কোনটি কাজী নজরুল ইসলাম রচতি গ্রন্থ?
A
বিষের বাঁশী
B
বন্দীর বন্দনা
C
সন্দ্বীপের চর
D
রূপসী বাংলা
উত্তরের বিবরণ
কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘বিষের বাঁশী’ বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী সংযোজন। ১৩৩১ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসে (আগস্ট, ১৯২৪) এই কাব্যগ্রন্থটি কবি নিজ উদ্যোগে প্রকাশ করেন।
প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে—এই কাব্যই নজরুলের প্রথম নিষিদ্ধকৃত রচনা। দীর্ঘ ২১ বছর পর, ১৯৪৫ সালের ২৭ এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
এই কাব্যে নজরুলের কাব্যিক বলিষ্ঠতা, উদ্দাম যৌবনের শক্তি, মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক প্রতিচিন্তা ও গীতিময় প্রতিভার পূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে। ‘বিষের বাঁশী’-র কবিতাগুলোর অন্তর্নিহিত ভাবধারা মূলত উদারনৈতিক চেতনায় গঠিত।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ও কবি:
-
‘বন্দীর বন্দনা’ রচনা করেছেন বুদ্ধদেব বসু।
-
‘সন্দ্বীপের চর’ কাব্যগ্রন্থের কবি হলেন বিষ্ণু দে।
-
আর ‘রূপসী বাংলা’ রচনা করেছেন স্বনামধন্য কবি জীবনানন্দ দাশ।
কাজী নজরুল ইসলাম: এক বিদ্রোহী আত্মার নাম
বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে খ্যাত কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজ চেতনার এক অগ্রদূত। তাঁর জন্ম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ, অর্থাৎ ২৪ মে ১৮৯৯ সালে, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। শৈশবে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘দুখু মিয়া’ নামে।
বাংলা সাহিত্যে তিনি পরিচিত ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে, যিনি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে কলমের মাধ্যমে রুখে দাঁড়িয়েছেন। পাশাপাশি আধুনিক বাংলা গানের ভুবনে তাঁর অবদান তাঁকে এনে দিয়েছে ‘বুলবুল’ উপাধি।
উৎস: বাংলা ভাষা সাহিত্য জিজ্ঞাসা (সৌমিত্র শেখর) এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago
'তাজকেরাতুল আওলিয়া' অবলম্বনে 'তাপসমালা' কে রচনা করেন?
Created: 1 month ago
A
মুন্সী আব্দুল লতিফ
B
কাজী আকরাম হোসেন
C
গিরিশচন্দ্র সেন
D
শেখ আব্দুল জব্বার
গিরিশচন্দ্র সেন
- নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা গ্রামে তাঁর জন্ম।
- তিনি ছিলেন ধর্মবেত্তা ও অনুবাদক।
- তিনি 'সুলভ সমাচার' ও 'বঙ্গবন্ধু' পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এবং 'মাসিক মহিলা' পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
- কেশবচন্দ্র সেন ও বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর প্রভাবে ১৮৭১ সালে তিনি ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন।
- কুরআনের বঙ্গানুবাদ বাংলা সাহিত্যে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি।
- বাংলা ভাষায় প্রথম কুরআন শরীফের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ করেন তিনি।
- সকলের নিকট তিনি ‘ভাই গিরিশচন্দ্র’ নামে পরিচিত ছিলেন।
তাঁর রচিত গ্রন্থ:
• তাপসমালা:
- গিরিশচন্দ্রের বিখ্যাত গ্রন্থ তাপসমালা।
- এটি ৯৬ জন ওলি-আউলিয়ার জীবনচরিত, যা শেখ ফরীদুদ্দীন আত্তারের ফারসি ভাষায় রচিত তাজকেরাতুল আত্তলিয়ার ভাবাদর্শে রচিত।
• তত্ত্বরত্নমালা:
- গিরিশচন্দ্রের উল্লেখযোগ্য আরেকটি গ্রন্থ হলো তত্ত্বরত্নমালা।
- এটি শেখ ফরীদুদ্দীন আত্তারের মানতেকুত্তায়েব ও মওলানা জালালউদ্দীন রূমীর মসনবী শরীফ নামক প্রখ্যাত ফারসি গ্রন্থদ্বয় থেকে সংকলিত।
- এতে নীতিকথা ও শিক্ষণীয় বিষয় ছোট ছোট গল্পের আকারে রসাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও তিনি হাদিস-পূর্ব বিভাগ শিরোনামে মিশ্কাত শরীফের প্রায় অর্ধাংশের অনুবাদ প্রকাশ করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
'চতুর্দশপদী কবিতাবলী' কার রচনা?
Created: 2 months ago
A
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
B
নবীনচন্দ্র সেন
C
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
D
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
চতুর্দশপদী কবিতাবলী: বাংলা সনেটের প্রথম সংকলন
বাংলা সাহিত্যে সনেটচর্চার সূচনা যাঁর হাতে, তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তাঁর অমর কাব্যগ্রন্থ ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ বাংলা ভাষায় প্রথম সনেট সংকলন হিসেবে স্বীকৃত।
-
এই কাব্যগ্রন্থে মোট ১০২টি সনেট সংকলিত হয়েছে।
-
এটি ১৮৬৬ সালের ১লা আগস্ট গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
-
কাব্যগুলোর বেশিরভাগই তিনি বিদেশে অবস্থানকালে রচনা করেন।
-
রচনাশৈলীতে তিনি শেক্সপিয়রীয় সনেটরীতি অনুসরণ করলেও কিছু কিছু কবিতায় পেত্রার্কীয় আদর্শের ছায়া দেখা যায়।
-
এই কবিতাগুলি চতুর্দশ পংক্তি বিশিষ্ট, এবং এতে মিত্রাক্ষর ও অমিত্রাক্ষর ছন্দ উভয়ই ব্যবহৃত হয়েছে।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত: আধুনিকতার পথিকৃৎ
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (জন্ম: ২৫ জানুয়ারি ১৮২৪, সাগরদাঁড়ি, যশোর) বাংলা সাহিত্যের একজন বিপ্লবী কবি ও নাট্যকার।
-
বাংলা সাহিত্যে সনেট এবং অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের কৃতিত্ব তাঁর।
-
প্রথমবারের মতো অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার করেন তাঁর নাটক ‘পদ্মাবতী’-র দ্বিতীয় অঙ্কের দ্বিতীয় গর্ভাঙ্কে।
-
‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’ বাংলা সাহিত্যে সম্পূর্ণ অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
-
তাঁর প্রথম রচিত কাব্যগ্রন্থ ছিল ‘The Captive Lady’, যা ইংরেজি ভাষায় রচিত।
তাঁর উল্লেখযোগ্য বাংলা কাব্যগ্রন্থগুলো হলো:
-
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য
-
মেঘনাদবধ কাব্য
-
ব্রজাঙ্গনা কাব্য
-
বীরাঙ্গনা কাব্য
-
চতুর্দশপদী কবিতাবলী
তথ্যসূত্র:
<< বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
<< বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 2 months ago
'ইউসুফ-জোলেখা' প্রণয়কাব্য অনুবাদ করেছেন-
Created: 2 months ago
A
দৌলত উজির বাহরাম খান
B
মাগন ঠাকুর
C
আলাওল
D
শাহ্ মুহম্মদ সগীর
ইউসুফ-জোলেখা কাব্য
• ইউসুফ-জোলেখা’ শাহ মুহম্মদ সগীর রচিত কাহিনি কাব্যগ্রন্থ যা রোম্যান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার প্রথম কাব্য।
• গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে এ কাব্যর রচনা হয়েছিল বলে প্রমাণ মিলেছে।
• বাইবেল ও কোরানে ইউসুফ-জোলেখার কাহিনি বর্ণিত আছে। ইরানের কবি ফেরদৌসিও এই নামে কাব্য রচনা করেছেন। সগীর বাইবেল পড়েন নি। তিনি কোরান ও ফেরদৌসির কাছে থেকেই কাহিনিসূত্র গ্রহণ করে ইউসুফ ও জোলেখার প্রণয়কাহিনি লেখেন।
• পরবর্তীতে মধ্যযুগের আরো অনেক কবি ইউসুফ জুলেখা নাম দিয়ে কাব্য রচনা করেছেন। যেমন- ইউসুফ জুলেখা নিয়ে কাব্য রচনা করেন আব্দুল হাকিম এবং শাহ মুহম্মদ গরীবুল্লাহ। তবে এই কাব্য শাহ মুহাম্মদ সগীরই প্রথম লেখেন।
------------------------------
• শাহ মুহম্মদ সগীর:
- মধ্যযুগের তথা বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি শাহ মুহম্মদ সগীর।
- তিনি পনের শতকের কবি ছিলেন।
- গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে তিনি কাব্য রচনা করেন।
- অনুবাদ সাহিত্য বা রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার প্রথম কবি - শাহ্ মুহম্মদ সগীর।
- শাহ মুহম্মদ সগীরের শ্রেষ্ঠ অনুবাদকর্ম ইউসুফ-জোলেখা। এটি একটি রোমান্টিক প্রনয়োপাখ্যান।
- ইউসুফ-জোলেখা কাব্যগ্রন্থের রচনাকাল অনুসারে এটি রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার প্রথম কাব্য এবং শাহ মুহম্মদ সগীর এই ধারার প্রথম কবি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়িা।

0
Updated: 2 months ago