'আলালের ঘরের দুলাল' প্রথমে কোন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়?
A
বিবিধার্থ সংগ্রহ
B
সংবাদ প্রভাকর
C
মাসিক পত্রিকা
D
বঙ্গদর্শন
উত্তরের বিবরণ
প্যারীচাঁদ মিত্রের প্রথম গ্রন্থ 'আলালের ঘরের দুলাল' বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সফল উপন্যাস হিসেবে পরিচিত। এটি ১৮৫৮ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হলেও, ১৮৫৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে 'মাসিক পত্রিকা'তে প্রকাশিত হতে থাকে।
উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু কলকাতার সমকালীন সমাজ এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের আদুরে সন্তান মতিলালের উচ্ছৃঙ্খল জীবনাচার। লেখক কথ্যভঙ্গির গদ্য ব্যবহার করে উপন্যাসটিকে বাস্তবধর্মী করেছেন, যা পরবর্তীতে 'আলালী ভাষা' নামে পরিচিতি পায়। কাহিনি ও চরিত্রের যথাযথ প্রকাশের জন্য তদ্ভব, চলিত এবং বিদেশি শব্দও ব্যবহার করা হয়েছে।
পরবর্তীতে হীরালাল মিত্র নাট্যরূপে এটি মঞ্চস্থ করেন (জানুয়ারি ১৮৭৫) এবং গ্রন্থটি ইংরেজিতেও অনূদিত হয়। উপন্যাসে দেশীয় শিক্ষাব্যবস্থা, পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুকরণ এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিশৃঙ্খলা নিয়ে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে।
ধনী বাবুরামের পুত্র মতিলাল পিতার অবহেলায় অধঃপতনে পতিত হয় এবং পিতার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি নষ্ট করে ফেলে। উপন্যাসের উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হলো:
-
মোকাজান মিয়া বা ঠকচাচা
-
বাবুরাম
-
বাবুরামের পুত্র মতিলাল
-
ধূর্ত উকিল বটলর
-
অর্থলোভী বাঞ্ছারাম
-
তোষামোদকারী বক্রেশ্বর
প্যারীচাঁদ মিত্র ছিলেন একজন লেখক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিসেবী ও ব্যবসায়ী, যিনি ১৮১৪ সালের ২২ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবন পারিবারিক পরিবেশে শুরু করে তিনি পণ্ডিত ও মুনশির কাছে যথাক্রমে বাংলা ও ফারসি ভাষা শিখেন। ১৮২৭ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হয়ে খ্যাতিমান শিক্ষক হেনরি ডিরোজিওর তত্ত্বাবধানে শিক্ষা সম্পন্ন করেন।
১৮৩৬ সালে কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরিতে ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বাংলা গদ্যের বিবর্তন ও নতুন ভঙ্গি প্রবর্তনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, বিশেষত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রভাবকে অনুকরণ না করে নিজের অভিনব লঘু ভঙ্গি তৈরি করেছেন।
প্যারীচাঁদ মিত্রের সাহিত্যকর্মগুলো হলো:
-
'মদ খাওয়া বড় দায়, জাত থাকার কি উপায়' (১৮৫৯) – তৎকালীন গোঁড়া শ্রেণির ব্যক্তিদের চিত্রাঙ্কন, ভাষা সহজ সরল।
-
'রামারঞ্জিকা' (১৮৬০) – স্ত্রীশিক্ষামূলক গ্রন্থ।
-
'কৃষিপাঠ' (১৮৬১), 'যৎকিঞ্চিৎ' (১৮৬৫), 'ডেবিড হেয়ারের জীবনচরিত' (১৮৭৮) – প্রবন্ধমূলক বই।
-
'অভেদী' (১৮৭১), 'আধ্যাত্মিকা' (১৮৮০) – সংলাপপ্রধান গল্পমূলক, নীতিবিষয়ক।
-
'গীতাঙ্কুর' (৩য় সংস্করণ, ১৮৭০) – ব্রহ্মবিষয়ক গানের সমষ্টি।
-
'এতদ্দেশীয় স্ত্রীলোকদিগের পূর্বাবস্থা' (১৮৭৮) – প্রাচীন ভারতের নারীদের শিক্ষা ও মহত্ত্বের বর্ণনা।
-
'বামাতোষিণী' (১৮৮১) – নারীশিক্ষার উদ্দেশ্যে সর্বশেষ রচনা।

0
Updated: 22 hours ago
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বিশিষ্ট পত্রিকা 'কল্লোল' কত সালে প্রথম প্রকাশিত হয় ?
Created: 1 month ago
A
১৯২৩ সালে
B
১৯২৪ সালে
C
১৯২৫ সালে
D
১৯২৭ সালে
কল্লোল পত্রিকা (১৯২৩)
‘কল্লোল’ পত্রিকাটি ১৯২৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি অতি আধুনিক লেখকগোষ্ঠীর ভাব ও মত প্রকাশের একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছিল। পত্রিকাটি কলকাতা থেকে মাসিক আকারে প্রকাশিত হত।
পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন দীনেশরঞ্জন দাশ। এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তখনকার গুরুত্বপূর্ণ লেখক ও কবিরা, যেমন অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম ও মোহিতলাল মজুমদার।
উৎস:
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 1 month ago
দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল-দর্পণ' নাটক প্রথম কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?
Created: 1 month ago
A
কলকাতা
B
ঢাকা
C
লন্ডন
D
মুর্শিদাবাদ
নীল-দর্পণ
-
‘নীল-দর্পণ’ নাটকটি দীনবন্ধু মিত্রের সবচেয়ে বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ রচনা। এটি লেখা হয় ১৮৬০ সালে এবং প্রথম প্রকাশিত হয় ঢাকা থেকে।
-
এই নাটকে সে সময়কার নীলচাষ, ইংরেজ নীলকরদের অত্যাচার, এবং শাসকদের পক্ষপাতমূলক আচরণ তুলে ধরা হয়েছে।
-
নাটকটি সমাজে বড় ধরনের আলোড়ন তোলে এবং কৃষকদের নীলবিদ্রোহে সাহস যোগায়।
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত নাটকটির ইংরেজি অনুবাদ করেন ‘A Native’ ছদ্মনামে এবং এর নাম দেন – ‘Nil Darpan or The Indigo Planting Mirror’ (১৮৬১)।
-
ইংরেজি অনুবাদটি প্রকাশ করেছিলেন পাদ্রি জেমস লং, যিনি পরে আদালতের মাধ্যমে জরিমানার শিকার হন।
-
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নাটকটিকে তুলনা করেন বিখ্যাত ইংরেজি উপন্যাস ‘আঙ্কল টমস কেবিন’-এর সঙ্গে।
-
এটি বাংলা নাট্যসাহিত্যে প্রথম বিদেশি ভাষায় অনূদিত নাটক।
-
১৮৬০ সালে এটি ‘কস্যচিৎ পথিকস্য’ ছদ্মনামে প্রথম ছাপা হয়।
-
১৮৭২ সালের ৭ ডিসেম্বর, এটি দিয়েই শুরু হয় কলকাতার ‘সাধারণ রঙ্গালয়’-এর প্রথম নাট্যাভিনয়।
-
আজও এটি জাতীয় চেতনার প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
দীনবন্ধু মিত্র
-
দীনবন্ধু মিত্র জন্মগ্রহণ করেন ১৮৩০ সালে, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চৌবেড়িয়া গ্রামে, একটি দরিদ্র পরিবারে।
-
তাঁর আসল নাম ছিল গন্ধর্বনারায়ণ।
-
তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত নাট্যকার।
-
কলেজে পড়ার সময় তিনি পরিচিত হন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সঙ্গে, যাঁর উৎসাহে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।
-
তিনি ‘সংবাদ প্রভাকর’, ‘সংবাদ সাধুরঞ্জন’ ইত্যাদি পত্রিকায় লিখতেন।
-
তবে তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচিতি আসে নাটক ও প্রহসন লেখার মাধ্যমে।
-
তাঁর লেখা সেরা নাটক হল ‘নীল-দর্পণ’।
-
তিনি মারা যান ১৮৭৩ সালের ১ নভেম্বর।
তাঁর লেখা অন্য কিছু নাটক
-
নবীন তপস্বিনী
-
লীলাবতী
-
কমলে কামিনী
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 1 month ago
দীনবন্ধু মিত্রের 'নীল-দর্পণ' নাটক প্রথম কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?
Created: 2 weeks ago
A
কলকাতা
B
ঢাকা
C
লন্ডন
D
মুর্শিদাবাদ
নীল-দর্পণ
-
রচয়িতা ও প্রকাশ: ‘নীল-দর্পণ’ (১৮৬০) নাটকটি দীনবন্ধু মিত্র রচিত এবং এটি তার শ্রেষ্ঠ নাটক হিসেবে পরিচিত। প্রথম প্রকাশিত হয় ঢাকা থেকে ১৮৬০ সালে।
-
বিষয়বস্তু: নাটকটি তখনকার সময়ের নীলচাষী কৃষক ও নীলকর সাহেবদের প্রজাপীড়ন, শাসকশ্রেণীর পক্ষপাতমূলক আচরণ ও অসাম্য তুলে ধরে।
-
সমাজে প্রভাব: এটি প্রকাশিত হওয়ার পর সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং কৃষকদের নীলবিদ্রোহকে প্রভাবিত করে।
-
অনুবাদ ও বিতর্ক: মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘A Native’ ছদ্মনামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, নাম দেন ‘Nil Darpan or The Indigo Planting Mirror’ (১৮৬১)। প্রকাশক পাদ্রি জেমস লং আদালতের অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হন।
-
প্রশংসা ও তুলনা: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নাটকটিকে আমেরিকান ঔপন্যাস ‘আঙ্কল টমস কেবিন’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
-
বিশেষত্ব: এটি রচনার সময় থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় চেতনার উজ্জীবক নাটক হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও, এটি বিদেশি ভাষায় অনূদিত প্রথম বাংলা নাটক।
-
প্রকাশ ইতিহাস: ১৮৬০ সালে ‘কস্যচিৎ পথিকস্য’ ছদ্মনামে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৮৭২ সালের ৭ ডিসেম্বর এই নাটকের মাধ্যমে সাধারণ রঙ্গালয়ে অভিনয়ের সূচনা হয়।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 2 weeks ago