'বিরাগী' শব্দের অর্থ কী?
A
উদাসীন
B
প্রতিকূল
C
রাগহীন
D
বিশেষভাবে রুষ্ট
উত্তরের বিবরণ
বিরাগী (বিশেষণ)
-
শব্দটি সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত।
-
অর্থ হলো: উদাসীন, আসক্তিহীন এবং নিঃস্পৃহ।
-
বিরাগী শব্দের অর্থ অনুরাগী শব্দের সম্পূর্ণ বিপরীত।
উৎস: বাংলা একাডেমি, আধুনিক বাংলা অভিধান।
0
Updated: 3 months ago
'চর্যাচর্যবিনিশ্চয়'-এর অর্থ কী?
Created: 2 months ago
A
কোনটি চর্যাগান, আর কোনটি নয়
B
কোনটি আচরণীয়, আর কোনটি নয়
C
কোনটি চরাচরের, আর কোনটি নয়
D
কোনটি আচার্যের, আর কোনটি নয়
চর্যাপদ
চর্যাপদের মূল নাম ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
-
এটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন।
-
১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে এই পুথি আবিষ্কার করেন।
শব্দ বিশ্লেষণ:
-
চর্যাচর্য (বিশেষ্য): অর্থ হলো – “আচরণযোগ্য ও অনাচরণীয়”, অর্থাৎ কী পালনযোগ্য এবং কী বর্জনীয়।
-
বিনিশ্চয় (বিশেষ্য): অর্থ হলো – “স্থির সিদ্ধান্ত” বা “নিঃসন্দেহে নির্ধারিত বিষয়”।
পূর্ণ ব্যাখ্যা:
-
সুতরাং, চর্যাচর্যবিনিশ্চয় অর্থ হলো: “কোনটি আচরণযোগ্য আর কোনটি অনাচরণীয়, তা যে গ্রন্থে বা গীতিকবিতায় স্থিরভাবে নির্ধারিত হয়েছে”।
উৎস: আধুনিক বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমি
0
Updated: 2 months ago
কিংবদন্তি শব্দের অর্থ কি?
Created: 1 week ago
A
পুরাণ
B
ইতিহাস
C
জনশ্রুতি
D
কাব্য
‘কিংবদন্তি’ শব্দটি এমন কাহিনিকে বোঝায় যা সাধারণ মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয় এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়।
এটি কখনো কখনো বাস্তব ঘটনার সঙ্গে কল্পনার মিশ্রণ ঘটিয়ে রচিত হয়, ফলে এতে ইতিহাসের ছোঁয়া যেমন থাকে, তেমনি থাকে কল্পনার রঙও। নিচে এই শব্দটির অর্থ ও বৈশিষ্ট্য ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো।
শব্দার্থ ও উৎপত্তি: ‘কিংবদন্তি’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘কিংবদন্ত’ শব্দ থেকে, যার অর্থ ‘যা বলা উচিত’ বা ‘যা বলা হয়’। ইংরেজি শব্দ Legend এরও উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ legenda থেকে, যার মানে “পঠিত হওয়ার যোগ্য বিষয়”।
অর্থ: এর মূল অর্থ জনশ্রুতি—অর্থাৎ এমন গল্প বা কথা, যা বহুদিন ধরে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত।
প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য:
-
কিংবদন্তি হলো এক ধরনের লোককথা, যা সাধারণত ঐতিহাসিক বা ধর্মীয় চরিত্রকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়।
-
এতে বাস্তব ঘটনা ও কল্পনা মিলেমিশে একটি আকর্ষণীয় রূপ নেয়।
-
বক্তা ও শ্রোতা উভয়েই গল্পটির কিছুটা সত্যতা বিশ্বাস করে।
-
অনেক সময় এতে নৈতিক শিক্ষা, সাহসিকতা বা ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রকাশ পায়।
উদাহরণ: বাংলা সাহিত্যে যেমন—
-
বেহুলা-লক্ষ্মীন্দর কাহিনি,
-
মণসামঙ্গল কাব্যের কাহিনি,
-
আলাউদ্দিন ও পরী বানুর গল্প ইত্যাদি—
এসবই কিংবদন্তির রূপে পরিচিত।
৫. সাহিত্যিক মূল্য:
-
কিংবদন্তি সাহিত্য মানবজীবনের আশা, ভয়, বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটায়।
-
এটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ইতিহাসবিদ ও লোকসংস্কৃতি গবেষকদের জন্য কিংবদন্তি হলো মানুষের মানসিক ইতিহাস বোঝার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
৬. কিংবদন্তি বনাম ইতিহাস:
-
ইতিহাস যাচাইযোগ্য প্রমাণের ওপর নির্ভর করে।
-
কিন্তু কিংবদন্তি যাচাইযোগ্য না হলেও জনগণের বিশ্বাসের ভেতর সত্যের ধারণা বহন করে।
কিংবদন্তি এমন এক সাহিত্যরূপ যা ইতিহাসের সত্য ও কল্পনার মিশেলে গঠিত জনশ্রুতি কাহিনি। এটি মানুষে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক হয়ে উঠে এবং সমাজে চিরস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
0
Updated: 1 week ago
”ইনকিলাব” শব্দের অর্থ কি?
Created: 2 weeks ago
A
বিপ্লব
B
চিরজীবী
C
সন্ত্রাস
D
আন্দোলন
“ইনকিলাব” (انقلاب) শব্দটি মূলত আরবি ভাষা থেকে আগত। এর আদি অর্থ হলো উলট-পালট, পরিবর্তন বা রূপান্তর। এই শব্দটি পরবর্তীকালে ফারসি ও উর্দু ভাষায় প্রচলিত হয় এবং বাংলা ভাষায়ও ব্যবহৃত হতে থাকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে “ইনকিলাব” শব্দের সবচেয়ে প্রচলিত অর্থ হলো বিপ্লব বা বড় ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন।
শব্দতাত্ত্বিকভাবে “ইনকিলাব” শব্দের মূল ধাতু হলো “ক-ল-ব” (قلب), যার অর্থ “উলটে দেওয়া” বা “অন্য রূপে পরিবর্তন করা”। অর্থাৎ, কোনো অবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে বদলে দেওয়া বা পূর্বাবস্থাকে উল্টে ফেলা। তাই ইনকিলাব মানে এমন একটি পরিবর্তন যা সমাজ, রাজনীতি বা রাষ্ট্রে মৌলিক রূপান্তর ঘটায়।
বাংলা ভাষায় “ইনকিলাব” শব্দটি সাধারণত বিপ্লব অর্থে ব্যবহৃত হয়। “বিপ্লব” মানে কোনো দেশের, সমাজের বা ব্যবস্থার পুরোনো কাঠামো ভেঙে নতুন কাঠামো স্থাপন করা। এটি সাধারণত অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণের জাগরণ, রাজনৈতিক পরিবর্তন বা সামাজিক মুক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, “ফরাসি বিপ্লব”, “রুশ বিপ্লব” বা “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ” — এগুলো সবই এক অর্থে “ইনকিলাব”।
আরবি ও ইসলামী ইতিহাসে “ইনকিলাব” শব্দটি কেবল রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, বরং নৈতিক ও সামাজিক পুনর্জাগরণের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। যেমন— “ইনকিলাবে ইসলামী” মানে এমন এক আন্দোলন বা পরিবর্তন যা ইসলামী মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ “ইনকিলাব” শব্দটি ব্যবহার করেছেন আত্মিক ও নৈতিক রূপান্তরের অর্থে।
আধুনিক বাংলায় “ইনকিলাব” শব্দটি বিশেষত উর্দুভাষী সমাজের মাধ্যমে প্রবেশ করেছে। উর্দু কবিতা, গান ও রাজনৈতিক বক্তৃতায় এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি শব্দ। “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” (انقلاب زندہ باد) বাক্যটি তার একটি বিখ্যাত উদাহরণ, যার অর্থ “বিপ্লব চিরজীবী হোক” বা “বিপ্লবের জয় হোক”। এই স্লোগানটি উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের সময় ভারতবর্ষে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষত ভগত সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ প্রমুখ বিপ্লবীদের মুখে। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণার উৎস হিসেবেও এই শব্দটির ব্যবহার গভীর তাৎপর্যপূর্ণ।
বাংলাদেশের ইতিহাসেও “ইনকিলাব” শব্দটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে বিশ শতকের শুরু পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী, সমাজতান্ত্রিক ও ইসলামী আন্দোলনে “ইনকিলাব” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে পরিবর্তন, জাগরণ ও নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার অর্থে। পত্র-পত্রিকায়ও এই শব্দটি দেখা যায়— যেমন “দৈনিক ইনকিলাব” পত্রিকার নামেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যা সংবাদ জগতে পরিবর্তন ও জনগণের কণ্ঠস্বরের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও “ইনকিলাব” শব্দটি এক গভীর প্রেরণার প্রতীক। এটি শুধু অস্ত্রধারী বিপ্লব নয়, বরং চিন্তা, নীতি ও সামাজিক ন্যায়ের ক্ষেত্রেও এক নবজাগরণের আহ্বান। যেমন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় দেখা যায়, তিনি ইনকিলাব বা বিপ্লবের আহ্বান জানিয়েছেন অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে। তাঁর বিখ্যাত পঙক্তি— “আমি চির উন্নত শির” — আসলে সেই বিপ্লবী চেতনারই প্রকাশ।
অতএব, “ইনকিলাব” শব্দটি কেবল একটি আরবি শব্দ নয়; এটি একটি চেতনা, সংগ্রাম ও পরিবর্তনের প্রতীক। এর অর্থ সীমাবদ্ধ নয় কেবল রাজনৈতিক বিপ্লবে, বরং এটি সামাজিক, নৈতিক ও মানসিক পরিবর্তনের দিকেও ইঙ্গিত করে।
সংক্ষেপে বলা যায়, “ইনকিলাব” অর্থ বিপ্লব, যা অন্যায়, অমানবিকতা ও পুরোনো জড় প্রথার বিরুদ্ধে পরিবর্তনের আহ্বান জানায়। এটি এমন এক শব্দ, যা ইতিহাস, রাজনীতি, সাহিত্য ও মানবমুক্তির প্রতীক হিসেবে মানবসমাজে চিরকাল প্রাসঙ্গিক থাকবে।
0
Updated: 2 weeks ago