১৯৪৬ সালের দাঙ্গার পটভূমিকায় বিজন ভট্টাচার্য রচিত নাটক কোনটি?
A
মরাচাঁদ
B
জীয়নকন্যা
C
গোত্রান্তর
D
অবরোধ
উত্তরের বিবরণ
বিজন ভট্টাচার্যের নাটকসমূহ
-
‘জীয়নকন্যা’ নাটক
-
রচনা: বিজন ভট্টাচার্য, ১৯৪৬।
-
পটভূমি: ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা ও গণনাট্য আন্দোলন।
-
বিষয়: বেদে সমাজের সংস্কার, প্রথা-পদ্ধতি, জাতিগত বিশ্বাস ও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা-বিদ্বেষ।
-
কাঠামো: তিনটি দৃশ্যের গীতিনাট্য।
-
কাহিনী সংক্ষেপ:
-
বেদে-সর্দার কন্যা উলুপী সর্পের দংশনে আহত হয়।
-
গুণীনের দল নানা তন্ত্র-মন্ত্র চালান, তবে সর্প নিরাশার বাণী শোনায়।
-
অবশেষে তাদের প্রচেষ্টায় উলুপীকে বিষমুক্ত করা হয় ও মহাজাগরণ ঘটে, যা তৎকালীন ‘ক্যালাস সরকার’-এর প্রতি প্রতিবাদের প্রতীক।
-
-
-
‘মরাচাঁদ’ নাটক
-
বিষয়: সমাজের নিম্নশ্রেণির মানুষের জীবন-সংগ্রাম।
-
বিশেষত্ব: নাটকের মধ্যে পবন বাউলের গান ব্যবহৃত।
-
-
‘গোত্রান্তর’ (১৯৬০)
-
বিষয়: ছিন্নমূল পূর্ববঙ্গবাসীর ভাগ্যবিপর্যয়।
-
-
‘অবরোধ’ (১৯৪৭)
-
বিষয়: মুনাফাখোর মিল-মালিক ও শোষিত শ্রমিকদের সংগ্রাম।
-
লক্ষ্য: কারখানার মালিক-শ্রমিক সংঘর্ষ ও কমিউনিজমের আদর্শ।
-
মন্তব্য: পুঁজিবাদী মালিকের চরিত্রায়নের দুর্বলতার কারণে গণনাট্য সংঘ গ্রহণ করেনি।
-
বিজন ভট্টাচার্যের নাটকগুলো মূলত সামাজিক আন্দোলন, শোষণ ও সংগ্রামের প্রতিফলন হিসেবে প্রাসঙ্গিক।
0
Updated: 1 month ago
সেলিম আল দীনের নাটকে অনুসৃত শিল্পতত্ত্ব -
Created: 1 week ago
A
অস্তিত্ববাদ
B
অভিব্যক্তিবাদ
C
পরাবাস্তববাদ
D
দ্বৈতাদ্বৈতবাদ
সেলিম আল দীন, যিনি ১৯৪৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে খ্যাত, তাঁর রচনায় দ্বৈতাদ্বৈতবাদ শিল্পতত্ত্ব বা সাহিত্যরীতি অনুসৃত হয়েছে। তিনি ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনি জেলার সোনাগাজী উপজেলার সেনেরখিল গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
সেলিম আল দীন ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৮৬ সালে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে যোগদান করেন, যেখানে তিনি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নাটকগুলিতে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণী, পেশাজীবী, এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সমাজজীবন ও সংস্কৃতির মহাকাব্যিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি ঢাকা থিয়েটার এবং বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নাট্য রচনার জন্য তিনি ‘দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পতত্ত্ব’ নামে এক নতুন শিল্প রীতি প্রবর্তন করেন, যা বাংলা সাহিত্যে একটি নবতর ধারার সূচনা করে। পাশ্চাত্য শিল্পের বিভাজনকে অস্বীকার করে, সেলিম আল দীন বাঙালির হাজার বছরের নন্দতত্ত্বের আলোকে একটি নতুন শিল্প দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন।
শুধু নাটক রচনা নয়, তিনি নাট্যতত্ত্ব সম্পর্কিত বহু গবেষণামূলক প্রবন্ধও রচনা করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ (১৯৯৬)। তিনি বাঙলা নাট্যকোষ নামে নাট্যবিষয়ক একটি কোষগ্রন্থও সংকলন ও সম্পাদনা করেন। এছাড়া, থিয়েটার স্টাডিজ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং নাট্যশিক্ষার্থীদের জন্য ‘নন্দিকেশ্বরের অভিনয় দর্পণ’ (১৯৮২) গ্রন্থটি অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন।
সেলিম আল দীনের অন্যান্য প্রকাশিত সাহিত্যকীর্তির মধ্যে রয়েছে:
-
কাব্যগ্রন্থ: কবি ও তিমি,
-
উপন্যাস: অমৃত উপাখ্যান।
তার রচনাসমগ্র ৫ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে (২০০৫-২০০৯)।
0
Updated: 1 week ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'তাসের দেশ' নাটকটি কাকে উৎসর্গ করেন?
Created: 2 months ago
A
কাজী নজরুল ইসলামকে
B
মহাত্মা গান্ধীকে
C
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে
D
ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে
'তাসের দেশ' — নাটক
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
ধরন: রূপক নাট্য
-
প্রকাশ: ১৯৩৩
-
ভিত্তি: রবীন্দ্রনাথের এক আষাঢ়ে গল্প নামক গল্পের কাহিনি
-
কাহিনী: রাজপুত্র এবং সদাগর পুত্র এক অপরিচিত দ্বীপে পৌঁছায়, যেখানে জীবন শাসিত হয় যান্ত্রিক নিয়মানুবর্তিতায়, যুক্তি ও হৃদয়হীন শাসনতন্ত্রের আনুগত্যে। রাজপুত্র এবং সদাগর এই নিয়মবন্দি জীবনে বিদ্রোহ নিয়ে আসেন।
-
উৎসর্গ: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে
-
উদ্দেশ্য: উপনিবেশ শাসিত ভারতীয়দের জড়ত্ব ঘোচাতে রবীন্দ্রনাথ মুক্তিদূত রূপী রাজপুত্রের আগমন কামনা করেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক অন্যান্য উৎসর্গকৃত গ্রন্থ:
-
তাসের দেশ — নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
-
পূরবী — ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো
-
বসন্ত — কাজী নজরুল ইসলাম
-
খেয়া — জগদীশচন্দ্র বসু
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা; বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 2 months ago
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির পটভূমিতে রচতি 'কবর' নাটকের রচয়িতা কে?
Created: 4 months ago
A
কবির চৌধুরী
B
মুনীর চৌধুরী
C
সৈদয় শামসুল হক
D
মুনতাসীর মামুন
• ‘কবর’ নাটক:
- ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে মুনীর চৌধুরী রচিত নাটক 'কবর'।
- নাটকটি লেখক জেলে থাকা অবস্থায় রচনা করেন এবং ১৯৫৩ সালে জেলের রাজবন্দিদের দ্বারা নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়।
- নাটকটি ১৯৬৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
- এটি একুশের পটভূমিতে রচিত প্রথম বাংলা নাটক।
• ‘কবর’ নাটকের কাহিনি সংক্ষেপ:
- মার্কিন নাট্যকার Irwin Shaw রচিত 'Bury The Dead' (১৯৩৬) নাটকের অনুসরণে এদেশীয় ঘটনা কেন্দ্র করে 'কবর' নাটক লেখা হয়েছে।
- 'কবর' নাটকে মিছিলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে শহরে কারফিউ দিয়ে লাশ গুম করতে গভীর রাতে কবরস্থানে নিয়ে যায়। পুলিশ ইন্সপেক্টর হাফিজ এবং নেতা (নাটকে তার নাম নেই) যৌথভাবে এ দায়িত্ব নেয়। কিন্তু লাশগুলো ছিন্নভিন্ন দেখে তারা ধর্মীয় প্রথা অনুসারে কবরস্থ না করে একত্রে মাটিচাপা দেবার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বাধা দেয় গোর-খোদক। কবরস্থানে আশ্রয় নেয়া আরেক স্বজনহারা পাগল মুর্দা ফকিরও প্রতিবাদ জানায়।
বলে: এ লাশগুলো আন্দোলনকারীর। এরা এভাবে কবরে যাবে না। লাশগুলোও তখন উঠে দাঁড়ায় এবং বলে: আমরা কবরে যাবো না। এসব দেখে মদ্যপ ইন্সপেক্টর ও নেতা ভয় পেয়ে যায়।
---------------------
• মুনীর চৌধুরী:
- মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী।
- ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে তাঁর জন্ম।
- মুনীর চৌধুরী শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মুনীর চৌধুরীর মৌলিক নাটক:
- রক্তাক্ত প্রান্তর,
- চিঠি,
- কবর,
- দণ্ডকারণ্য।
অনুবাদ নাটক:
- কেউ কিছু বলতে পারে না,
- রূপার কৌটা ও
- মুখরা রমণী বশীকরণ।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 4 months ago