের প্রবাহী ঘর্ষণের কারণে ধীরে নিচে নেমে আসা।
-
জাহাজ পানিতে চলার সময় পানির বাঁধা অতিক্রম করা।
-
মানুষ পুকুরে সাঁতার কাটার সময় পানির মধ্য দিয়ে চলা।
-
২. স্থিতি ঘর্ষণ:
-
যখন দুটি বস্তু একে অপরের সাপেক্ষে স্থির থাকে, তখন যে ঘর্ষণ বল সৃষ্টি হয়, সেটি হলো স্থিতি ঘর্ষণ।
-
উদাহরণ: আমরা হাঁটতে পারি কারণ পা বা জুতার তলা মাটিতে আটকে থাকে এবং পিছলে পড়ে না।
৩. গতি ঘর্ষণ:
-
একটি বস্তুর সাপেক্ষে অন্য বস্তু চলমান থাকলে যে ঘর্ষণ বল তৈরি হয়, সেটি হলো গতি ঘর্ষণ।
-
উদাহরণ: সাইকেলের ব্রেক চাপলে তা চাকা থামায়।
-
গতি ঘর্ষণ ওজনের উপর নির্ভরশীল; ওজন যত বেশি, ঘর্ষণ বল তত বেশি।
৪. আবর্ত ঘর্ষণ:
-
একটি বস্তু তলের উপর গড়িয়ে বা ঘুরতে ঘুরতে চললে যে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, সেটি হলো আবর্ত ঘর্ষণ।
-
এটি সব ধরনের ঘর্ষণ বলের মধ্যে সর্বনিম্ন, তাই যানবাহনে চাকা ব্যবহার করা হয়।
-
উদাহরণ: চাকা লাগানো সুটকেস সহজে টানা যায়; চাকা না থাকলে মেঝের উপর টানতে অনেক শক্তি লাগত।
চাওয়াতে আমি চাইলে ঘর্ষণের প্রতিটি প্রকারের আরও দৈনন্দিন জীবনের উদাহরণ ও ব্যবহারও সংযোজন করতে পারি।