বাঙালির মুক্তির সনদ ‘ছয় দফা' কোন তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘােষণা করা হয়েছিল?
A
২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪
B
২২ মার্চ ১৯৫৮
C
২০ এপ্রিল ১৯৬২
D
২৩ মার্চ ১৯৬৬
উত্তরের বিবরণ
১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষার দাবি নিয়ে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যা ইতিহাসে ৬ দফা কর্মসূচি নামে পরিচিত।
পরবর্তীতে ২৩ মার্চ, ১৯৬৬ সালে লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই ৬ দফা দাবি ঘোষণা করেন। ৬ দফা দাবিকে বাঙালি জাতির ‘মুক্তির সনদ’ বা ‘ম্যাগনেকার্টা’ হিসেবে স্বীকৃত। এটি ঐতিহাসিক ‘লাহোর প্রস্তাব’ এর ভিত্তিতে রচিত।
দফাগুলো হলো:
-
প্রথম দফা: প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন।
-
দ্বিতীয় দফা: কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা সীমিত করা।
-
তৃতীয় দফা: মুদ্রা ও অর্থসংক্রান্ত ক্ষমতা।
-
চতুর্থ দফা: রাজস্ব, কর ও শুল্ক সংক্রান্ত ক্ষমতা।
-
পঞ্চম দফা: বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত ক্ষমতা।
-
ষষ্ঠ দফা: আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা।
0
Updated: 1 month ago
ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করা হয় ১৯৬৬ সালের-
Created: 2 months ago
A
ফেব্রুয়ারিতে
B
মে মাসে
C
জুলাই মাসে
D
আগস্টে
ছয় দফা কর্মসূচি
১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি, লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষার স্বার্থে একটি কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এই কর্মসূচিই পরবর্তীতে ইতিহাসে ছয় দফা কর্মসূচি নামে পরিচিত হয়।
পরবর্তীতে, ২৩ মার্চ ১৯৬৬ সালে লাহোরের এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ মুজিব আনুষ্ঠানিকভাবে এই ছয় দফা প্রকাশ করেন। বাংলার জনগণের কাছে এটি ছিল মুক্তির মূল সনদ, যা ইতিহাসে “বাঙালির মুক্তির সনদ” বা “ম্যাগনা কার্টা” নামে খ্যাত। এই দাবিসমূহ মূলত ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব (১৯৪০) এর আদর্শ থেকে প্রভাবিত ছিল।
ছয় দফা দাবি
-
প্রথম দফা: পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা।
-
দ্বিতীয় দফা: প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক নীতির বাইরে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা সীমিত রাখা।
-
তৃতীয় দফা: মুদ্রা ও আর্থিক ব্যবস্থার উপর প্রাদেশিক সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।
-
চতুর্থ দফা: রাজস্ব আদায় ও কর/শুল্ক সংগ্রহে প্রাদেশিক সরকারের কর্তৃত্ব।
-
পঞ্চম দফা: বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
-
ষষ্ঠ দফা: পূর্ব পাকিস্তানে নিজস্ব আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের অধিকার।
উৎসঃ পৌরনীতি ও সুশাসন, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি – প্রফেসর মোঃ মোজাম্মেল হক, বাংলাপিডিয়া (Banglapedia).
0
Updated: 2 months ago
৬-দফা দাবি কোথায় উত্থাপিত হয়?
Created: 3 months ago
A
ঢাকা
B
লাহোর
C
দিল্লি
D
চট্টগ্রাম
ছয় দফা
ছয় দফা দাবি ছিল বাঙালিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
-
১৯৬৬ সালে এই ছয় দফা দাবি তোলা হয়।
-
৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬, পাকিস্তানের লাহোরে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই দাবি উত্থাপন করেন।
-
এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয় দফা দাবিকে বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
-
২৩ ফেব্রুয়ারি বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে শেখ মুজিব ছয় দফা আবারও পেশ করেন।
-
১৮ মার্চ, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে ‘আমাদের বাঁচার দাবি: ছয় দফা কর্মসূচি’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়।
ছয় দফা দাবির মূল বিষয়গুলো
১. প্রথম দফা: পাকিস্তানের নতুন সংবিধানে ফেডারেল (যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক) সরকার থাকবে, এবং প্রতিটি প্রদেশ স্বায়ত্তশাসিত হবে।
২. দ্বিতীয় দফা: প্রতিটি প্রদেশ নিজস্ব শাসন ব্যবস্থা ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতা পাবে।
৩. তৃতীয় দফা: পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য পৃথক মুদ্রা অথবা একই মুদ্রা ব্যবহারের ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আলাদা রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে।
৪. চতুর্থ দফা: পূর্ব পাকিস্তান নিজস্ব রাজস্ব ও শুল্ক ব্যবস্থা পরিচালনা করবে।
৫. পঞ্চম দফা: বিদেশি বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৬. ষষ্ঠ দফা: প্রতিরক্ষা ও মিলিটারি বাহিনী গঠনে পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব ক্ষমতা থাকবে।
উৎস: পৌরনীতি ও সুশাসন, দ্বিতীয় পত্র, এইচএসসি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
0
Updated: 3 months ago
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামান কবে ও কোথায় ছয় দফা ঘোষণা করেন?
Created: 5 days ago
A
১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে লাহোরে
B
৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে লাহোরে
C
৭ জুন ১৯৬৬ সালে ঢাকার পল্টন ময়দানে
D
১৪ আগস্ট ১৯৬৬ সালে করাচীতে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি। তাঁর প্রদত্ত ছয় দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। এই ঐতিহাসিক কর্মসূচি তিনি ঘোষণা করেন ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি মাইলফলক হয়ে ওঠে এবং পরে মুক্তিযুদ্ধের পথ সুগম করে।
• বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণের ন্যায্য দাবি তুলে ধরার জন্য ছয় দফা প্রণয়ন করেন।
• এই কর্মসূচিতে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।
• ছয় দফার মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শাসনের পরিবর্তে একটি ফেডারেল শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে প্রদেশগুলোর অধিক ক্ষমতা থাকবে।
• এই কর্মসূচিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে শুধু পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা বিষয় দুটি থাকবে, বাকি সব ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
• দ্বিতীয় দফায় বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র বৈদেশিক বাণিজ্য ও মুদ্রানীতি কেন্দ্রের অধীনে থাকবে, তবে পূর্ব পাকিস্তান নিজস্ব বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
• তৃতীয় দফায় বলা হয়, প্রদেশগুলোর হাতে রাজস্ব আদায় ও কর ব্যবস্থা থাকবে, যাতে তারা নিজেদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে।
• চতুর্থ দফায় ছিল দুটি পৃথক মুদ্রা চালু করার প্রস্তাব, যাতে পশ্চিম পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করতে না পারে।
• পঞ্চম দফায় বলা হয়, প্রাদেশিক সরকার বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অধিকার রাখবে এবং তার ব্যবহার নিজের মতো করতে পারবে।
• ষষ্ঠ দফায় প্রাদেশিক সরকারের হাতে বাণিজ্য ও বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়, যাতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়।
• বঙ্গবন্ধু এই কর্মসূচির মাধ্যমে মূলত ঘোষণা করেন যে, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধিকার ছাড়া বাঙালি জাতির মুক্তি অসম্ভব।
• পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী প্রথমে এই দফাগুলোকে দেশবিরোধী হিসেবে অভিহিত করে বঙ্গবন্ধুকে নানাভাবে বাধা দেয়, এমনকি গ্রেপ্তারও করে।
• কিন্তু বাঙালি জনগণ এই ছয় দফাকে নিজেদের মুক্তির সনদ হিসেবে গ্রহণ করে আন্দোলনে নেমে পড়ে।
• পরবর্তীতে এই ছয় দফাই হয়ে ওঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ভিত্তি।
• ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত এই ছয় দফা আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
এইভাবে ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ সালে লাহোরে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা করা ছয় দফা হয়ে ওঠে ইতিহাসের এক যুগান্তকারী অধ্যায়, যা অবশেষে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার পথে নিয়ে যায়।
0
Updated: 5 days ago