উদাসী বাউলের জীবনদর্শনের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় মীর মশাররফ হোসেনের কোন রচনায়?
A
উদাসীন পথিকের মনের কথা
B
বেহুলা গীতাভিনয়
C
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
D
বসন্তকুমারী
উত্তরের বিবরণ
‘গাজী মিয়াঁর বস্তানী’ আত্মজৈবনিক উপন্যাস
-
রচয়িতা: মীর মশাররফ হোসেন
-
প্রকৃতি: আত্মজৈবনিক ও উপন্যাসজাতীয় রস-রচনা।
-
প্রকাশ: প্রথম অংশ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে। দ্বিতীয় অংশ পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়নি; এর অংশসমূহ তাঁর ‘আমার জীবনী’-তে মুদ্রিত।
-
ছদ্মনাম: প্রকাশক হিসেবে লেখা হয়েছে ‘উদাসীন পথিক’।
-
বিষয়বস্তু:
-
উদাসী বাউলের জীবনদর্শনের প্রভাব।
-
তৎকালীন সমাজের অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি, মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ও বর্বর আচরণ।
-
উপন্যাসে প্রধান ঘটনা: দুই বিধবা মহিলা, সোনাবিবি ও মনিবিবি’র জমিদার দ্বন্দ্ব।
-
চরিত্র ও স্থান: অভিনব নামকরণ যেমন—অরাজকপুর, যমদ্বার, নচ্ছারপুর, পয়জারন্নেসা, সবলোট চৌধুরী, ভেড়াকান্ত, জয়ঢাক। ভেড়াকান্ত চরিত্রে লেখকের নিজের ছায়াপাত রয়েছে।
-
-
ব্যঙ্গরসের ব্যবহার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
-
অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় মন্তব্য: “গাজী মিয়াঁর বস্তানী একখানি বিচিত্র সমাজচিত্র, সুশোভিত, সুলিখিত উপন্যাস।”
মীর মশাররফ হোসেনের অন্যান্য রচনাসমূহ
-
নাটক: বসন্তকুমারী, জমীদার দর্পণ, বেহুলা গীতাভিনয়
-
উপন্যাস: বিষাদ-সিন্ধু
-
আত্মজীবনীমূলক রচনা: উদাসীন পথিকের মনের কথা, গাজী মিয়াঁর বস্তানী, আমার জীবনী, কুলসুম জীবনী
0
Updated: 1 month ago
'গাজী মিয়াঁ' কার ছদ্মনাম?
Created: 1 month ago
A
মীর মশাররফ হোসেন
B
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
C
ফররুখ আহমেদ
D
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক, যিনি উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যের পথিকৃৎ হিসেবে খ্যাত এবং বঙ্কিমযুগের গুরুত্বপূর্ণ গদ্যশিল্পী।
-
জন্ম ও সাহিত্যিক শুরু: ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ; ছাত্রাবস্থায় 'সংবাদ প্রভাকর' ও কুমারখালির 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা'-র মফঃস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন, এখান থেকেই সাহিত্যজীবনের শুরু।
-
সাহিত্যগুরু ও সম্পাদনা: গ্রামবার্তা প্রকাশিকার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ ছিলেন তাঁর সাহিত্যগুরু; তিনি 'আজিজননেহার' ও 'হিতকরী' নামে দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।
-
ছদ্মনাম ও প্রথম গ্রন্থ: 'গাজী মিয়াঁ' ছদ্মনামে লিখতেন; প্রথম গ্রন্থ 'রত্নবতী' (১৮৬৯), যা মুসলিম রচিত প্রথম বাংলা গদ্যগ্রন্থ।
0
Updated: 1 month ago
'বিষাদ সিন্ধু' উপন্যাস কে লিখেছেন?
Created: 1 week ago
A
মুনীর চৌধুরী
B
মীর মশাররফ হোসেন
C
সৈয়দ শামছুল হক
D
আসাদ চৌধুরী
বাংলা সাহিত্য জগতে ‘বিষাদ সিন্ধু’ একটি অমর উপন্যাস, যার রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন। এটি উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে রচিত একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় উপন্যাস, যেখানে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায়। এই রচনাটি বাংলা গদ্যসাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
এই উপন্যাস সম্পর্কিত মূল দিকগুলো হলো
-
মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭–১৯১২) ছিলেন বাংলা মুসলিম সাহিত্যজগতের প্রথমদিকের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক। তাঁর রচনায় ধর্মীয় আবেগ, মানবিক বেদনা এবং নৈতিক বোধ গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
-
‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮৫ থেকে ১৮৯১ সালের মধ্যে তিন খণ্ডে। এটি মূলত ইসলাম ধর্মের ইতিহাসভিত্তিক এক আবেগঘন উপাখ্যান।
-
কাহিনিটি আবর্তিত হয়েছে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন (রাঃ)-এর শহীদ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যা ইসলামের ইতিহাসে কারবালা যুদ্ধ নামে পরিচিত।
-
উপন্যাসটির ভাষা সংস্কৃতপ্রভাবিত প্রাঞ্জল বাংলা, যা সে সময়ের সাহিত্যিক রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও এর ভেতরে এক ধরনের কাব্যিক বেদনা ও ধর্মীয় শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে।
-
লেখক এখানে শুধু ইতিহাস তুলে ধরেননি, বরং মানবতার চূড়ান্ত ত্যাগ ও ন্যায়ের সংগ্রামকে এক গভীর দার্শনিক ভাবনায় উপস্থাপন করেছেন।
-
‘বিষাদ সিন্ধু’ বাংলা সাহিত্যে মুসলিম লেখকের হাতে সৃষ্ট প্রথম পূর্ণাঙ্গ ঐতিহাসিক উপন্যাস, যা ধর্মীয় বেদনা ও সাহিত্যিক রূপের চমৎকার সংমিশ্রণ।
-
এই রচনায় লেখক আধ্যাত্মিকতা ও মানবতার সংঘর্ষ, সত্য-মিথ্যার লড়াই এবং আত্মত্যাগের মহান শিক্ষা তুলে ধরেছেন।
-
ভাষা ও শৈলীর দিক থেকে উপন্যাসটি তৎকালীন বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা পরবর্তী মুসলিম লেখকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়।
-
‘বিষাদ সিন্ধু’-র সাহিত্যিক মূল্য এতটাই গভীর যে এটি আজও বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্মীয়-ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত।
-
পরবর্তীকালে এই উপন্যাসটি ধর্মীয় পাঠের গণ্ডি পেরিয়ে মানবতার সার্বজনীন মূল্যবোধ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ মর্যাদা লাভ করে।
অতএব স্পষ্টভাবে বলা যায়, ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসের লেখক মীর মশাররফ হোসেন, যিনি তাঁর অনন্য ভাষাশৈলী ও গভীর মানবিক বোধের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
0
Updated: 1 week ago
মীর মশাররফ হােসেনের ‘বিষাদসিন্ধু' একটি -
Created: 1 month ago
A
মহাকাব্য
B
ইতিহাস গ্রন্থ
C
উপন্যাস
D
ইতিহাস-আশ্রিত জীবনীগ্রন্থ
মীর মশাররফ হোসেন রচিত বিষাদ-সিন্ধু একটি ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস, যা কারবালার কাহিনীকে কেন্দ্র করে গঠিত। উপন্যাসে ইতিহাসের মূল সত্যতা বজায় রাখা হলেও এটি ইতিহাসের অন্ধ অনুসরণ করে না।
মূল কাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হাসান ও হোসেনের সঙ্গে দামেস্ক অধিপতি মাবিয়ার একমাত্র পুত্র এজিদের কারবালা প্রান্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং ইমাম হাসান ও হোসেনের করুণ মৃত্যুকাহিনী।
উপন্যাসের প্রধান তিনটি পর্ব:
-
মহরম পর্ব
-
উদ্ধার পর্ব
-
এজিদ-বধ পর্ব
মীর মশাররফ হোসেনের অন্যান্য রচনা:
কাব্যগ্রন্থ:
-
মোসলেম বীরত্ব
-
গড়াই ব্রিজ বা গৌরী সেতু
উপন্যাস:
-
রত্নাবতী
-
বিষাদ-সিন্ধু
-
গাজী মিয়ার বস্তানী
0
Updated: 1 month ago