ণ-ত্ব বিধি সাধারণত কোন শব্দে প্রযোজ্য? 

Edit edit

A

দেশী 

B

বিদেশী 

C

তৎসম 

D

তদ্ভব

উত্তরের বিবরণ

img

“ণ-ত্ব বিধান” — বাংলা বানানের এক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম

বাংলা ভাষার ব্যাকরণে তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে 'ণ' এবং 'ন' ব্যবহারের একটি সুস্পষ্ট নিয়ম রয়েছে, যাকে বলা হয় "ণ-ত্ব বিধান"। এ বিধান মূলত এমন সব শব্দে প্রযোজ্য হয়, যেখানে বানান বিশুদ্ধ রাখার জন্য 'ণ' এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক।


‘ণ’ ব্যবহারের মূল নিয়মাবলি

১. ট-বর্গীয় ধ্বনির আগে:
যদি কোনো তৎসম শব্দে ট, ঠ, ড, ঢ, ণ- এই বর্ণগুলোর আগে 'ন' থাকে, তাহলে তা 'ণ' হয়ে যায়।
✔ যেমন: ঘণ্টা, কাণ্ড, লুণ্ঠন ইত্যাদি।

২. ঋ, র, ষ -এর পরে:
এ তিনটি ধ্বনির পর যদি ‘ন’ আসে, তবে তা সাধারণত মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।
✔ উদাহরণ: ঋণ, তৃণ, বর্ণ, ভাষণ, ভীষণ, কারণ, ব্যাকরণ, মরণ, উষ্ণ ইত্যাদি।

  1. ঋ, র, ষ-এর পরবর্তী বিশেষ ধ্বনির ক্ষেত্রে:
    যদি ঋ, র, বা ষ-এর পর স্বরধ্বনি, ষ, য, ব, হ, ং, অথবা ক-বর্গ ও প-বর্গীয় ধ্বনি থাকে, তবে পরবর্তী ‘ন’ → ‘ণ’ হয়।
    ✔ যেমন: হরিণ, কৃপণ, অর্পণ, রুক্মিণী, ব্রাহ্মণ, লক্ষণ ইত্যাদি।

  2. স্বতন্ত্র কিছু শব্দে প্রাকৃতিকভাবে 'ণ' থাকে:
    এই শব্দগুলোতে নিয়ম ছাড়াও প্রথাগতভাবে ‘ণ’ ব্যবহৃত হয়।
    ✔ যেমন: কল্যাণ, লাবণ্য, গৌণ, মাণিক্য, শাণ, ফণী, পিণাক, স্থাণু, কণিকা, লবণ, বীণা, গণ, বাণিজ্য ইত্যাদি।


যেসব ক্ষেত্রে ‘ণ-ত্ব বিধান’ প্রযোজ্য নয়

১. সমাসবদ্ধ শব্দে সাধারণত ‘ণ’ হয় না:
✔ যেমন: ত্রিনয়ন, সর্বনাম, দুর্নীতি, পরনিন্দা, অগ্রনায়ক

২. ত-বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে ‘ন’ থাকলে:
এ ধরনের ক্ষেত্রে 'ন' কখনো 'ণ' হয় না।
✔ যেমন: অন্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন

৩. দেশি, তদ্ভব বা বিদেশি শব্দে:
এই ধরনের শব্দে বানানে 'ণ' ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।
✔ যেমন: ধান, মন, পানি, কলা, নাম, খাতা ইত্যাদি।


বাংলা বানানের শুদ্ধতা বজায় রাখতে ‘ণ-ত্ব বিধান’ জানা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষত তৎসম শব্দ ব্যবহারে। এই বিধান অনুসরণ করলেই আমরা লিখিত বাংলায় শুদ্ধতা ও সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারি।

উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি (২০১৯ সংস্করণ)

Unfavorite

0

Updated: 3 weeks ago

Related MCQ

Get Our App

Download our app for a better experience.

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD