তারানাথের মতে, বাংলাদেশের গঙ্গার ধারে বাস করতেন কোন চর্যাকার?
A
কুক্কুরীপা
B
ডোম্বীপা
C
লুইপা
D
ঢেণ্ডণপা
উত্তরের বিবরণ
লুইপা (Louipa)
-
সাধারণত আদি সিদ্ধাচার্য হিসেবে বিবেচিত হলেও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও রাহুল সংকৃত্যায়ন তাঁকে প্রথম সিদ্ধাচার্য হিসেবে স্বীকার করেন না।
-
লুইপা বাঙালি বলে অনুমিত; তবে কারও কারও মতে তাঁর জন্মস্থান উড়িষ্যা।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ-এর উল্লেখ অনুযায়ী, তারানাথের মতে লুই গঙ্গার ধারে বাস করতেন।
-
তিনি প্রথম জীবনে উদ্যানের (সোয়াতের) রাজার কায়স্থ বা লেখক ছিলেন; তখন তাঁর নাম ছিল সামন্ত শুভ।
-
পরে তিনি উড়িষ্যার রাজা ও মন্ত্রীর গুরু হন।
-
লুইপার জীবৎকাল: ৭৩০–৮১০ খ্রিস্টাব্দ।
-
তিনি সংস্কৃত ভাষায় চারটি গ্রন্থ রচনা করেন, যাদের মধ্যে একটি হলো অভিসময়বিভঙ্গ।
-
চর্যাপদে তাঁর দুটি পদ রয়েছে: ১নং পদ এবং ২৯নং পদ।
অন্য চর্যাপদকর্তাদের তথ্য (উল্লেখযোগ্য):
-
কুক্কুরীপা: বাংলার উত্তরখণ্ডের অধিবাসী বলে ধারণা; তবে হিন্দিভাষীরা তাঁকে কপিলাবস্তু বা বুদ্ধের জন্মস্থান নেপালের লোক বলেছেন।
-
ডোম্বীপা: ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা।
-
ঢেণ্ডণপার: জন্মস্থান অবন্তিনগর-উজ্জয়িনী; বর্ণে তাঁতি এবং সিদ্ধা; দেবপাল-বিগ্রহ পালের সময়ে বর্তমান; জীবৎকালের ঊর্ধ্বসীমা ৮৪৫ খ্রিস্টাব্দ।
ড. আনিসুজ্জামানের উল্লেখযোগ্য তথ্য:
-
তিব্বতী ঐতিহ্যে সিদ্ধাদের পূর্বজীবনের বর্ণ বা বৃত্তির উল্লেখ আছে।
-
উদাহরণস্বরূপ:
-
লুইপা: রাজসভার লেখক
-
জয়নন্দী: রাজমন্ত্রী
-
কাহ্ন: কায়স্থ
-
বীণা: ক্ষত্রিয়
-
মহীধর: শূদ্র
-
শরবী: ব্যাধ
-
-
অন্যান্য তথ্য: ডোম্বী বিয়ে করেছেন ডোমকন্যা; কুকুরীর সহচরী পূর্বজন্মে ছিলেন কুকুরী; অনাচারের দায়ে বিরুআ বিহার থেকে বহিষ্কৃত হন।
0
Updated: 1 month ago
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ রচিত ইতিহাস গ্রন্থ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
B
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
C
বাংলা সাহিত্যের কথা
D
বাংলা সাহিত্যের রূপরেখা
বাংলা সাহিত্যের কথা
-
লেখক: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
-
এটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের একটি বিখ্যাত গ্রন্থ।
-
গ্রন্থে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ ও মধ্যযুগ নিয়ে বিশদ আলোচনা রয়েছে।
-
গ্রন্থটি একাধিক সংস্করণে প্রকাশিত হয়:
-
প্রথম সংস্করণ: এপ্রিল, ১৯৫৩
-
দ্বিতীয় নতুন সংস্করণ: এপ্রিল, ১৯৬৩
-
তৃতীয় পরিমার্জিত সংস্করণ: কার্তিক ১৩৭৩ (অক্টোবর ১৯৬৬)
-
চতুর্থ পরিবর্ধিত নূতন সংস্করণ: শ্রাবণ ১৩৭৫ (জুলাই ১৯৬৮)
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত
-
দীওয়ানে হাফিজ
-
রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম
-
নবী করিম মুহাম্মাদ
-
ইসলাম প্রসঙ্গ
-
বিদ্যাপতি শতক
-
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
-
ব্যাকরণ পরিচয়
-
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান
-
মহররম শরীফ
-
টেইল ফ্রম দি কুরআন
-
Buddhist Mystic Songs (১৯৬০)
-
Hundred Sayings of the Holy Prophet
অন্যান্য সমকালীন বা সমকক্ষ বাংলা সাহিত্য ইতিহাস গ্রন্থ:
-
দীনেশচন্দ্র সেন – বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
-
ড. সুকুমার সেন – বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
-
গোপাল হালদার – বাংলা সাহিত্যের রূপরেখা
0
Updated: 1 month ago
'আঞ্চলিক ভাষার অভিধান' সম্পাদনা করেন কে?
Created: 1 month ago
A
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
মুহম্মদ এনামুল হক
C
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
D
সুকুমার সেন
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন খ্যাতিমান বাঙালি ব্যক্তিত্ব, বহুভাষাবিদ, শিক্ষক ও দার্শনিক। তিনি ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ‘জ্ঞানতাপস’ নামে পরিচিত এবং তাঁকে ‘চলিষ্ণু অভিধান’ বলেও অভিহিত করা হয়।
-
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তাঁর বিখ্যাত উক্তি:
“আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।” -
১৯৫৯ সালে তিনি ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ রচনা করেন।
-
তিনি বাংলা একাডেমির ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ সম্পাদনা করেন, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে। এটি বাংলা ভাষার প্রথম ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ভাষার অভিধান।
তাঁর ভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
বাংলা সাহিত্যের কথা ইত্যাদি
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের নাম-
Created: 1 week ago
A
বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
B
বাংলা সাহিত্যের কথা
C
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
D
বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য গবেষণায় এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তাঁর রচিত ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে গণ্য হয়। এই গ্রন্থে তিনি বাংলা সাহিত্যের উৎস, বিকাশ ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। গ্রন্থটি কেবল সাহিত্য ইতিহাস নয়, বরং ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি ও সমাজজীবনের পারস্পরিক সম্পর্কও তুলে ধরে।
– ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থটি মূলত বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ধারা থেকে আধুনিক পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত একটি বিশ্লেষণধর্মী কাজ। এখানে তিনি বাংলা সাহিত্যের উৎপত্তিকে পালি, সংস্কৃত, প্রাকৃত ও আপভ্রংশ ভাষার ধারার সঙ্গে যুক্ত করে দেখিয়েছেন।
– বইটিতে তিনি সাহিত্যকে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, যা বাংলা সাহিত্যের ঐতিহাসিক বিকাশ বোঝাতে সহায়ক।
– ড. শহীদুল্লাহর বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, বাংলা ভাষার মূল শিকড় আর্য ও দ্রাবিড় ভাষার সংমিশ্রণে গঠিত, এবং এর সাহিত্যও তেমনি বহুমাত্রিক উৎস থেকে সমৃদ্ধ হয়েছে।
– তিনি প্রমাণ করেছেন যে বাংলা সাহিত্য কেবল কাব্যিক প্রকাশ নয়, বরং সমাজের ইতিহাস, ধর্মীয় চেতনা ও জাতিগত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন।
– গ্রন্থে চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি, মুকুন্দরাম, ভারতচন্দ্র প্রমুখ কবিদের সাহিত্যকীর্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যের ধারাবাহিকতা তুলে ধরেছেন।
– আধুনিক যুগে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ লেখকের অবদান নিয়েও তিনি সম্যক আলোচনা করেছেন।
– তাঁর এই গ্রন্থের ভাষা প্রাঞ্জল, তথ্যভিত্তিক ও বিশ্লেষণধর্মী হওয়ায় এটি গবেষণার ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে স্বীকৃত।
– বইটির মাধ্যমে ড. শহীদুল্লাহ প্রমাণ করেছেন যে সাহিত্য শুধু রস বা বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং জাতিসত্তার পরিচয় ও ঐতিহ্যের বাহক।
– তিনি সাহিত্য ইতিহাস লেখার সময় কোনো ধর্মীয় পক্ষপাতিত্ব না রেখে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন, যা তাঁর রচনাকে আরও মূল্যবান করে তুলেছে।
– এই গ্রন্থের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে তিনি সাহিত্যকে যুগভিত্তিকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন—প্রাক-চৈতন্য যুগ, চৈতন্য যুগ ও পরবর্তী আধুনিক যুগ—যার ফলে বাংলা সাহিত্যের বিকাশের একটি স্পষ্ট ধারাবাহিক চিত্র পাওয়া যায়।
সব মিলিয়ে, ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ বাংলা সাহিত্য ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে একটি দিকনির্দেশক গ্রন্থ। এটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির শেকড় অন্বেষণের পাশাপাশি আমাদের সাহিত্যিক ঐতিহ্যের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা উপস্থাপন করে।
0
Updated: 1 week ago