বাংলাদেশের সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদ বলে রাষ্ট্র নারী, শিশু বা অনগ্রসর নাগরিকদের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান তৈরির ক্ষমতা পায়?
A
২৫
B
২৮
C
৪০
D
৪২
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদ ও এর গুরুত্ব
বাংলাদেশের সংবিধান মোট ১৫৩টি অনুচ্ছেদ নিয়ে গঠিত, যেখানে দেশের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণির সুরক্ষার জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে কারণ এটি রাষ্ট্রকে নারী, শিশু ও সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার প্রদান করে।
২৮ নম্বর অনুচ্ছেদের মূল প্রস্তাবনা:
-
২৮(১): ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থানকে ভিত্তি করে কোনো নাগরিকের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ রাষ্ট্র করবে না।
-
২৮(২): দেশের সমস্ত স্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
-
২৮(৩): ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের কারণে বিনোদন, বিশ্রাম বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে নাগরিকদের প্রবেশাধিকার বা সুযোগে কোনো সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যাবে না।
-
২৮(৪): নারী, শিশু ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নতির লক্ষ্যে বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে এই অনুচ্ছেদের কোনও ধারা রাষ্ট্রকে বাধা দিতে পারবে না।
এছাড়াও সংবিধানে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ রয়েছে, যেমন:
-
অনুচ্ছেদ ২৫: আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
-
অনুচ্ছেদ ৪০: পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা।
-
অনুচ্ছেদ ৪২: সম্পত্তি অধিকার সুরক্ষা।
উল্লেখ্য, ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রের কাছে একটি শক্তিশালী দায়িত্ব অর্পণ করেছে যাতে সমাজের সব শ্রেণিকে সমান সুযোগ ও ন্যায় নিশ্চিত করা যায়।
উৎস: বাংলাদেশের সংবিধান।

0
Updated: 3 weeks ago
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর উদ্দেশ্য কী ছিল?
Created: 3 weeks ago
A
জরুরি অবস্থা ঘোষণা
B
মহিলাদের জন্য সংসদের আসন সংরক্ষণ
C
সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা
D
৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দির বিচার অনুষ্ঠান
বাংলাদেশের সংবিধান, যা ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে গৃহীত হয় এবং একই বছর ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা ও শাসনের মূল ভিত্তি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি মোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে, তবে এর মধ্যে চারটি সংশোধনীকে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করেছে।
প্রথম সংশোধনী: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যবস্থা
১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই দেশের সংবিধানে প্রথম সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনীর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সংঘটিত গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রমকে আইনগত স্বীকৃতি প্রদান। সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৪৭ নং অনুচ্ছেদতে পরিবর্তন এনে ‘৪৭-(ক)’ নামে একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়। এই ধারার আওতায় যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যার অভিযোগে বন্দিদের বিচার করা সম্ভবপর হয়, যা দেশের ন্যায়বিচারের জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
দ্বিতীয় সংশোধনী: জরুরি অবস্থা ঘোষণা
এর পরের গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী হয় ১৯৭৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। এই সংশোধনীতে সংবিধানে জরুরি অবস্থার বিধান সংযোজন করা হয়। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বা বহিরাক্রমণের ফলে দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত হলে সরকার ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করতে পারবে। এ ধারা দেশের নিরাপত্তা ও শাসনের স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সর্বশেষ সংশোধনী ও নারী আসনের সংরক্ষণ
বাংলাদেশের সংবিধানে সর্বশেষ, অর্থাৎ সপ্তদশ সংশোধনী পাশ হয় ২০১৮ সালের ৮ জুলাই। এতে জাতীয় সংসদের ৫০টি আসন বিশেষভাবে নারীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়, যেটি আরও ২৫ বছর প্রযোজ্য থাকবে। এই পদক্ষেপ দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
উৎস: বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন, এসএসএইচএল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

0
Updated: 3 weeks ago