A
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
C
রামমোহন রায়
D
কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
প্রভাবতী সম্ভাষণ: বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রথম মৌলিক রচনা
বাংলা গদ্য সাহিত্যে এক অনন্য সংযোজন হলো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘প্রভাবতী সম্ভাষণ’। এটি কেবল বাংলা ভাষার প্রথম মৌলিক গদ্য রচনাই নয়, বরং একটি গভীর শোকগাথাও, যা লেখকের মনের আবেগের নিখুঁত প্রতিফলন। প্রিয় বন্ধু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা প্রভাবতীর অকাল মৃত্যু বিদ্যাসাগরের মনে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল, তারই আবেগঘন বহিঃপ্রকাশ এই রচনাটি।
ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে, প্রভাবতীর মৃত্যু বিদ্যাসাগরকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়, এবং সেই বেদনাই তাঁকে এ লেখাটি রচনার প্রেরণা দেয়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর: বাংলা নবজাগরণের অগ্রপথিক
-
জন্ম: ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।
-
মৃত্যু: ২৯ জুলাই ১৮৯১, কলকাতায়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
-
তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ছিল ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’ (১৮৪৭), যা বাংলা গদ্য রচনায় এক যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে। এই বইতেই তিনি বাংলা ভাষায় প্রথমবারের মতো যতি বা বিরাম চিহ্নের ব্যবহার প্রবর্তন করেন।
-
‘প্রভাবতী সম্ভাষণ’ তাঁর রচিত এমন এক মৌলিক গ্রন্থ, যা বাংলা গদ্যের আদিতে মানবিক আবেগ ও ভাষার সৌকর্যের মেলবন্ধন ঘটায়।
-
তাঁর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘ব্রজবিলাস’ এবং ‘রত্নপরীক্ষা’।
তথ্যসূত্র:‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ - ড. সৌমিত্র শেখর, ‘বাংলাপিডিয়া’

0
Updated: 3 weeks ago
'পদাবলী'র প্রথম কবি কে?
Created: 2 weeks ago
A
শ্রীচৈতন্য
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
জ্ঞানদাস
পুথি সাহিত্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত একটি বিশেষ ধারা, যেখানে আরবি, ফারসি, উর্দু ও হিন্দি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়। এই সাহিত্যের বিকাশ ঘটে মূলত আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এবং এর রচয়িতা ও পাঠকগোষ্ঠী প্রধানত ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
‘পুথি’ শব্দটি এসেছে ‘পুস্তিকা’ থেকে, যা সাধারণভাবে যেকোনো গ্রন্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হলেও, এখানে এটি নির্দিষ্ট একটি সাহিত্যধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলা সাহিত্যের এক নির্দিষ্ট সময়ে, ভিন্ন ভাষার প্রভাব মিশিয়ে রচিত সাহিত্যকেই আমরা পুথি সাহিত্য নামে চিনি।
এই ধারার সূচনা করেন হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনুমানিক ১৬৮০–১৭৭০)। তাঁর রচিত আমীর হামজা কাব্যটি যুদ্ধ ও কাহিনিনির্ভর সাহিত্যের একটি দৃষ্টান্ত, যেখানে আরব বিশ্বের ইতিহাস ও পুরাণের ছাপ রয়েছে।
মধ্যযুগের প্রচলিত বাংলা সাহিত্যের ভাষার তুলনায় পুথি সাহিত্যের ভাষা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এতে বাংলা শব্দের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আরবি, ফারসি ও অন্যান্য বিদেশি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই সাহিত্যধারায় প্রায় ৩২% শব্দ ছিল বিদেশি উৎসের। ধারণা করা হয়, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা ও ২৪ পরগনার মুসলমানদের কথ্যভাষাই এর মূল ভিত্তি ছিল।
গরীবুল্লাহ ও তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এই ভাষারীতিতে আরও কয়েকটি কাব্য রচনা করেন এবং তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করে বহু মুসলমান কবি এই ধারা অনুসরণ করে সাহিত্য রচনা করেন। এসব সাহিত্যকর্মের পাঠক সাধারণত সমাজের সকল স্তরের মুসলমান ছিলেন, তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর প্রচলন ছিল সবচেয়ে বেশি।
এই সাহিত্যের ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। রেভারেন্ড জেমস লং এই ভাষাকে ‘মুসলমানী বাংলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং এই ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
এছাড়া, কলকাতার বটতলার ছাপাখানায় এগুলোর ব্যাপক মুদ্রণ ও প্রচার হওয়ায় এগুলিকে ‘বটতলার পুথি’ নামেও ডাকা হয়। গবেষকদের মতে, ভাষা ও বাক্যগঠনের দিক থেকে এ সাহিত্যকে প্রাথমিকভাবে ‘দোভাষী পুথি’ এবং পরবর্তীতে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 weeks ago
'দুধেভাতে উৎপাত' গল্পগ্রন্থের রচয়িতা-
Created: 2 weeks ago
A
শওকত ওসমান
B
জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত
C
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
D
হাসান আজিজুল হক
• ‘দুধভাতে উৎপাত’ গল্পগ্রন্থ:
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্পগ্রন্থ 'দুধভাতে উৎপাত'।
- এটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয়।
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের 'দুধভাতে উৎপাত' গল্পগ্রন্থের ‘মিলির হাতে স্টেনগান’ গল্পটি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় রচিত।
- এই গল্পগ্রন্থে মোট চারটি গল্প রয়েছে। যথা -
• মিলির হাতে স্টেনগান,
• দুধভাতে উৎপাত,
• পায়ের নিচে জল,
• দখল।
--------------------------
• আখতারুজ্জামান ইলিয়াস:
- ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলার গোহাটি গ্রামে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম।
- তিনি ছিলেন মূলত কথাসাহিত্যিক।
- তাঁর পূর্ণনাম আখতারুজ্জামান মুহম্মদ ইলিয়াস।
- তিনি বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
- এদেশের প্রগতিশীল ও মানবতাবাদী সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রতিও তাঁর পরোক্ষ সমর্থন ছিল।
- তাঁর লেখায় সমাজবাস্তবতা ও কালচেতনা গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
- বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ (১৯৮২), 'খোয়াবনামা' উপন্যাসের জন্য ‘সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার’ (১৯৯৫) ও কলকাতার ‘আনন্দ পুরস্কার’ (১৯৯৬) লাভ করেন।
- তিনি ১৯৯৭ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
• তাঁর রচিত উপন্যাস:
- চিলেকোঠার সেপাই,
- খােয়াবনামা।
• তাঁর রচিত গল্পগ্রন্থ:
- অন্য ঘরে অন্য স্বর,
- খোঁয়ারি,
- দুধভাতে উৎপাত,
- দোজখের ওম।
উৎস: বাংলা ভাষা ও জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; ‘দুধভাতে উৎপাত’ গল্পগ্রন্থ ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 weeks ago
'সংস্কৃতির ভাঙা সেতু' গ্রন্থ কে রচনা করেছেন?
Created: 4 weeks ago
A
মোতাহের হোসেন চৌধুরী
B
বিনয় ঘোষ
C
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
D
রাধারমণ মিত্র
‘সংস্কৃতির ভাঙা সেতু’
রচয়িতা: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
পূর্ণনাম: আখতারুজ্জামান মুহম্মদ ইলিয়াস
জন্ম: ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩, গোটিয়া গ্রাম, গাইবান্ধা (মাতুলালয়)
পৈতৃক নিবাস: চেলোপাড়া, বগুড়া
বাংলা কথাসাহিত্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী নাম। তাঁর লেখালেখিতে যেমন সমাজবাস্তবতা গভীরভাবে চিত্রিত হয়েছে, তেমনি কালচেতনার ধারাবাহিকতায় ফুটে উঠেছে সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব।
তাঁর বর্ণনাশৈলী এবং সংলাপভাষায় যে স্বতন্ত্রতা ও কথ্যরীতির মুন্সিয়ানা দেখা যায়, তা বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে নতুন মাত্রা ও গতি।
বিশিষ্ট রচনাসমূহ:
-
অন্যঘরে অন্যস্বর
-
দোজখের ওম
-
খোয়াবনামা
-
সংস্কৃতির ভাঙা সেতু
এই গ্রন্থগুলোর প্রতিটিতেই রয়েছে সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতির অন্তর্নিহিত টানাপোড়েনের সূক্ষ্ম বর্ণনা।
প্রাসঙ্গিক আরও কিছু গ্রন্থ ও লেখক
-
‘সংস্কৃতি কথা’ – মোতাহের হোসেন চৌধুরী
-
‘সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই’ – শওকত ওসমান
-
‘সভ্যতার সংকট’ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 4 weeks ago