জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কোন সাহিত্যকর্মটি বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত?
A
রমজানের ঐ রোজার শেষে (গান)
B
বিদ্রোহী (কবিতা)
C
চল্ চল্ চল্ (কবিতা/গান)
D
কারার ঐ লৌহ-কপাট (গান)
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের রণসঙ্গীত ও কাজী নজরুল ইসলাম
-
রণসঙ্গীত: বাংলাদেশের রণসঙ্গীতের রচয়িতা হলেন কাজী নজরুল ইসলাম।
-
চল্ চল্ চল্: তাঁর কবিতা ‘চল্ চল্ চল্’-এর ২১ লাইন বাংলাদেশের রণসঙ্গীত হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত।
-
গৃহীত তারিখ: ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি, বাংলাদেশের মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে রণসঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়।
-
প্রকাশ: মূলত এটি ‘নতুনের গান’ শিরোনামে ঢাকার ‘শিখা’ পত্রিকা-তে ১৯২৮ (১৩৩৫ বঙ্গাব্দ) সালে প্রকাশিত হয়। পরে নামকরণ হয় ‘চল্ চল্ চল্’।
-
অন্তর্ভুক্তি: নজরুলের ‘সন্ধ্যা’ কাব্যগ্রন্থেও এই সঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত।
-
সঙ্গীতের তাল ও ছন্দ: দাদরা তাল অনুসৃত।
-
প্রথম কয়েকটি লাইন:
"চল্ চল্ চল্!
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণী-তল,
অরুণ প্রাতের তরুণ দল- ..."
এই রণসঙ্গীত জাতীয় চেতনার প্রতীক হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের সাহিত্যে ও সঙ্গীতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
0
Updated: 1 month ago
কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম প্রকাশিত গল্প কোনটি?
Created: 1 month ago
A
রিমেহের নেগার
B
কাণ্ডারী হুশিয়ার
C
রাক্ষুসী
D
বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী
কাজী নজরুল ইসলাম ২৪ মে ১৮৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বাংলা সাহিত্যে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে পরিচিত এবং আধুনিক বাংলা গানের জগতে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাতি অর্জন করেন। নজরুলের কবি ও শিল্পী জীবনের শুরু এ লেটোদল থেকেই।
নজরুল তাঁর সাহিত্যকর্ম এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অবিভক্ত বাংলায় পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ, মৌলবাদ এবং দেশি-বিদেশি শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে সমাদৃত। নজরুল ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ সালে মৃত্যু বরণ করেন।
কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কিত তথ্য
-
প্রথম প্রকাশিত গল্প: বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনী, যা ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে সওগাত পত্রিকার মে-জুন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
-
গল্পগ্রন্থসমূহ:
-
ব্যথার দান
-
রিক্তের বেদন
-
শিউলিমালা
-
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
'সাম্যবাদী' কাব্যগ্রন্থের লেখক কে?
Created: 2 months ago
A
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
প্রমথ চৌধুরী
C
কাজী নজরুল ইসলাম
D
কাজী মোতাহার হোসেন
কাজী নজরুল ইসলাম
বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব কাজী নজরুল ইসলাম।
তিনি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
নজরুলের ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি পরিচিত ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে এবং আধুনিক বাংলা গানের জগতে খ্যাত ‘বুলবুল’ নামে।
তাঁর প্রথম গদ্য রচনা হলো ‘বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী’।
তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
অগ্নিবীণা
-
বিষের বাঁশি
-
ভাঙার গান
-
সাম্যবাদী
-
সর্বহারা
-
ফণীমনসা
-
জিঞ্জির
-
প্রলয় শিখা
-
সন্ধ্যা
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা
0
Updated: 2 months ago
কাজী নজরুল ইসলামের নামের সাথে জড়িত 'ধূমকেতু' কোন ধরনের প্রকাশনা?
Created: 3 months ago
A
কবিতা
B
পত্রিকা
C
উপন্যাস
D
ছোটগল্প
[অপশনে একের অধিক সঠিক উত্তর থাকায় প্রশ্নটি বাতিল করা হলো।]
কাজী নজরুল ইসলাম ও 'ধূমকেতু'— কবিতা ও পত্রিকায় বিদ্রোহের প্রতিচ্ছবি
কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্মে 'ধূমকেতু' শব্দটি একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে— এটি একদিকে তার একটি কবিতা, অন্যদিকে একটি অর্ধসাপ্তাহিক পত্রিকার নাম। উভয় প্রকাশনাই তার বিপ্লবী মনন ও প্রতিবাদী চেতনার প্রতিফলন ঘটায়।
'অগ্নিবীণা' কাব্যগ্রন্থ ও 'ধূমকেতু' কবিতা
নজরুলের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অগ্নিবীণা' প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২২ সালে। এই গ্রন্থটি বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে উৎসর্গ করা হয়। এতে মোট ১২টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ‘ধূমকেতু’ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
'অগ্নিবীণা' কাব্যের কবিতাগুলোর নাম:
প্রলয়োল্লাস, বিদ্রোহী, রক্তাম্বর-ধারিণী মা, আগমণী, ধূমকেতু, কামাল পাশা, আনোয়ার, রণভেরী, শাত-ইল-আরব, খেয়াপারের তরণী, কোরবানী, মহররম।
এই গ্রন্থের প্রথম কবিতা ‘প্রলয়োল্লাস’ এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতা ‘বিদ্রোহী’, যার মাধ্যমে নজরুল ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে পরিচিতি পান।
‘ধূমকেতু’ কবিতা একটি প্রতীকী কাব্যরূপ, যেখানে কবি নিজেকে বিপ্লব ও ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। কবিতায় ধ্বংস, শুদ্ধি ও নতুন সূর্যের আগমনের ইঙ্গিত স্পষ্ট:
"আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুন মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!"
এই পঙ্ক্তির মাধ্যমে নজরুল নিজেকে শিবের তৃতীয় চক্ষুর ন্যায় ধ্বংসকারী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যা অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।
'ধূমকেতু' পত্রিকা: স্বাধীনতার জ্বলন্ত মশাল
১৯২২ সালে কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘ধূমকেতু’ নামে একটি অর্ধসাপ্তাহিক পত্রিকা, যা দ্রুতই হয়ে ওঠে ব্রিটিশবিরোধী চেতনার প্রবল বাহক। এই পত্রিকা সপ্তাহে দু’বার প্রকাশিত হতো এবং সাহিত্যের পাশাপাশি রাজনৈতিক বক্তব্য প্রকাশেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করত।
বিশেষত্ব:
-
'ধূমকেতু' পত্রিকা মূলত সশস্ত্র বিপ্লববাদকে প্রেরণা জোগাত।
-
এর একটি সংখ্যায় (২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২) নজরুলের বিতর্কিত কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ সরকার তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
-
পত্রিকার পরিচিতি-সংলাপ ছিল: "কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু।"
এই পত্রিকার মাধ্যমে নজরুল কেবল সাহিত্যিক নন, এক বিদ্রোহী জাতীয় চেতনার ধারক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন।
‘ধূমকেতু’ শব্দটি নজরুলের সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক জীবনের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের প্রতীক।
কবিতার মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেছেন তাঁর বিপ্লবী চেতনার দৃষ্টিভঙ্গি, আর পত্রিকার মাধ্যমে সমাজে সেই চেতনার বাস্তব প্রয়োগ।এভাবেই কাজী নজরুল ইসলাম বাংলার সাহিত্য ও ইতিহাসে একটি অমর নাম হয়ে উঠেছেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া,‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থ.
0
Updated: 3 months ago